নিউজ কর্নার ওয়েব ডেস্ক: হিরে কাটা হয় হিরে দিয়েই। লোহা কাটতে লাগে আর একটি লোহা। বিষের চিকিৎসা হয় বিষ দিয়েই। একথা সবাই জানে। কিন্তু এটা হাড়ে হাড়ে বুঝেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেকারণে নরেন্দ্র মোদী বাংলায় গোল দিয়ে পালাতে পারছেন না। যে কায়দায় মোদী ধর্মকে ব্যবহার করছেন ঠিক সেই ছকে দিদিও ভাষণ দিচ্ছেন। একটা বড় ফারাক হল মমতা নিজেকে হিন্দু দাবি করে সম্প্রীতির কথা বলছেন।
কিন্তু সম্প্রীতির কথা গলা ছেড়ে বলা মোদীর পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ তিনি সংঘের হিন্দুত্বে বিশ্বাস করেন। যারা মনে করে এই দেশ কেবল হিন্দুদের। দ্য প্রিন্টে শেখর গুপ্ত তাঁর নিবন্ধে বলেছেন, মমতা এই মুহুর্তে দেশের অন্যতম লড়াকু নেত্রী। রাহুল, প্রিয়ঙ্কা ,অখিলেশ কিংবা কমলনাথরা কেউই মমতার মত মাটিতে খেটে উঠে আসেননি। তাছাড়া মোদী যখন হিন্দুত্ব নিয়ে প্রচার করছেন তখন ধর্ম নিয়ে পাল্টা মমতার মত আর কেউই তাঁকে প্যাঁচে ফেলতে পারেননি।
আসলে মমতা বাংলার সংখ্যালঘুদের নাড়ি বোঝেন। একই সঙ্গে সংখ্যাটাও জানেন। বাকি দলগুলো ধর্মের কথা বলতে পারছে না হিন্দু ভোট খোয়ানোর আতঙ্কে। সে ভয় মমতার নেই। তিনি নিজে ব্রাহ্মণ। বুক ঠুকে প্রকাশ্যে নিজেকে হিন্দু বলেন তিনি। বুঝিয়ে দেন তাঁর হিন্দুত্ব সম্প্রীতি। নিয়ম করে প্রতিটি জনসভায় মমতা সংঘ বিরোধী হিন্দুত্বের ছবি তুলে ধরছেন। মোদীর করা মস্করার জবাবে তাঁকে হোমটাস্ক না করা পড়ুয়াদের মত করে ধমক দিচ্ছেন। মন্ত্র উচ্চারন করছেন। একই সঙ্গে খোদা হাফেজ ও ইনসআল্লাহ বলছেন।
টাইমিং ঠিক না হলেও তাঁর ‘দাবাং’ রোল দেশজুড়ে প্রমাণ করেছে তিনিই এই মুহুর্তে মোদীর প্রধান প্রতিপক্ষ। মোদী বলে বসেছিলেন বাংলায় দুর্গা পুজো হয় না। এটিকে ইস্যু করে এখন প্রতিটি জনসভায় প্রধানমন্ত্রীকে তিনি তাই মিথ্যুক বলে খোঁচা দিতে কসুর করছেন না। সাধারণ বাঙালি হিন্দুকে তিনি প্রতি জনসভাতেই জিজ্ঞাসা করছেন, ‘এখানে কী দুর্গা পুজো হয়না’? তারস্বরে সকলে বলছেন, ‘হয়’। এইভাবে ধর্মের ইস্যু দিয়ে বাংলায় চাপে ফেলছেন। ধর্ম অস্ত্রেই মোদীকে ঘায়েল করছেন তিনি। মমতা বুঝেছেন কাঁটা দিয়েই কাঁটা তুলতে হবে ধর্ম দিয়েই মোদীকে জব্দ করতে হবে। শেখর গুপ্তর ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ হল, এ কাজে মমতা বাকিদের অনেক বেশি সফল।