লখনউ: সামনেই লোকসভা নির্বাচন। মানবিক রূপ প্রদর্শনে মরিয়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রবিবার প্রয়াগে সাফাইকর্মীদের পা জল দিয়ে ধুইয়ে,মুছিয়ে দিয়েছেন কাপড় দিয়ে। সোমবার বিষয়টির উল্লেখ করে মোদীকে তীব্র বাক্যবাণে বিঁধলেন বসপা সুপ্রিমো মায়াবতী। তাঁর খোঁচা, ‘এই শাহি স্নান কি নোটবন্দি, জিএসটি, প্রতিশ্রুতিঙ্গের মতো সব পাপ ধুয়ে দেবে?’
সোমবার পর পর দু’টি টুইট করেন মায়াবতী। প্রথম টুইটে প্রশ্ন তুলেছেন,”সঙ্গমে মোদীর শাহি স্নান কি মোদীর প্রতিশ্রুতিভঙ্গ, প্রতারণা এবং অন্যান্য পাপ কি ধুতে পারবে? নোটবন্দি, জিএসটি, প্রতিহিংসার রাজনীতি, জাত-পাতের বিভেদ, সাম্প্রদায়িক উস্কানি, একনায়কতন্ত্র এ সবের জন্য দেশবাসীর পক্ষে মোদীকে ক্ষমা করা কখনওই সম্ভব নয়।” এ বছরের অন্তর্বর্তিকালীন বাজেটে কৃষকদের জন্য বছরে ৬০০০ টাকা অনুদান ঘোষণা করেছে মোদী সরকার। সেই বিষয়টি নিয়েও এ দিন মোদী সরকারের সমালোচনা করেন মায়াবতী। দ্বিতীয় টুইটে তাঁর বক্তব্য,”কৃষক আর শ্রমিকের মধ্যে ফারাকটা বোঝা উচিত মোদী সরকারের৷ প্রধানমন্ত্রীর কিষাণ সম্মান নিধি স্কিমের আওতায় প্রতি মাসে ৫০০ টাকা শ্রমিকদের কিছুটা সাহায্য করতে পারে কিন্তু এই সামান্য অর্থ কৃষকদের কোনও উপকারেই আসবে না৷ কৃষক তাঁর ফসলের সঠিক দাম চায়৷ বিজেপি সরকার ন্যায্য দাম দিতে ব্যর্থ হয়েছে৷”
রবিবার প্রয়াগরাজের কুম্ভমেলায় যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ত্রিবেণী ঘাটে গঙ্গারতি করেন৷ পরে একটি ভিডিও নিজের ট্যুইটার হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন মোদী৷ সেখানে তিনি জানান, শাহি স্নান করে তিনি ১৩০ কোটি ভারতবাসীর কল্যাণ কামনা করেছেন৷স্নানের পর প্রয়াগরাজের পাঁচ সাফাইকর্মীর পা ধুয়ে দিয়েছিলেন তিনি। মোদীকে তাঁর দল মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর সঙ্গে তুলনা করলেও বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছিলেন, এক দিকে কুম্ভস্নান করে উচ্চবর্ণ এবং পা ধুয়ে দিয়ে দলিতদের মন জয়ের চেষ্টা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। গোটা বিষয়টিকেই নির্বাচনী চমক। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভোটের আগে এই অভিব্যাক্তি দিয়ে মোদী প্রমাণ করতে চাইলেন বিজেপিতে বিভেদের কালচার নেই। এর আগে যেমন দলিত বাড়িতে বিজেপি নেতাদের পাতপেড়ে খাওয়ার ছবি ছড়ানো হয়েছিল।
অন্যদিকে, উত্তরপ্রদেশে দলিত ভোটব্যাঙ্কই মায়ার সম্বল। দলিত ও নিম্নবর্গের মানুষের জন্য লড়াই করেই গড়ে উঠেছে তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ার। রাজনৈতিক মহলের মতে, সেই ভোটে ভাগ বসাতে মোদীর দলিতদের পা ধোয়ানোয় তাই চুপ থাকতে পারেননি বসপা সুপ্রিমো। কড়া ভাষায় আক্রমণ হেনেছেন মোদির উপর।