সীমান্তে শহীদের মিছিল বন্ধ হবে কবে, ‘চৌকিদার’ মোদীকে প্রশ্ন সন্তানহারা প্রাক্তন সেনার

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

লুধিয়ানা: সীমান্তে শহীদের মিছিল বন্ধ হবে কবে নাকি এই ভাবেই চলতে থাকবে রক্তের হোলি। সন্তান হারিয়ে এমনই প্রশ্ন তুললেন পঞ্জাবের বাসিন্দা প্রাক্তন সেনা অবতার সিং।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে আবদার জানান, ছেলে তাঁকে বলেছিল অন্য পাঁচজনের মতো বিদেশে চাকরি করতে যাবে। কিন্তু তিনি শোনেননি ছেলের কথা। বলেছিলেন দেশের জন্য কাজ করো। দেশের সেবা করো। বিনা প্ররোচনায় পাক সেনাদের গুলি বর্ষণে মৃত্যু হয় ২৪ বছরের কমল জিতের। কফিনবন্দি দেহ ফিরে আসে ঘরে। ছেলের দেহ দেখে অবতার -এর প্রশ্ন- আর কতদিন এইভাবে সীমান্তে কেবল শহীদের মিছিল বাড়বে ?এর কি কোন সমাধান নেই?
দুদিন আগেই নিজেকে দেশের চৌকিদার হিসাবে সামনে এনেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর কাছে এখন সন্তানহারা অবতার সিং- এর প্রশ্ন এই রক্তপাত বন্ধ হবে কবে? প্রতি দু’দিন অন্তর কোন না কোন জওয়ান শহীদ হচ্ছে। এর কি কোনো রাজনৈতিক সমাধান নেই? কমল জিতের মা কুলবন্ধ কৌর আর পাঁচটা মায়ের মতোই সন্তানের সুখ স্বাচ্ছন্দ দেখতে চেয়ে ছিলেন দুচোখ ভরে। কিছুদিন আগে বাড়ি এসেছিলেন কমল জিত। ছেলের প্রিয় খাবার -শুকনো ফল দিয়ে পায়েস বানিয়ে ছিলেন তিনি। সব মা চায় সন্তানকে তাঁর পছন্দের খাবার খাওয়াতে। সন্তানের খুশি দুচোখ ভরে দেখতে। কিন্তু কুলবন্ধের দুচোখ ভরে এখন কেবলই আঁধার। ছেলে না ফেরার দেশে চলে গিয়েছে এই খবর শুনে তাঁর পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে।সন্তানের লাশ বয়ে নিয়ে যাওয়ার মত কঠিন সাজা এই দুনিয়ায় আর কিছু নেই বলে মনে করেন প্রাক্তন সেনা অবতার সিং। কেবল অবতার নন,বহু শহীদের পরিবারেই একই শব্দ- একই হাহাকার ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর কতদিন এই হিংসায় বজায় থাকবে? আর কত মায়ের কোল খালি হলে তবে এর সমাধান মিলবে?

হিংসা দিয়ে হিংসা জয় করা যায়নি কোনো কালে। চিরদিন সমাধান মিলেছে আলোচনায়। ভারত বরাবরই শান্তির বাণী ছড়িয়েছে। সে বাণী নস্যাৎ করেছে পাকিস্তান। এই প্রথম তার উল্টোটা হল। নরেন্দ্র মোদী হঠাৎই যুদ্ধবাজ হয়ে উঠলেন। যদিও অনেকের দাবি এর পিছনে সংগত কারণ রয়েছে। বারবার ভারতের শান্তির বার্তাকে পাকিস্তান তাদের দুর্বলতা ভেবেছে। তাই অসামরিক প্রত্যাঘাত ভীষণ জরুরী ছিল। পাকিস্তানকে বোঝানো উচিত ভারত দুর্বল নয়। তারা জবাব দিতে জানে।
হঠাৎই অন্য সুরে গাইতে শুরু করেছে পাকিস্তান। ইমরান খান শান্তির বার্তা দিতে শুরু করেন যদিও সেই শান্তি বার্তায় দ্বিচারিতা নজর এড়ায়নি। একদিকে ইমরান শান্তির বার্তা দিচ্ছেন, অন্যদিকে বিনা প্ররোচনায় সীমান্তের ওপার থেকে গুলি করছে পাকসেনারা। প্রতিদিন মরছে তরতাজা জওয়ানরা। গেরুয়া শিবির যুদ্ধের উত্তেজনা ছড়িয়ে কিছু সোশ্যাল সাইট জওয়ান তৈরি করে ফেলেছে ইতিমধ্যে। ঠাণ্ডা ঘরে বসে তারা নিয়মিত যুদ্ধের হুমকি দিচ্ছে। যারা সম্মিলিত ভাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের হুমকি দিচ্ছে অন্ততপক্ষে তাদের ভোট ব্যাংক ইভিএমে তুলতে মরিয়া বিজেপি। মুশকিল হল, এদেশে সেনাদের মৃত্যু আর যুদ্ধে হয় না কেবল হামলায় হয়। যুদ্ধ থামানো যায় নির্দিষ্ট সময়ের পর। রণ ক্লান্ত হয়ে পড়েন সেনারা। বেরিয়ে আসে রফা সূত্র। কিন্তু যখন বিনা প্ররোচনায় রক্তপাত হয় তা থামে না। তা কেবলই চক্রাকারে বাড়তে থাকে। এই পরিস্থিতির সমাধান না হলে কেবল লাশের সংখ্যা গুনতে হবে গোটা দেশকে। সীমান্তের ওপারে হয়ত এই ভাবেই ভাবছেন অনেকে। কিন্তু দুঃখের বিষয় আম আদমিদের কথা রাষ্ট্রনায়কদের কানে পৌঁছায় না। সে কারণেই প্রতিদিন সীমান্তে বুক পেতে দিতে হচ্ছে সেনাদের।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest