#কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রীর ‘কাটমানি ফেরত দিন’ ঘোষণার পরই রাজ্য জুড়ে হয়ে গিয়েছে ‘কাটমানি-বিপ্লব’। পুরসভার কাউন্সিলার থেকে গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যদের নামে উঠছে ঝুড়ি ঝুড়ি অভিযোগ। এরই মধ্যে কাটমানি খাওয়ার অভিযোগে বিদ্ধ হলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন।
সিঁথির এক ব্যবসায়ী সুমন্ত্র চৌধুরী ওরফে নান্তিবাবু অভিযোগ তুলেছেন শান্তনুর বিরুদ্ধে। তাঁর অভিযোগ, কলকাতা পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলার বর্তমানে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তথা সাংসদ শান্তনু তাঁর কাছ থেকে ৪০-৪২ লক্ষ টাকা আদায় করেছেন। সঙ্গে তিনি কবে কত টাকা নিয়েছেন, সে সবেরও একটা মৌখিক পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন।
সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে ব্যবসায়ী নান্তিবাবু বলেছেন, “২৫ হাজার টাকা দিয়ে শান্তনু সেনের তোলাবাজির হাতেখড়ি।” তিনি আরও বলেন, দিদির অভয়বাণী পেয়েই মুখ খুলছেন। এতদিন খানিকটা ভয়েই কুলুপ এঁটেছিলেন মুখে। তিনি আরও বলেন, “প্রথম যখন ২৫ হাজার টাকা নিলেন, তখন বলেছিলেন গাড়ি, মাইক ভাড়ার জন্য টাকা লাগে তো! তাই! তারপর ওঁর সিস্টেম হয়ে গেল কাঠা পিছু দু’লক্ষ টাকা।” গোটা প্রক্রিয়াটার বর্ণনা দিতে গিয়ে ওই প্রমোটার বলেন, “কাজ হোক চাই না হোক, টাকা দিতেই হতো। চার কাঠা জমি হলে আট লক্ষ টাকা। এবং সেটা নিজের মোবাইলে সুন্দর করে হিসেব রাখতেন ডাক্তার শান্তনু সেন। দু’লক্ষ জমা হলে বাকি থাকত ছয়। তারপর আবার দুই জমা করলে পড়ে থাকত চার। এ ভাবে আস্তে আস্তে শূন্য হয়ে যেত!”
শুধু তো তোলার অভিযোগ নয়। রাজ্যসভার সাংসদের বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট রাজ চালানোর অভিযোগও তুলেছেন এই ব্যবসায়ী। তাঁর দাবি, “সিঁথির বুকে সিন্ডিকেট শুরু করেছিলেন শান্তনু সেনই। আমার পরিবারের ৭৫ বছরের ইট-বালির ব্যবসা। তবু কোনও কাজ করতে গেলে ওই সিন্ডিকেটের থেকেই মাল নিতে হতো।” সেই সিন্ডিকেট কেমন? ব্যবসায়ীর অভিযোগ, “দাম বেশি, কোয়ালিটি খারাপ, মাপ কম। সব দিক থেকেই মারত।”
শান্তনু সেন শুধু রাজ্যসভার সাংসদ নন। প্রখ্যাত চিকিৎসকও বটে। একই সঙ্গে তিনি সর্বভারতীয় মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিও। তাঁর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নিঃসন্দেহে বড় অভিযোগ। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে নান্তিবাবুর এই অভিযোগ ফলাও করে প্রকাশিত হওয়ার পরই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শান্তনু। তিনি জানিয়েছেন, “ওঁর সঙ্গে আদালতে দেখা হবে। এর বেশি কিছু এখন বলব না”।