#কলকাতা: রাতের শহরে হেনস্থার ঘটনায় পুলিশি গাফিলতির অভিযোগ তুলেছিলেন প্রাক্তন মিস ইন্ডিয়া ইউনিভার্স উষসী সেনগুপ্ত। তাঁর অভিযোগ ছিল, ময়দান থানার পুলিশের কাছে তিনি সাহায্য চাইলে, সেই থানায় বিষয় নয় বলে এড়িয়ে যাওয়া হয়। সে দিন রাতেই ময়দান, ভবানীপুর ও চারু মার্কেট থানায় বারে বারে হয়রানি শিকার হতে হয় তাঁকে। তাঁর অভিযোগ খতিয়ে দেখে বুধবার সন্ধেয় বরখাস্ত করা হয় চারু মার্কেট থানার সাব ইনস্পেক্টর পীযুষ কুমার বলকে। পাশাপাশি, শো-কজ করা হয় ময়দান থানার সহকারী সাব ইনস্পেক্টর পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও ভবানীপুর থানার সাব ইনস্পেক্টর মৃণাল মজুমদারকে।
পীযূষ বলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, কেন তিনি ওই সময় কোনও পদক্ষেপ নেননি? ঘটনাটি ভবানীপুর থানার এক্তিয়ারভুক্ত বলে কেন এড়িয়ে গিয়েছেন? ভবানীপুর থানার এসআই মৃণাল মজুমদার ও ময়দান থানার এএসআই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, কেন তাঁরা লালবাজারকে গোটা বিষয়টি জানাননি।
উষসী কাণ্ডের যাবনিকাপাত অবশ্য এখানেই হয়নি। লালবাজারে ভবানীপুর থানার ওসি, চারু মার্কেট থানার ওসি ও ময়দান থানার অতিরিক্ত ওসিকে নিয়ে পুলিশের পদস্থ আধিকারিকরা বুধবার বৈঠক করেন লালবাজারে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, রাতের শহরে ট্রাফিক পুলিশকে নজরদারি আরও বাড়ানো হবে। যে থানা আগে খবর পাবে, তাদেরই প্রথমে ব্যবস্থা নিতে হবে। পরে নিয়ম মেনে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলাটি স্থানান্তরিত করা হবে। রাতে বাড়াতে হবে পুলিশি টহলদারি। সিসিটিভি নজরদারিতে থাকবে অতিরিক্ত কর্মী। ঊষসীর অভিযোগের ভিত্তিতে সেই রাতে পুলিশের কোনও গাফিলতি ছিল কি না তা খতিয়ে দেখতে গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। চারু মার্কেট থানায় ঊষসী ও তাঁর উবারের চালকের যে বয়ান রেকর্ড করা হয়েছিল, তা শুনে এবং ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে সোমবার মাঝ রাতে একদল যুবকের হাতে আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ করেছেন মডেল-অভিনেত্রী ঊষসী সেনগুপ্ত। তাঁর অভিযোগ, যে উব্রে চড়ে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন, তাতে ধাক্কা মারার পাশাপাশি চালককে মারধর করা এমনকি বেশ কয়েক কিলোমিটার ধাওয়া করে এসে তাঁকে গাড়ি থেকে টেনে নামানোর চেষ্টাও করা হয়। হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয় মোবাইল। পুলিশের কাছে জানাতে গেলে এটা এই থানার বিষয় নয় বলে এড়িয়ে যাওয়া হয়— এমনটাও অভিযোগ করেছেন তিনি। পুলিশ যদিও অভিযোগ পেয়ে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে।
উল্লেখ্য, ঊষসী ২০১০-এ ‘মিস ইন্ডিয়া’র খেতাব জিতেছেন। আন্তর্জাতিক মঞ্চে কলকাতার প্রতিনিধিত্বও করেছেন তিনি।