Site icon The News Nest

কর্ণাটকের নাটক পৌঁছল মুম্বইয়ে, বিক্ষুব্ধদের হোটেলে ঢুকতে পারলেন না কংগ্রেস নেতা শিবকুমার

shivakumar in mumbaijpeg

#মুম্বই: বেঙ্গালুরু থেকে মুম্বই পৌঁছল কর্নাটকের নাটক।বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে প্রবল বাধার মুখে পড়লেন কর্নাটকের কংগ্রেস নেতা ডি কে শিবকুমার। জোট সরকারের হয়ে বুধবার সকালে মুম্বইয়ে বিধায়কদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন শিবকুমার। মুম্বইয়ের যে হোটেলে বিধায়করা রয়েছেন সেখানে পৌঁছতেই পুলিশের বাধার মুখে পড়েন তিনি।

নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে মুম্বই পুলিশকে আগেই চিঠি দিয়েছিলেন বিধায়করা। সেই মতো এ দিন সকাল থেকেই হোটেলের সামনে কড়া নিরাপত্তা ছিল। বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের বুঝিয়ে ঘরে ফেরানোর চেষ্টা যাঁরা করছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম কংগ্রেসের এই শীর্ষ নেতা। কিন্তু হোটেলে পৌঁছতেই যে এমন বাধার মুখে পড়তে হবে সেটা ঘুণাক্ষরেও আঁচ করতে পারেননি তিনি।

কর্ণাটকে শাসক কংগ্রেস-জেডি এস জোটের ১৪ জন বিধায়ক ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু স্পিকার এখনও ইস্তফা গ্রহণ করেননি। এই অবস্থায় সরকার বাঁচাতে শেষ চেষ্টা করছে কংগ্রেস। মুম্বইয়ের যে হোটেলে বিদ্রোহী বিধায়কদের রাখা হয়েছে, বুধবার সেখানে ঢুকতে চেষ্টা করেছিলেন কংগ্রেসের ডি কে শিবকুমার। তিনি কংগ্রেসের ‘ট্রাবলশুটার’ বলে পরিচিত। বিদ্রোহীরা যে পাঁচতারা হোটেলে আছেন, তার নাম হোটেল রেনেসাঁস। তাঁরাই নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশকে চিঠি লিখেছিলেন।  কুমরাস্বামী এবং শিবকুমার দলবল নিয়ে হোটেলে জোর করে ঢুকে পড়তে পারেন—এমন আশঙ্কার কথাও লিখে মুম্বই পুলিশ প্রধানকে চিঠি দেন ১০ বিধায়ক। সেই চিঠি পাওয়ার পরই ১০০ জন পুলিশ হোটেলের বাইরে মোতায়েন করা হয়।

এদিন হোটেলে ঢোকার মুখেই পুলিশ শিবকুমারের গাড়ি আটকে দেয়। তিনি দাবি করেন, ওই হোটেলে তাঁর নিজের ঘর বুক করা আছে। তাঁকে আটকানো বেআইনি। কিন্তু পুলিশও নাছোড়। শিবকুমারকে বিধায়কদের দেওয়া চিঠির কথা জানিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হয়নি।  শিবকুমার পাল্টা পুলিশকে বলেন, “আমি কোথাও যাব না। ঢুকতে না দিলে সারা দিন এখানেই অপেক্ষা করব।” হোটেলে তাঁর কয়েক জন বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করবেন এবং কফি খাবেন, পুলিশকে এমন কথা জানিয়েও নিরস্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশ পাল্টা তাঁকে জনিয়ে দেয়, হোটেলে ঢুকতে দেওয়া হবে না, প্রয়োজনে পাশেই একটা গেস্ট হাউসের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে তাঁকে। পাশাপাশি পুলিশ শিবকুমারকে জানিয়েছে, বিধায়করা যদি অনুমতি দেন, তবেই তাঁকে হোটেলে ঢুকতে দেওয়া হবে।

হোটেলের বাইরে শিবকুমারের সঙ্গে যখন পুলিশের তর্কবিতর্ক চলছে তখন মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। তা সত্ত্বেও তিনি হোটেলের সামনে থেকে নড়েননি। তিনি মহারাষ্ট্রে শাসক বিজেপির সমালোচনা করে বলেন, তারা কর্ণাটকে কংগ্রেস-জেডি এস সরকারকে ফেলে দিতে চায়। হোটেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শিবকুমার সত্যিই ঘর বুক করেছিলেন। কিন্তু ‘জরুরি কারণে’ বুকিং ক্যানসেল করে দেওয়া হয়েছে।

লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই টলোমলো কর্নাটকের জেডিএস – কংগ্রেস সরকার। পদত্যাগ করতে শুরু করেন একের পর এক কংগ্রেস বিধায়ক। সরকার বাঁচাতে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া সরকারের সমস্ত মন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে নির্দেশ দেয় নেতৃত্ব। কিন্তু তাতেও চিঁড়ে ভেজেনি। কংগ্রেসের ৭ বিধায়ক, জেডিএস-এর ৩ ও ২ নির্দল বিধায়ক পদত্যাগ করে বেঙ্গালুরু ছাড়েন। কর্নাটকের স্পিকার পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বিদ্রোহী বিধায়করা। স্পিকারের দাবি, ১৩ জন পদত্যাগীর মধ্যে ১০ জনের পদত্যাগ পত্র নিয়ম মেনে জমা পড়েনি। বিদ্রোহী বিধায়কদের দাবি, এতে সেরাজ্যের কুমারস্বামী সরকারকে অতিরিক্ত সময় দিতেই এই কাজ করেছেন তিনি। মামলাটি বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে উঠবে।

বিজেপির দাবি, কর্নাটকে তাদের পক্ষে ১০৭ জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে। কুমারস্বামীর পক্ষে রয়েছেন ১০৩ জন বিধায়ক। তাই অবিলম্বে সরকারকে বরখাস্ত করুন রাজ্যপাল।

Exit mobile version