শ্রীনগর: পাক হেফাজতে দিন কাটানো আইএএফ উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান এখন সারা দেশেই একটা বিশাল নাম! ২৬ ফেব্রুয়ারি বালাকোটে জঙ্গি ঘাঁটিতে এয়ার স্ট্রাইকের একদিন পরেই পাকিস্তানি যুদ্ধ বিমানের সঙ্গে তাঁর মিগ ২১-এর সংঘর্ষ হলে পাকিস্তানের মাটিতে গিয়ে পড়েন তিনি। সম্প্রতি, সহকর্মী এবং অন্যান্য সৈন্যদের সঙ্গে চুটিয়ে মজা করতে, আর সেলফি তুলতে দেখা গেল তাঁকে। ছুটি কাটিয়ে ফিরে এই প্রথম জম্মু ও কাশ্মীরে তার আগেকার সহকর্মীদের সঙ্গে দেখা করেছেন উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। সম্প্রতি একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বহুদিন পর বন্ধুদের মাঝে ফিরে গিয়ে চুটিয়ে আনন্দ করছেন তিনি। সকলেরই সঙ্গে সেলফিও তুলেছেন। যদি প্রতিবারই তোলার আগে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, “এটাই শেষ কিন্তু, আর নয়!”
উইং কম্যান্ডার অবশ্য জানিয়েছেন যে এইসব ছবি তাঁর সহকর্মী-বন্ধুদের জন্য নয়। বরং তাঁদের পরিবারের জন্য। অভিনন্দন বলেন, “ওঁদের সবার পরিবার আমার সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য প্রার্থনা করেছিলেন। সবার সঙ্গে আমি ব্যক্তিগত ভাবে দেখা করতে পারিনি। তাই ওঁদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাতেই এ দিন সকলের সঙ্গে সেলফি তুলেছি।” সংবাদসংস্থা এএনআই এই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এনেছে। আর সেখানে দেখা গিয়েছে সবার সঙ্গেই সেলফি তোলার সময় অভিনন্দন বলছেন, “এটাই কিন্তু শেষ। আর নয়।” কিন্তু পরমুহূর্তেই হাসিমুখে আর এক সহকর্মীর সঙ্গে সেলফি তোলার জন্য এগিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে অভিনন্দনকে। তারপরেই আবার ‘ভারত মাতা কি জয়’ স্লোগান তুলে সহকর্মীদের সঙ্গে আনন্দে মেতেছেন তিনি। সঙ্গে অবশ্যই ভারতীয় বায়ুসেনার জন্যও ছিল জয়ধ্বনি। অভিনন্দন জানিয়েছেন, পাকিস্তান থেকে দেশে ফেরার পর এই প্রথম পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন তিনি। তাই উত্তেজনা-উন্মাদনা সবই ছিল খানিক বেশি। এ দিন তাই জমিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে মজা করছেন তিনি। ফ্রেমে বন্দি করেছেন বিশেষ মুহূর্তও।
First video since he was discharged from hospital, here’s Wing Commander Abhinandan Varthaman taking pictures with men. This is likely sometime last month. Video from some Air Force groups. He looks well! ?? pic.twitter.com/Os5Pu6aJI1
— Shiv Aroor (@ShivAroor) May 4, 2019
দেশে ফিরে আসার পর মেরুদণ্ডে চোট, পাঁজরের হাড়ে চিড় নিয়ে বেশ কয়েকদিন হাসপাতালে ভরতি ছিলেন অভিনন্দন বর্তমান৷ সেনা হাসপাতালে চিকিৎসকদের থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পরই শ্রীনগরের বায়ুসেনার স্কোয়াড্রনে যোগ দেন তিনি। ককপিটের প্রতি তাঁর আকর্ষণ যে কত তা স্বীকার করে নিয়েছেন বায়ুসেনার উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও৷ খুব শীঘ্রই ককপিটে ফিরতে চলেছেন বায়ুসেনার উইং কমান্ডার।নতুন পোস্টিংয়ের জায়গা ও দিনক্ষণও একদম পাকা। তবে নিরাপত্তার খাতিরে তাঁর নতুন কর্মক্ষেত্রের নাম প্রকাশ্যে আনা হয়নি। কিন্তু বায়ুসেনা সূত্রে খবর, ওয়েস্টার্ন সেক্টর অর্থাৎ পাক সীমান্ত লাগোয়া এলাকার এয়ার বেসেই তাঁকে পাঠানো হতে পারে। দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে পাক সীমান্তের এই এয়ার বেসের গুরুত্ব রয়েছে এবং ৩৫ বছরের এই সাহসী কম্যান্ডার সেই দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গেই পালন করতে পারবেন বলে মত বায়ুসেনার উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের।
এর মধ্যেই বীরচক্র সম্মানের জন্য উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমানের নাম সুপারিশ করেছে ভারতীয় বায়ুসেনা। যুদ্ধক্ষেত্রে সাহসিকতার পরিচয়ের পুরস্কার স্বরূপ এই বীরচক্র সম্মান তুলে দেওয়া হয় সেনাদের হাতে। সর্বোচ্চ সম্মান পরমবীর চক্র, তারপর মহাবীর চক্র এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ সম্মান বীরচক্র। কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে খবর, অভিনন্দন বর্তমান ছাড়াও এ বছর বীরচক্র সম্মানের জন্য বায়ুসেনার মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমানের আরও ১২ জন পাইলটের নাম সুপারিশ করেছে বায়ুসেনা। তার আগে অন্যরকম অভিনন্দনকে দেখে খুশি নেটিজেনরা৷