#নয়াদিল্লি: লোকসভা ভোটে বাংলায় বিজেপি-র ভাল ফল হলে মুকুল রায়ের ছেলে তথা বীজপুরের তৃণমূল বিধায়ক শুভ্রাংশু রায় যে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেবেন, সেই দেওয়াল লিখন স্পষ্টই ছিল। মঙ্গলবার দীনদয়াল মার্গে বিজেপি-র সদর দফতরে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপি-তে যোগ দিলেন শুভ্রাংশু। সেই সঙ্গে বিজেপি-তে যোগ দিলেন বাংলার আরও দুই বিধায়ক। বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তুষারকান্তি ভট্টাচার্য ও হেমতাবাদের সিপিএম বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়।
মঙ্গলবার দিল্লি এবং কলকাতায় মিলিয়ে বিজেপিতে নাম লেখালেন প্রায় পাঁচ ডজন নেতা-নেত্রী। এঁদের মধ্যে বিধায়ক এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি থাকলেও পুরসভার কাউন্সিলাররাই বেশি। এই একটি দিনেই সংখ্যাগরিষ্ঠতার নিরিখে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের হাতছাড়া হল চারটি পুরসভা। যে চারটি পুরসভায় এ দিন তৃণমূল সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাল, সেগুলির প্রত্যেকটিই উত্তর ২৪ পরগনার। সেগুলি হল ভাটপাড়া, হালিশহর, নৈহাটি এবং কাঁচরাপাড়া। নীচের তালিকায় দেখে নিন বর্তমানে এই পুরসভাগুলিতে বিজেপির কাউন্সিলার সংখ্যা।
পুরসভা | মোট আসন | বিজেপির দখলে |
ভাটপাড়া | ৩৪ | ২৩ |
কাঁচরাপাড়া | ২৪ | ১৭ |
নৈহাটি | ৩১ | ২৯ |
হালিশহর | ২৩ | ১৭ |
দলবদল প্রসঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অভিযোগ করেন, “ভয় দেখিয়ে এবং টাকার বিনিময়ে জনপ্রতিনিধিদের কিনে নিচ্ছে বিজেপি”। তবে দিল্লিতে দলবদল অনুষ্ঠানে বিজেপি নেতা মুকুল রায় জানান, “বিজেপির বিরুদ্ধে ঘোড়া কেনাবেচার অভিযোগ সত্য নয়। আদতে পঞ্চায়েত ভোটে আমাদের জয়ী প্রতিনিধিদের টাকা দিয়ে এবং ভয় দেখিয়ে কিনে নিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। বাংলার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আর মুখ্যমন্ত্রী দেখতে চাইছেন না”।বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় জানান, “মোদীজির নেতৃত্বে উদ্বুদ্ধ হয়ে অনেকেই বিজেপিতে আসতে চাইছেন। আগামী দিনে আরও অনেকেই আসবেন”।
এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে এ দিন ফিরহাদ হাকিম সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘‘বড় জাহাজ যখন একটু টলমল করে, তখন সবার আগে ইঁদুররা সমুদ্রে ঝাঁপ দেয়। তার পর সেই জলেই ডুবে মরে। একটা রাজনৈতিক দল কয়েকটা আসন পেয়েছে। তাতে ঘাবড়ে গিয়ে যাঁরা পালিয়ে যাচ্ছেন বা চাপের মুখে যাঁরা মাথা নত করে পালিয়ে যাচ্ছেন, তাঁরা আদর্শের রাজনীতি করে না। আদর্শের রাজনীতি করলে আদর্শের জন্য জীবন উৎসর্গ করে দেওয়া যায়। আদর্শের রাজনীতি যাঁরা করবেন তাঁরা আন্দোলন করে তার বিরুদ্ধে লড়াই করবেন। যাঁরা আজ এগুলো করছে, তাঁরা কোনও না কোনও চাপেই করছেন।’’