‘এসডিপিও আমাকে খুন করতে চাইছে’, সোশ্যাল মিডিয়ায় বিস্ফোরক তৃণমূল সাংসদ

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

ভোটে দাঁড়াতে চাইছেন এসডিপিও নিজে। তাই তাঁকে খুনের চক্রান্ত করা হচ্ছে বলে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করলেন তৃণমূল সাংসদ সৌমিত্র খান। এসডিপিও-র বিরুদ্ধে ফেসবুক লাইভে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বুধবারই ময়দানে নামার হুঙ্কার ছেড়েছেন তিনি।
সপ্তাহ তিনেক আগে ফেসবুকে পোস্ট করে বলেছিলেন, তাঁর উপর ও দলের যুব নেতা কর্মীদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে। এই ব্যাপারে বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খাঁ’কে কাঠগড়ায় তুলতে চেয়েছিলেন বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের তৃণমূল সাংসদ সৌমিত্র খান। এ বার ফেসবুকে আরও বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন তিনি। বললেন, তাঁকে খুন করার চক্রান্ত করা হচ্ছে। এই চক্রান্তের পিছনে নাকি রয়েছেন বিষ্ণুপুরের এসডিপিও সুকোমল দাস। মঙ্গলবার বিকেলে দুটি ফেসবুক লাইভ ও একটি ফেসবুক পোস্ট করেন সৌমিত্র খাঁ। মঙ্গলবার নয়াদিল্লি থেকে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর মহকুমার এসডিপিও-র বিরুদ্ধে তোপ দাগেন সৌমিত্র খান। তাঁর অভিযোগ, এসডিপিও সুকোমল দাস অপহরণ করেছেন তাঁর আপ্ত-সহায়ক গোপীকে। শুধু তাই নয়, সুকোমলবাবু নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্যই এই ধরনের কাজ করছেন বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযোগ এনেছেন সৌমিত্র খান। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়া হলে, বুধবার রাজ্যে ফিরে থানা ঘেরাওয়ের হুমকিও দিয়েছেন বাঁকুড়ার বিষ্ণপুরের সাংসদ। তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা হতে পারে বলেও অভিযোগ করেছেন সৌমিত্রবাবু। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অবিলম্বে এসডিপিও পদ থেকে সুকোমল দাসকে বরখাস্ত করার দাবিও করেছেন তিনি। পাশাপাশি, বাঁকুড়ার পুলিশ সুপারের কাছেও পুরো বিষয়টি নিয়ে কৈফিয়ত দাবি করেছেন।
নয়াদিল্লি থেকে পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে সৌমিত্র খানের এই তোপ দাগার ঘটনা তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এই এসডিপিও-র বিরুদ্ধে তৃণমূলের হয়ে কাজ করার অভিযোগ বিভিন্ন সময় সামনে এনেছে রাজ্য বিজেপি। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র সায়ন্তন বসু বারংবার বলেছেন,’ বিষ্ণপুরে কোনও নেতা নয়, এসডিপিও সুকোমল দাসই তৃণমূলের সমস্ত কাজকর্ম পরিচালনা করেন।।’এই এসডিপিও-র বিরুদ্ধেই সক্রিয় ভাবে তৃণমূলের হয়ে কাজ করার অভিযোগ তুলে সম্প্রতি দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি।
কিন্তু কে এই সুকোমল দাস? পুলিশ প্রশাসনের অনেকেই বলেন সুকোমলবাবু যেখানে দায়িত্ব নিয়ে যান, সেখানেই নিজগুণে সংবাদ শিরোনামে চলে আসেন। ২০১১ সালে পালাবদলের পর আরামবাগ থানার আইসি-র দায়িত্বে ছিলেন সুকোমল দাস। একটা সময় আরামবাগ ছিল বামেদের দুর্ভেদ্য ঘাঁটি। সেই সময় গোটা আরামবাগ মহকুমা জুড়ে সুকোমল দাস কার্যত দাপিয়ে বেড়াতেন। তন্ময় রায়চৌধুরী তখন হুগলির পুলিশ সুপার। সে সময় হুগলির জেলা সদর চুঁচুড়া পুলিশ লাইনে কান পাতলেই শোনা যেত,’আরামবাগ বাদ দিয়ে বাকি জেলার এসপি টিআরসি (তন্ময় রায়চৌধুরী)। আরামবাগের এসপি সুকোমল দাস।’ এ হেন সুকোমল দাসের বিরুদ্ধে আরামবাগ, খানাকুল অঞ্চলের শাসক নেতাদেরও কম অভিযোগ নেই। কিন্তু তাঁকে ঠেকায় কে! অনেকেই বলেন, পশ্চিম মেদিনীপুরে একটা সময় ভারতী ঘোষ শাসক দলের হয়ে যে কাজ করতেন, সুকোমল দাসও ওই একই কাজ করতেন আরামবাগে।” পরে তাঁকে আরামবাগ থেকে বিষ্ণুপুরের এসডিপিও-র দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয়।সাংসদের দীর্ঘ ফেসবুক লাইভ এবং পোস্ট নিয়ে এসডিপিও সাহেবের সংক্ষিপ্ত জবাব,’আমি কোন কোনও মন্তব্য করব না। আমার কোনও মন্তব্য করার এক্তিয়ারও নেই। যা করার আমার উপর তলার পুলিশকর্তারা করবেন।’
কিছু দিন আগেই সৌমিত্র খানের সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি বিতর্কিত পোস্ট ঘিরে জল্পনা দেখা দিয়েছিল বিভিন্ন মহলে। ফেসবুক প্রোফাইলে পোস্ট করেছিলেন,’অয়েলিং ইজ দ্য বেস্ট পলিসি ফর ইজ ওন এক্সিসটেন্স ইন পলিটিক্স।’ যার মানে, ‘রাজনীতিতে টিকে থাকতে গেলে তেল দিতেই হবে।’। জল্পনা ছিল সৌমিত্র খানকে ভাঙিয়ে বড় চমক দিতে পারে বিজেপি। কিন্তু এখন একজন পদস্থ পুলিশ কর্তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে খুনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগের পর তোলপাড় পড়ে গিয়েছে শাসক দল এবং প্রশাসনে।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest