সন্তানদের কি খাওয়াবেন, দুশ্চিন্তা ঘুম কেড়ে নিয়েছে জেট কর্মীদের

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

মুম্বই: ঋণের দায়ে ডুবেছে জেট এয়ারওয়েজ ৷ প্রায় ১.২ বিলিয়ন ডলার ঋণের দায়ে জর্জরিত জেট ৷ বিমান চালানোর জন্য তেল কেনার ক্ষমতা পর্যন্ত নেই সংস্থার ৷ নানা রকমভাবে অর্থ সাহায্যের চেষ্টা করেছে কর্তৃপক্ষ ৷ কিন্তু কোনও লাভ হয়নি ৷ গতকাল অর্থাৎ বুধবার রাত ১০.৩০টায় শেষ বিমান ওড়ে জেটের ৷ আপাতত সাময়িকভাবে পরিষেবা বন্ধ হচ্ছে জেট বিমানের ৷ বিমান পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ার জেরে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় কয়েক হাজার কর্মী ৷ কী হবে তাঁদের ভবিষ্যত ? সেই চিন্তাই রাতের ঘুম কেড়েছে জেট কর্মীদের ৷

Jet Airways Grounded

 

জেটের কাঁধে এই মুহূর্তে ৮,৫০০ কোটি টাকার ব্যাঙ্ক ঋণের বোঝা। সেই সঙ্গে কর্মীদের অন্তত তিন মাসের বকেয়া বেতন। ফেরত দিতে হবে বাতিল যাওয়া উড়ানগুলির টিকিটের দামও। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো রয়েছে জ্বালানি সংকট। ফলে অনেকে মনে করছেন, নতুন করে লগ্নিকারীরা পুঁজি না ঢাললে এর পরে জেটের চাকা কী ভাবে গড়াবে তা বলা বেশ কঠিন। এই বোঝা মাথায় নিয়ে সংস্থা আপাতত তাকিয়ে নিলাম প্রক্রিয়ার দিকে। যার ফলাফল বুঝতে এখনও অন্তত দু’তিন সপ্তাহ বাকি। ৷ গত ২৬ বছর ধরে এই সংস্থার সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন ভুজা পূজারী ৷ ব্যাগেজ সেকশনের দায়িত্ব সামলাতেন তিনি৷ কিন্তু আচমকাই জেট এয়ারওয়েজ বন্ধ হওয়ার জেরে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে দুই সন্তানের বাবা ভুজার ৷ কী হবে ভবিষ্যত ? কীভাবে দুই সন্তানকে মানুষ করবেন ? সেই চিন্তাতেই রাতে দু’চোখের পাতা এক করতে পারছেন না ভুজা ৷ রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভুজা বলেন, ‘আমি চোখে মুখে অন্ধকার দেখছি ৷ রাতে ঘুমোতে পারছি না ৷ কীভাবে মানুষ করব সন্তানদের ?’ একইসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘আমার দুই ছেলে মেয়েই খুব ছোট ৷ ওদেরকে কিছু বলতে পারিনি ৷ কিন্তু ওরা বুঝতে পারছে যে আমি কিছু একটা সমস্যায় রয়েছি ৷এই রকম চলতে থাকলে বাড়ি বেচতে হবে। মনে হচ্ছে আমার দু’হাত বাঁধা, রাতে ঘুমোতে পারছি না।’

Jet Airways1 1

শুধু পূজারী নন, হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে হাহাকার করতে দেখা গেল জেটের হাজার হাজার কর্মীকে। দিল্লি, মুম্বই নানা জায়গায় ধর্ণায় বসলেন পাইলট, ইঞ্জিনিয়াররা। বুকফাটা কান্নায় ভারী হলো বাতাস।জরুরি তহবিলের অভাবে আপাতত সমস্ত উড়ান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেট এয়ারওয়েজ। সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীরা প্রয়োজনীয় লগ্নি দিতে না পারায়, বুধবারই সংস্থার তরফ থেকে ঘোষণা করা হয় অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে জেটের দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সমস্ত উড়ান। গতকাল রাতে জেটের শেষ উড়ান ছিল দিল্লি থেকে অমৃতসর। এমনকি মঙ্গলবার এমনও শোনা গিয়েছিল, ফান্ডের অভাবে নাকি পুরোপুরি ঝাঁপ বন্ধ করে দিতে পারে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই বিমান সংস্থা।

জেট ফের ডানা মেলবে কি না তার উত্তর নেই ২০,০০০ কর্মীর কাছে। গতকাল সংস্থার সিআধ বিনয় দুবে পাইলটদের আশ্বস্ত করে বলেন, জেট আবার ঘুরে দাঁড়াবে। আকাশ দখলের লড়াইয়ে ফের একবার নিজের বীরত্ব দেখাবে। তবে আশ্বাসই সার, আদৌ সেটা পরিণতির দিকে এগোবে  কি না জানা নেই সংস্থার হাজারের বেশি পাইলটদের। ভারতের এখন যে কটি বেসরকারি বিমান সংস্থা রয়েছে, জেট তাদের মধ্যে সব থেকে পুরনো। ১৯৯৩ সাল থেকে যাত্রা শুরু করে জেট। প্রথম আর্থিক সংকট তৈরি হয় ২০১০ সালে। সে বার পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিলেন গয়াল। তবে এ বারের অবস্থা ভিন্ন। সংস্থা সূত্রে খবর, শেষ চেষ্টা হিসেবে ইতিমধ্যেই নিলামের জন্য কয়েকটি বিমান সংস্থা ও বিনিয়োগকারী সংস্থাকে বেছে নিয়েছে জেট ওয়ারওয়েজের ঋণদাতা সংস্থাগুলি। আগামী ১০ মে-র মধ্যে তাদের দরপত্র জমা দিতে হবে। গোটা নিলাম প্রক্রিয়া যথেষ্ট লম্বা হতে পারে। ফলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে জেট ওয়ারওয়েজের।

 

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest