কলকাতা: কংক্রিটের জঙ্গলের ভরা মেট্রপলিটান সিটিগুলোর অবস্থা এখন নিতান্তই করুণ। বহু চেষ্টায় নজরে আসে দু-একফালি সবুজের আভা। বাড়িতে বড় বাগানের কনসেপ্ট এখন অতীত হয়ে গিয়েছে। শহর জুড়ে এখন শুধুই ফ্ল্যাট কালচার। কিন্তু একুশ শতকের ইঁদুর দৌড়ের রোজনামচাতেও সবুজকে বাঁচিয়ে রাখতে ভোলেননি কলকাতার বিজয় পাল।
পেশায় অটোচালক বিজয়ের রুজিরুটি নির্ভর করে একটা এলপিজি অটোর উপর। আর অটোর হলুদ-সবুজ কম্বিনেশনের মতোই বিজয়ের মনে রয়েছে সবুজের ছোঁয়া। গাছ লাগালে যে একটু হলেও সুস্থ ভাবে বাঁচবে গোটা মানব সমাজ, এটা তিনি ভালোই বোঝেন। আর তাই নিজের অটোর ছাদেই ছোট্ট একফালি বাগান করে ফেলেছেন এই বঙ্গ তরুণ। আর পাঁচটা অটোর মতো নয় বিজয়ের অটো। মাথার শেডে মোটা প্লাস্টিক কভার কিংবা ত্রিপল জাতীয় জিনিস নয়, বরং রয়েছে ছোট একটা বাগান। নরম সুবুজ ঘাসে ছাওয়া এই বাগানে রয়েছে ফুলের গাছও।
তিলোত্তমার বুকে রোজ নিজের এমন অভিনব অটো নিয়েই ছুটে চলেন বিজয়। তাঁর পেটের ভাত জোগাতে যে অটো সারাবছর রোদে-জলে পুড়ে তাঁকে সাহায্য করে, সেই অটোতেই নিজের অভিনব ভাবনার ফসল ফলিয়েছেন এই যুবক। সাধের অটোর গায়ে লিখে রেখেছেন, “গাছ বাঁচাও, প্রাণ বাঁচাও”-এর স্লোগান। আর মাথার উপর এমন বাগান থাকায় খানিক সুবিধা পান যাত্রীরাও। তীব্র গরমেও বিজয়ের অটোতে উঠলে মনে হবে বিলকুল এয়ার কন্ডিশন গাড়িতে সফর করছেন আপনি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজয়ের এই ‘গ্রিন’ অটোর ছবি ছড়িয়ে পড়তেই অটোচালকের প্রশংসায় মেতেছেন নেটিজেনরা। বিজয়ের এই অভিনব ভাবনাকে কুর্নিশ জানিয়েছে গোটা দেশ। কমেন্ট বক্সে জমা হয়েছে হাজার হাজার শুভেচ্ছা বার্তা।