নয়াদিল্লি: নোটবন্দির সেই মর্মান্তিক স্মৃতি আজও তাজা হয়ে আছে দেশবাসীর মনে। যদিও সেই স্মৃতিকে ফিকে করে দিতে চেষ্টার ত্রুটি নেই প্রধানমন্ত্রী সহ শাসকদলের। এর মধ্যেই ফের নতুন করে নোটবন্দি নিয়ে চাপে পড়তে চলেছে মোদি সরকার। আরটিআই রিপোর্ট স্পষ্ট যে, রিজার্ভ ব্যাংকের অনুমতি র তোয়াক্কা না করে নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করে দেন নোট বন্দির কথা।
ডেকান হেরাল্ড তার রিপোর্টে জানিয়েছে যে নরেন্দ্র মোদির নোটবন্দির কথা ঘোষণা করেছিলেন ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর। তখনও পর্যন্ত এই সিদ্ধান্তের অনুমতি দেয়নি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ২০১৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এই সম্মতি দেয় অর্থাৎ ৩৮দিন আগেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতির তোয়াক্কা না করে নরেন্দ্র মোদি নোট বন্দির কথা ঘোষণা করে দেন।
আরটিইআই কর্মী ভেঙ্কটেশ নায়েক রিজার্ভ ব্যাংকের কাছে এই তথ্য আরটিআই মারফত জানতে চান সম্প্রতি। তাতেই উঠে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর খবর।
এও জানা গিয়েছে যে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক মোদি সরকারকে স্পষ্ট জানিয়ে ছিল এই সিদ্ধান্তে তাদের সম্মতি নেই। সে নথিও রয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফল যে ভালো হবে না দাও জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।কালো টাকাতেও লাগাম দেওয়া যাবে না। কিন্তু সেসবের তোয়াক্কা করেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দেশবাসী বহুদিন ধরেই জানতে চাইছে আসল ঘটনা কি ঘটেছিল, কেনই বা নোটবন্দির মত এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল নরেন্দ্র মোদিকে। কিন্তু সেসবের স্পষ্ট জবাব মেলেনি। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর ভাষণে বলেছিলেন- এই নোট বন্দির ফলে জঙ্গীরা হাতে টাকা পাবে না ,তার ফলে সন্ত্রাসবাদ শেষ হবে। নয়া যে নোট আনা হয়েছে তা জাল করা যাবে না। এরপর তিনি বলেন, এর ফলে পাকিস্তান জব্দ হবে। এগুলোর কোনোটিই যখন বাস্তব হয়নি তখন তিনি বলেন, এর ফলে ক্যাশলেস ইকনোমি চালু হবে। তাও ব্যাক ফায়ার করায় তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে বেশি শুল্ক আদায় করেছে কেন্দ্র। মোটকথা নরেন্দ্র মোদি কি করতে চেয়েছিলেন তা দেশবাসীর কাছে স্পষ্ট হয়নি।
তবে দেখা গিয়েছে যে সেই সময় সমস্ত ব্যাঙ্ক গুলিতে নগদের অভাব ছিল না। সব ব্যাংকই নগদে ভরপুর হয়ে ওঠে। প্রশ্ন ওঠে,তাহলে কি এটাই ছিল রণনীতি। যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে এর পরবর্তী ঘটনা মনে রয়েছে সবার। নীরব মোদী ও তার মামা মেহুল চোকসি বিপুল অঙ্কের টাকা পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়েছেন। বিরোধীদের বক্তব্য, লুটেরাদের সুবিধা করে দিতেই এই নোটবন্দি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এর বেশি কিছু নয়।
এর আগেও আরটিআই মারফত বারবার জানতে চাওয়া হয়েছিল, নোটবন্দির প্রকৃত উদ্দেশ্য কি ছিল। অথচ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি তা খারিজ করে দেন। তিনি বলেন, যা কিছু জানানোর তা সংসদে জানানো হবে প্রকাশ্যে নয়।অথচ আরটিআই আইনের ৮ (১ ) ধারায় বলা হয়েছে, যা সংসদে জানানো যাবে তা জনগণকেও জানানো যাবে।