#নয়াদিল্লি: সর্বভারতীয় রাজনীতিতে গত পাঁচ বছর ধরে স্পষ্ট ধারনা ছিল, দেশ চালাচ্ছেন দু’জন। মোদী এবং অমিত শাহ। সেই কথাটাই আরও স্পষ্ট করে এ বার যেন পাথরে খোদাই করে দেওয়া হল। বৃহস্পতিবারের সন্ধ্যায় দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। তার পর তাঁর অত্যন্ত আস্থাভাজন অমিত শাহকে কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করলেন তিনি।
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রে এনডিএ সরকার প্রতিষ্ঠায় অন্যতম কান্ডারি অমিত। তবে এত দিন রাজ্যসভার সদস্য হিসাবে সংসদে তাঁর বিচরণ থাকলেও এ বার গুজরাতের গান্ধীনগর থেকে বিজয়ী হয়েছেন তিনি। দীর্ঘ প্রায় দু’দশক ধরে মোদীর ছায়াসঙ্গী হিসাবে পরিচিত বিজেপি সভাপতিকে এ বার নতুন ভূমিকায় দেখবে দেশ। কেন্দ্রে প্রথমবার হলেও এর আগে রাজ্য মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব সামলেছেন অমিত। গুজরাতে মোদী-মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্র দফতরের দায়িত্ব এক সময় ছিল তাঁর হাতেই।
২০০২ সালের গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনে রেকর্ড ভোটের ব্যবধানে জিতে অমিত সে বারের মোদী-মন্ত্রিসভার কনিষ্ঠতম মন্ত্রী হিসাবে একাধিক দফতরের দায়িত্ব পান। সব মিলিয়ে ১২টি দফতরের মন্ত্রী করা হয় শাহকে। যার মধ্যে অন্যতম ছিল গুজরাতের স্বরাষ্ট্র দফতরের দায়িত্বও। পাঁচ বছর বাদে একই কেন্দ্রে (সরখেজ) ফের জয়লাভ করেন অমিত। এর পর অবশ্য সরাসরি রাজ্যসভার সাংসদ করা হয় তাঁকে। কিন্তু প্রথম মোদী-সরকারে কোনো মন্ত্রকের দায়িত্ব তাঁর হাতে না-থাকলে এ বার ‘গুরুদায়িত্ব’ চাপল তাঁর কাঁধে!
দেখে নিন আর কে কী মন্ত্রী হলেন:
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হল রাজনাথ সিংহকে। এর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
প্রাক্তন বিদেশ সচিব জয়শঙ্কর সুব্রহ্মণ্যম বিষ্যুদবার শপথ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, কী হতে চলেছে। হলও তাই। তাঁর পছন্দের কূটনীতিককে মন্ত্রিসভায় এনে বিদেশমন্ত্রকের দায়িত্ব দিলেন নরেন্দ্র মোদী।
মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব ও গুরুত্বের বিশেষ ফারাক হল না নিতিন গডকড়ীর। তাঁকে সড়ক পরিবহণ ও জাতীয় সড়ক দফতরের মন্ত্রী করলেন মোদী। সেই সঙ্গে দেওয়া হল ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের দায়িত্ব।
নির্মলা সীতারমণকে দেওয়া হল অর্থ মন্ত্রক ও কর্পোরেট সংক্রান্ত মন্ত্রকের দায়িত্ব।
রামবিলাস পাসোয়ান এলেন ক্রেতা সুরক্ষা, খাদ্য এবং গণবন্টনের দায়িত্বে।
নরেন্দ্র সিংহ তোমর পেলেন কৃষি, গ্রামোন্নয়ন দফতর, পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রকের দায়িত্ব।
রবিশঙ্কর প্রসাদের দায়িত্বে আগের মতোই আইন মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হল। সঙ্গে যোগাযোগ, বৈদ্যুতিন ও তথ্যপ্রযুক্তির দায়িত্ব দেওয়া হল।
হরসিমরত কউর বাদল পেলেন খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রকের দায়িত্ব।
থবরচন্দ গহলৌত পেলেন সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন বিভাগের দায়িত্ব।
মন্ত্রিসভার নতুন মুখ রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক পেলেন মানব সম্পদ উন্নয়ন দফতরের দায়িত্ব।
ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুণ্ডা পেলেন আদিবাসী বিষয়ক মন্ত্রক।
অমেঠীতে রাহুল গান্ধীকে পরাস্ত করার জন্য সামান্য হলেও পুরস্কার পেলেন স্মৃতি ইরানি। তিনি কেন্দ্রে বস্ত্রমন্ত্রী ছিলেন। বস্ত্রমন্ত্রকের পাশাপাশি তাঁকে মহিলা ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হল।
মন্ত্রিসভায় অবশ্যই ওজন বাড়ল পীযূষ গোয়েলের। আগে রেলমন্ত্রী ছিলেন তিনি। কিন্তু এ বার পীযূষকে রেলমন্ত্রকের পাশাপাশি শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকেরও দায়িত্ব দিলেন মোদী।
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দায়িত্বে এর আগেও ছিলেন হর্ষবর্ধন। তাঁর কাজে খুশি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর দফতর তাই বদল করা হল না।
অন্যদিকে, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হল প্রকাশ জাভরেকরকে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের দায়িত্বও তাঁকে দিয়েছেন মোদী।