Site icon The News Nest

ইস্তফার হিড়িকের মাঝেই বিরোধী দলনেতা নিয়ে ভাবনা শুরু কংগ্রেসের

congress flag 1

#নয়াদিল্লি: গত বছর সংখ্যাটা ছিল ৪৪, এ বার তা থেকে মাত্র আট বেড়ে হয়েছে ৫২। কিন্তু তাতেও লোকসভায় সরকারি ভাবে বিরোধী দলের তকমা পাওয়ার সম্ভাবনা কংগ্রেসের নেই, যেমন হয়েছিল ২০১৪-তেও। কিন্তু একজনকে তো লোকসভা দলের নেতা হতে হবে, যিনি বিরোধী দলনেতার দায়িত্বই পালন করবেন। কাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হবে, সেই নিয়েই এখন চিন্তায় কংগ্রেস।

এ বার কংগ্রেসের ভরাডুবির মধ্যেও মুখরক্ষা করেছে দক্ষিণের দুই রাজ্য কেরল এবং তামিলনাড়ু। কেরলে ২০টার মধ্যে ১৯ আসনে জিতেছে কংগ্রেস জোট, যার মধ্যে একা ১৫ আসনেই জিতেছে কংগ্রেস। অন্য দিকে তামিলনাড়ু থেকে আট জন সাংসদ পাচ্ছে কংগ্রেস। এই কারণেই দক্ষিণ ভারত থেকেই কাউকে নেতা করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের বিচারে এই মুহূর্তে বিরোধী দলনেতা হওয়ার প্রবল দাবিদার তিরুঅনন্তপুরমের সাংসদ শশী তারুর। বিভিন্ন মহল থেকে এ-ও দাবি উঠছে যে রাহুল গান্ধী যদি সত্যিই সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন, তা হলে তারুরকেই সভাপতি করা যেতে পারে। এ ছাড়াও আরও যে দু’জনের নাম বিবেচনায় রয়েছে তাঁরা হলেন, সাত বারের সাংসদ সুরেশ কুডিকুন্নিল এবং চার বারের সাংসদ তথা কেরলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কে করুণাকরণের ছেলে কে মুরলীধরন।

কংগ্রেস সূত্রের খবর, যে হেতু রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা গুলাম নবী আজাদ জম্মু-কাশ্মীরের, তাই লোকসভার নেতা দক্ষিণ ভারত থেকে হলে গোটা দেশ থেকেই প্রতিনিধিত্ব থাকতে পারে।

২০১৪ সালে বিরোধী দলনেতা হিসেবে ছিলেন কর্নাটকের মল্লিকার্জুন খাড়গে। কিন্তু খাড়গে এ বার আকস্মিক ভাবে হেরে গিয়েছেন। অনেক মহল থেকে রাহুলকেও দলনেতা করার চেষ্টা হচ্ছিল। কিন্তু ওয়েনাড়ের সাংসদ রাহুল হয়তো বেশি দিন লোকসভায় সময় দিতে পারবেন না বলে মত কংগ্রেসের অন্দরে। কারণ দলের কাজে বিভিন্ন সময়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরতে হতে পারে তাঁকে। এ বার কংগ্রেসের বেশ কিছু হেভিওয়েটকে দেখতে পাবে না সংসদ। তাঁদের মধ্যে অন্যতম মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে যাওয়া কমল নাথ, নিজের কেন্দ্র থেকে হেরে যাওয়া জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। এ ছাড়াও শিলচরের সুস্মিতা দেব এবং হরিয়ানার দীপন্দর হুডাকেও দেখতে পাবে না সংসদ।

অন্যদিকে, লোকসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের পরেই কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন রাহুল গান্ধী। সনিয়া গান্ধী তাঁকে দলের ওয়ার্কিং কমিটির সামনে বিষয়টি রাখতে বলেন। শনিবার দিল্লিতে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে কংগ্রেসের নেতারা রাহুলের ইস্তফা ঠেকাতে মরিয়া চেষ্টা করেন। একটি প্রস্তাব পাশ করিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে রাহুলের ইস্তফা খারিজও করে দেয় ওই কমিটি। তা সত্ত্বেও রাহুল নিজের অবস্থানে অনড় থেকেছেন এবং এও বলেছেন, নতুন সভাপতি হিসেবে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার নামও যেন ভাবা না হয়। কংগ্রেসের এক শীর্ষ সূত্রের মতে, এর পরে চব্বিশ ঘণ্টা কেটে গেলেও রাহুল এখনও নমনীয় হননি। উল্টে তিনি নেতৃত্বের একাংশের উপরেই ক্ষুব্ধ।

উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের ভরাডুবির পর, কংগ্রেসের উত্তরপ্রদেশ অধ্যক্ষ রাজ বব্বর ইস্তফা দেন প্রথমে। শুক্রবার সকাল হতেই তিনি কংগ্রেসের হারের যাবতীয় দায়িত্ব নিয়ে ইস্তফা পত্র পাঠিয়ে দেন কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে। রাহুলের মনোভাবের আঁচ পেয়েই কংগ্রেসে ইস্তফা পেশ করার হিড়িক শুরু হয়ে যায়। কমল নাথ শনিবার রাতেই রাজ্য কমিটির সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার আর্জি পেশ করেন। রবিবার অশোক চৌহান মহারাষ্ট্রের রাজ্য সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা জানান।

Exit mobile version