Site icon The News Nest

৪৯ জনকে খুন করে হাসিমুখে কাঠগড়ায় ট্রাম্প ভক্ত বন্দুকবাজ

new zealand

নিউজ কর্নার ওয়েব ডেস্ক: ক্রাইস্টচার্চ শহরের দুটি মসজিদে হামলা চালানোর ঘটনায় ধৃত বন্দুকবাজ ব্রেন্টন ট্যারান্টকে শনিবার সকালে ক্রাইস্টচার্চ হাইকোর্টে তোলা হয়। এরপর কোনও শুনানি ছাড়াই তাকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারপতি।

গতকাল গোটা দিনটাই ব্রেন্টন ছিল খবরের শিরোনামে। কখনও টুইট করে বিদ্বেষ উগড়ে দিয়েছে, কখনও মসজিদে হামলার সরাসরি ভিডিও সম্প্রচার করে জানিয়েছে শ্বেতাঙ্গদের উপর বছরের পর বছর চলা ‘বিদ্বেষমূলক আচরণে’র বদলা নিতেই তার এই হামলা। গ্রেফতার করার মুহূর্তেও তার মধ্যে অনুশোচনার সামান্যতম প্রকাশও দেখা যায়নি।  এ দিন আদালতে তোলার সময়েও একই রকম নির্বিকার ভঙ্গি দেখা গেছে ব্রেন্টনের মধ্যে। পুলিশ জানিয়েছে, আদালতের সাদা পোশাক, হাতে হাতকড়া পরিয়ে বিচারকের সামনে হাসিমুখে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছিল ব্রেন্টন।বি তোলার সময় সে আলোকচিত্রীদের দিকে তাকিয়ে হাসছিল। মুখে একটাও শব্দ করেনি।

নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডের তরফ থেকে বলা হয়েছে, ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে হামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছেন ব্রেন্টনকে। সে নিউজিল্যান্ডের ডুনেডিনের অ্যান্ডারসনস বে এলাকার বাসিন্দা।বয়স আন্দাজ বছর ২৮। ব্রেন্টন ছাড়াও মসজিদে হামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে তার চার সহযোগীকে। শুক্রবারের নমাজের সময়ে ক্রাইস্টচার্চের দু’টি মসজিদে ঢুকে নাগাড়ে গুলি চালিয়ে অন্তত ৪৯ জনকে হত্যা করে ব্রেন্টন ও তার সাঙ্গোপাঙ্গোরা। গুরুতর জখম ৪৮। জখমদের মধ্যে এক জন ভারতীয়ও রয়েছেন। খোঁজ মিলছে না আরও ন’জন ভারতীয় ও ভারতীয় বংশোদ্ভূতের। কাছেই হ্যাগলে পার্কের স্টেডিয়াম থেকে মসজিদে নমাজ পড়তে এসেছিলেন বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা। অল্পের জন্য রক্ষা পান তাঁরা।  মসজিদে প্রার্থনা করছিলেন তিন বাংলাদেশি। মৃত্যু হয়েছে তাঁদেরও।

তার নামে যে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে একাধিক মানুষকে খুনের দৃশ্য সম্প্রচার করা হয়, সেই একই ছবি ও পরিচয়ে টুইটার অ্যাকাউন্ট ছিল ট্যারান্টের। ফেসবুকেও সে নিজেই ১৭ মিনিট ধরে এই হামলা চালানোর ভিডিও দেখিয়েছে। সেখানেই দেখা গিয়েছে, গোঁফ–দাড়ি কামানো এক যুবককে। ছোট করে চুল কাটা। গাড়ি চালিয়ে আল নূর মসজিদে ঢুকছে। তার কিছুক্ষণ পরেই প্রার্থনা করতে আসা নারী–পুরুষ–শিশু লক্ষ্য করে নির্বিচারে শুরু করেছে গুলি চালানো।প্রথমে আল নুর মসজিদে ঢুকে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে হত্যা করে মন্দিরে নমাজ পড়াতে আসা ৪১ জনকে।  গুলি আর মানুষের আর্তনাদ ছাপিয়েও শোনা যায় ব্রেন্টনের বিদ্বেষমূলক উক্তি। নুর মসজিদে হত্যালীলার পরে ব্রেন্টন বাহিনী পৌঁছয় ছ’কিলোমিটার দূরের লিনউড মসজিদে। সেখানে গুলিতে ঝাঁঝরা করে সাত জনকে। এই মসজিদ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়েই ব্রেন্টনের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন এক জন। ধস্তাধস্তির সময়েই পুলিশ পৌঁছয় ঘটনাস্থলে। ধরা পড়ে আততায়ীরা। পরে সেই ফেসবুক ও টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয় নিউজিল্যান্ড প্রশাসন।

পুলিশ জানিয়েছে, এই হামলা পুরোপুরি ঠাণ্ডা মাথায়, পরিকল্পনা করে করা হয়েছে। শুক্রবার মসজিদে সাপ্তাহিক নমাজের জন্য প্রচুর মানুষের ভিড় হয়। তাই এই দিনটিকেই বেছে নেয় আততায়ীরা। হামলার আগে ৭৩ পাতার, সাড়ে ষোলো হাজার শব্দের ‘ম্যানিফেস্টো’ টুইটারে পোস্ট করেছিল ব্রেন্টন। তাতে বার বার নরওয়ের শ্বেত সন্ত্রাসবাদী অ্যান্ডের্স বেরিং ব্রেইভিকের উল্লেখ করেছিল সে।  ইস্তাহারে লেখা ছিল, লিখেছে, ‘‘অ্যান্ডের্স বেরিং ব্রেইভিকই আমার অনুপ্রেরণা। তাঁর আশীর্বাদেই আমি আজ সফল হবো।’’

 

Exit mobile version