নয়াদিল্লি: গত শনিবার উত্তরপ্রদেশের সভা থেকে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীকে “ভ্রষ্টাচারী নম্বর ওয়ান”-এর তকমা দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রবিবার তাঁর সেই বক্তব্যের পাল্টা দিলেন কংগ্রেস সর্বভারতীয় সভাপতি তথা রাজীব-তনয় রাহুল। এ দিন টুইটারে রাহুল লিখেছেন, “যুদ্ধ শেষ হয়ে গিয়েছে। আপনার কর্মফল আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। নিজের মনের বিশ্বাস আমার বাবার উপর সাজিয়ে কোনো লাভ নেই। আমার সমস্ত ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা।”
শনিবার উত্তরপ্রদেশের প্রতাপগড়ে একটি নির্বাচনী সভায় বফর্স প্রসঙ্গ তুলে এনে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীকে নিয়ে কংগ্রেসের উপর আক্রমণ শানান মোদী। রাহুলের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনার বাবাকে তাঁর পারিষদরা মিস্টার ক্লিন বলে ডাকত। কিন্তু তাঁর জীবন শেষ হয়েছিল ভ্রষ্টাচারী নম্বর ১ হিসেবে।” ১৯৮০ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর বিরুদ্ধে বফর্স চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ আসে। কিন্তু আদালতে ক্লিন চিট পান রাজীব। আদালত জানায়, রাজীব গান্ধীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনও প্রমাণ নেই। ১৯৯১ সালে আততায়ীর হাতে নিহত হন রাজীব গান্ধী।
Modi Ji,
The battle is over. Your Karma awaits you. Projecting your inner beliefs about yourself onto my father won’t protect you.
All my love and a huge hug.
Rahul
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) May 5, 2019
রাজীব গান্ধীকে নিয়ে মন্তব্য করার জন্য মোদীকে কটাক্ষ করেছেন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢড়া ও পি চিদাম্বরমও। চিদাম্বরম বলেন, “প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীকে নিয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর এহেন ভাষণ প্রমাণ করে ভোটের রায় নিয়ে তিনি চরম হতাশায় ভুগছেন। মোদী সব সীমা পার করে গিয়েছেন। ১৯৯১ সালে যে মারা গিয়েছেন, তাঁর কথা তুলে এনে তাঁর ভাবমূর্তি খারাপ করার চেষ্টা করছেন মোদী।” রাহুলের বোন তথা কংগ্রেসের পূর্ব উত্তরপ্রদেশের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। টুইট করে বলেন, “যে প্রধানমন্ত্রী শহিদদের বলিদানের কথা বলে ভোট চাইছেন, তিনি শনিবার এমন একজন প্রধানমন্ত্রীকে অসম্মান করেছেন, যিনি দেশের জন্যই শহিদ হয়েছিলেন। অমেঠীর মানুষ ওনাকে জবাব দেবে। রাজীব গান্ধী অমেঠীর মানুষের জন্য নিজের জীবন দিয়েছেন। যারা দেশকে ঠকায়, দেশ তাদের ক্ষমা করে না মোদীজি।”
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, মোদী এর আগেও কংগ্রেসকে পরিবারতন্ত্র কিংবা নামদার বলে কটাক্ষ করলেও কোনও দিন রাজীব গান্ধীর প্রসঙ্গ তুলে আনেননি। অন্যদিকে রাহুল গান্ধী মোদীকে বারবার রাফাল অস্ত্রে ধরাশায়ী করতে চেয়েছেন। তাই শেষ পর্যন্ত বফর্সের প্রসঙ্গ তুলে আনলেন মোদী। রাহুল তথা কংগ্রেসকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেওয়ার জন্যই রাজীব গান্ধীকে ‘ভ্রষ্টাচারী নম্বর ১’ বলে আক্রমণ করলেন মোদী। পর্যবেক্ষকদের আরও বক্তব্য, রাহুল-প্রিয়ঙ্কা আবার মোদীর অস্ত্রেই মোদীকে ঘায়েল করার চেষ্টা করলেন। যেহেতু রাজীব গান্ধীর বিরুদ্ধে কিছু প্রমাণিত হয়নি, তাই তাঁকে দোষী বলা যায় না। বরং তাঁর হত্যাকে বলিদান হিসেবে উল্লেখ করে মোদীর দেশভক্তিকে কটাক্ষ করলেন ভাই-বোন।