Site icon The News Nest

সুপ্রিম ধাক্কা কেন্দ্রের, সিবিআইয়ের ডিরেক্টর পদে বহাল অলোক বর্মা

alok sc 1232 20190168626

সিবিআই ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেল কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় তদন্তাকারী সংস্থার ডিরেক্টর পদে পুনর্বহাল করা হল অলোক বর্মাকে। গত ২৩ অক্টোবর তাঁকে ছুটিতে পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের সেই সিদ্ধান্তকে মঙ্গলবারের রায়ে খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট।ফলে ফের সিবিআই ডিরেক্টরের পদ ফিরে পাচ্ছেন ‘নির্বাসিত’ অলোক বর্মা।
তবে আপাতত তিনি কোনও নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। তাঁর পদ এবং অবস্থান নির্ধারণের জন্য সিলেকশন কমিটিকে এক সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ওই কমিটিতে রয়েছেন প্রধান বিচারপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধী দলনেতা। আগামী ৩১ জানুয়ারি অবসর নেবেন অলোক বর্মা। তার আগে ডিরেক্টর হিসেবে তাঁর কী ভূমিকা হবে, তা নিয়ে রায়ে কী বলা হয়েছে, সেই বিষয়টি এখনও স্পষ্ট হয়নি। তবে এই রায়ের ফলে অলোক বর্মা আংশিক জয় পেলেন বলেই ব্যাখ্যা আইনজীবী মহলের।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ে একাধিক ইস্যুতে স্বস্তি পেলেন সিবিআই ডিরেক্টর। বর্মাকে তাঁর পদে পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। সেই সঙ্গে জানানো হয়েছে, সিবিআইয়ের কাজে কেন্দ্র কোনওভাবেই হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। সিবিআই স্বশাসিত সংস্থার মতো নিজের কাজ নিয়ন্ত্রণ করবে। প্রধান বিচাররপতির ডিভিশন বেঞ্চে এতদিন ধরে এই মামলার শুনানি চলছিল। তবে, মঙ্গলবার ছুটিতে ছিলেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈই। তাঁর পরিবর্তে রায়ের কপি পড়ে শোনান বিচারপতি সঞ্জয় কিষণ কউল। শুনানি চলাকালীন কেন্দ্রকে একাধিক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। ঠিক কী পরিস্থিতিতে সিবিআইয়ের প্রধানকে অপসারণ করা হয়, শুনানি চলাকালীন এই প্রশ্ন করা হয় সরকার পক্ষকে। সরকারের তরফে অ্যাটর্নি জেনারেল সওয়াল করেন । তিনি বলেন, সিবিআইয়ের অভ্যন্তরে একটি বিশেষ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল যা বরদাস্ত করা সম্ভব ছিল না। সিভিসি-র সুপারিশ মেনেই অপসারণ করা হয় বর্মাকে। যদিও, কেন্দ্রের সেই যুক্তি খারিজ হয়ে যায়।
২৩ অক্টোবর কেন্দ্রের ওই মধ্যরাতের নির্দেশ খারিজ করে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ,’ওই নির্দেশিকার মাধ্যমে সিবিআই ডিরেক্টর অলোক বর্মাকে যে অপদস্থ করার চেষ্টা হয়েছিল, তা স্পষ্ট’।পাশাপাশি অলোক বর্মাকে ছুটিতে পাঠানোর জন্য সিভিসির সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সিলেক্ট কমিটির সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল।
উল্লেখ্য, দুর্নীতি ইস্যুতে সিবিআই ডিরেক্টর অলোক বর্মার সঙ্গে স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানার সংঘাত চরমে ওঠে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এই স্বশাসিত সংস্থার অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্যে চলে আসে। তার জেরে গত ২৩ অক্টোবর মধ্যরাতে অলোক বর্মাকে ছুটিতে পাঠানোর নির্দেশ দেয় কেন্দ্র। একই নির্দেশ দেওয়া হয় রাকেশ আস্থানার ক্ষেত্রেও। কিন্তু ছুটিতে পাঠানোর নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দু’টি মামলা দায়ের হয়। একটি করেন অলোক বর্মা নিজে। অন্যটি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের। মঙ্গলবার অলোক বর্মার মামলার রায় দিয়েছে শীর্ষ আদালত। অলোক বর্মার দাবি ছিল, মধ্যরাতের ওই নির্দেশিকা আইনবিরুদ্ধ। সিবিআই-এর আইন অনুযায়ী, সিবিআই ডিরেক্টরের মেয়াদ দু’বছরের জন্য নির্দিষ্ট। তাঁর মধ্যে তাঁকে সরানের ক্ষমতা রয়েছে একমাত্র প্রধান বিচারপতি অথবা তাঁর মনোনীত কোনও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধী দলনেতাকে নিয়ে গঠিত নিয়োগ কমিটির।
সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে। তিনি বলেন,’এটা সরকারের কাছে একটা শিক্ষা। রাফালে মামলার দুর্নীতির তথ্য জোগাড় করছিলেন বলেই সরকারের কোপে পড়তে হয়েছিল বর্মাকে। তবে, আদালতে তিনি স্বস্তি পেয়েছেন, আমরা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি।’ রায়কে স্বাগত জানিয়ে মোদী সরকারকে কটাক্ষ করেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল, মেহবুবা মুফতির মতো নেতা-নেত্রীরা।

Exit mobile version