ইমরানের ছকে মমতার সংখ্যালঘু ভোট কাটতে মরিয়া মোদী, নিজেকে দিদি ঘনিষ্ট প্রমানের চেষ্টা

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

নয়াদিল্লি: বিরোধীদের বহুদিনের অভিযোগ ছিল তলে তলে দিদির দল ও মোদীর দলে যোগ রয়েছে। সেই কথাই কি প্রমাণিত হল শেষ পর্যন্ত? রঞ্জনীতির ময়দানে যুধ্বং দেহি সম্পর্ক হলেও মমতা – মোদীর সম্পর্ক খুবই মধুর।বুধবার সকালে অক্ষয় কুমারকে দেওয়া সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে সংবাদসংস্থা এএনআই। সেখানে রাজনীতির বাইরেও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন মোদী। আর সেখানেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে নতুন তথ্য দিলেন মোদী।

রাজনীতির ময়দানে যুযুধান দুই প্রতিপক্ষ বিজেপি-তৃণমূল। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে মোদীর ‘কোমরে দড়ি পরিানো’র হুঙ্কার ছেড়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত পাঁচ বছরেও বহুবার কেন্দ্র রাজ্য সঙ্ঘাত চরমে উঠেছে। সেই সব চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ফের লোকসভা ভোট। তিন দফা হয়ে গিয়েছে। বাকি আরও চার দফার ভোটগ্রহণ। ফের উত্তপ্ত রাজনৈতিক বাতাবরণ। কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়তে নারাজ মোদী-মমতা। এ রাজ্যে ভোট প্রচারে এসে মোদী যেমন মমতাকে তীব্র আক্রমণ করছেন, তেমনই মমতাও পাল্টা তোপ দেগে যাচ্ছেন। মোদী যেমন ‘স্পিডব্রেকার দিদি’ বলেছেন, সারদা, নারদা, সিন্ডিকেট নিয়ে নিশানা করছেন মমতাকে, মমতাও পাল্টা ব্যবহার করছেন ‘হিটলার আঙ্কল’, ‘এক্সপায়ারি বাবু’, ‘দাঙ্গাবাজ’, ‘নোটবন্দি কেলেঙ্কারির নায়ক’-এর মতো শব্দবন্দ। এমনই তপ্ত রাজনৈতিক আবহে মোদী ফাঁস করলেন মমতার সঙ্গে তাঁর ‘বন্ধুত্ব’র কথা।

‘রাউডি’ অক্ষয় কুমারের প্রশ্ন ছিল, ‘‘বিরোধীদের মধ্যে আপনার কোনও বন্ধু আছে?’’ মোদীর জবাবে উঠে এসেছে মমতার নাম। তিনি বলেন, ‘‘আপনারা শুনে আশ্চর্য হবেন এবং ভোটের মরসুমে এটা বলা আমার উচিত নয়। কিন্তু মমতা দিদি আমার জন্য প্রতি বছর উপহার পাঠান। একটি বা দু’টি কুর্তা পাঠান এবং সেটা উনি নিজে পছন্দ করে কেনেন।’’ যদিও পরক্ষণেই তিনি জানান, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতি বছর নিয়ম করে তাঁর জন্য নতুন নতুন ধরনের মিষ্টি পাঠান। ‘‘মমতা দিদি সেটা যখন জানতে পারলেন, তখন উনিও আমাকে বছরে এক বার বা দু’বার মিষ্টি পাঠানো শুরু করলেন।’’— বললেন মোদী।

তৃণমূল নেতৃত্বের অবশ্য বক্তব্য, নেত্রীর এই সৌজন্যের সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সৌজন্যের সম্পর্ক বজায় রাখবেন সেটাই দস্তুর। তা বলে মোদীর রাজনৈতিক মতাদর্শের বিরুদ্ধে লড়াই লঘু করার কোনও প্রশ্নই নেই।বাংলার শাসক দলের এক শীর্ষ সারির নেতা বলেন, কেবল প্রধানমন্ত্রী কেন সরকার ও বিরোধী দলের প্রায় সব নেতাকেই শারদ উৎসবে উপহার পাঠান দিদি। সঙ্গে মিষ্টিও পাঠান। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের জন্য তো মুঠো ভরে চকোলেট নিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী। এমনকি কলকাতা থেকে একবার প্রণববাবুর কাছে কাপড় আর দর্জি পাঠিয়ে স্যুটের মাপ নিয়ে তা বানিয়ে দিয়েছিলেন মমতা।

অক্ষয়ের সঙ্গে মোদীর এই সাক্ষাৎকারকে বলা হচ্ছে ‘সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক’। নরেন্দ্র মোদী ভোটের মাঝে অরাজনৈতিক কথা বলবেন এটা হজম হওয়ার কথা নয়। আসলে মমতা বাংলার সংখ্যালঘু ভোট ১৬ আনাই দখল করবেন আঁচ করছেন মোদী।তাতে জল ঢালতেই এই কৌশলী চেষ্টা।এমনটা মনে করছেন অনেকে। পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, সৌজন্যের কথা ফাঁস করে দেওয়াই হয়তো মোদীর উদ্দেশ্য ছিল না। ভোটের মাঝে তিনি হয়তো কৌশলেই বিষয়টি বাজারে ছেড়ে দিয়েছেন। যাতে এই বার্তা যায় যে তলে তলে বিজেপি তথা মোদীর সঙ্গে সমঝোতা করেই চলতে চান তৃণমূলনেত্রী। অনেকের মতে, ভোট মরশুমে বাংলায় সংখ্যালঘু সমাজের কাছে বার্তা দেওয়াই ছিল মোদীর লক্ষ্য।তবে বাম ও কং নেতারা বেজায় খুশি। স্বয়ং মোদী মমতার সঙ্গে সৌজন্যের কথা বলেছেন। অনেকে বলছেন, মোদী এটা শিখেছেন ইমরান খানের কাছে। মোদী যখন প্রচারে পাকিস্তানকে ধুয়ে দিচ্ছিলেন তখন ইমরান বলেন তিনি চান মোদী জয়ী হয়ে আসুন। তাতে কাশ্মীর নিয়ে আলোচনা এগোতে পারে। কংগ্রেস ফিরলে তা হবে না।

 

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest