Site icon The News Nest

কোথাও পোস্টার-কোথাও ভাঙচুর,কর্মী বিক্ষোভ সামাল দিতে জেরবার দিলীপ

postar

কলকাতা: প্রার্থীর নাম ঘোষণা হতেই বিদ্রোহ বিজেপিতে। দলে যোগ দিয়েই কী ভাবে প্রার্থী সদ্য প্রাক্তন তৃণমূল নেতারা? প্রতিবাদ, বিক্ষোভে ধুন্ধুমার কোচবিহারে। টিকিট না পেয়ে অভিমানে পদত্যাগ করেছেন রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি রাজকমল পাঠকের। আবার বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী সায়ন্তন বসুর বিরুদ্ধে পড়েছে পোস্টার।অসন্তোষ যে আছে, তা কার্যত মেনে নিচ্ছেন রাজ্য নেতৃত্ব। বিক্ষোভ থামাতে তাঁরা বল ঠেলছেন দিল্লির কোর্টে। বলছেন, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের করানো সমীক্ষার ভিত্তিতেই প্রার্থী চূড়ান্ত হয়েছে। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অকপটে স্বীকার করেছেন, ঘোষিত প্রার্থীদের অনেককে তিনি নিজেও চেনেন না।এহেন অবস্থায় কর্মীদের শান্ত করতে শনিবার কলকাতার ন্যাশনাল লাইব্রেরির অডিটোরিয়ামে জরুরি বৈঠকে বসতে চলেছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব৷ সূত্রের খবর, সেখানে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে সমস্ত জেলার সভাপতি ও পর্যবেক্ষকদের৷ থাকবেন রাজ্যের শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও৷

জানা গিয়েছে, উক্ত বৈঠকে প্রতিটি জেলার প্রতিনিধিদের থেকে প্রার্থী সম্পর্কে তাঁদের অভিযোগ শোনা হবে৷ দল কেন ওই ব্যক্তিকে টিকিট দিয়েছে, তা জেলা প্রতিনিধিদের সামনে স্পষ্ট করে তুলে ধরা হতে পারে৷ অবশেষে তাঁদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত৷ দল কোনও প্রার্থী বদল করবে না৷ শুক্রবারই যার খানিকটা ইঙ্গিত দিয়ে দিয়েছেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ৷ তিনি জানান, “অনেকে দলে নতুন এসেছেন। তাঁদের নিয়ে একটু সমস্যা হতেই পারে। এখন দল অনেক বড় হয়েছে। অনেকে প্রার্থী হতে চান। তিন-চারশো আবেদন জমা পড়েছিল। সেখান থেকে বেছে নিতে হয়েছে। কার্যকর্তাদের সঙ্গে কথা বলব। তাঁদের বুঝিয়ে সঙ্গে নিয়ে চলতে হবে। তবে পার্টি যাঁদের প্রার্থী করেছে, সেই সিদ্ধান্ত সকলকেই মানতে হবে। নাহলে বিজেপিতে লোকের অভাব নেই৷’’

দলের একাংশের প্রশ্ন, অর্জুন সিংহ, অনুপম হাজরা, খগেন মুর্মু, সৌমিত্র খাঁয়ের মতো যাঁরা অতি সম্প্রতি বিজেপিতে এসেছেন, তাঁদের নাম গত এক বছর ধরে করানো সমীক্ষায় উঠে এল কী করে? প্রার্থী তালিকা দেখে দলেরই একাংশ বলছে, বিজেপিতে হঠাৎ নেতা হওয়া একজনের হাত ধরে যাঁরা এসেছেন, তাঁদেরকে ‘গুরুত্ব’ দেওয়া হয়েছে। আর ‘গুরুত্ব’ পেয়েছেন রাজনীতিতে ‘অচেনা’ সঙ্ঘের পছন্দের কিছু মুখ। ২৮ বছর ধরে বিজেপিতে আছেন রাজকমল পাঠক । আশা ছিল হুগলি বা শ্রীরামপুরে  টিকিট পাবেন। কিন্তু দল প্রার্থী করল নতুন নেত্রী লকেট চ্যাটার্জি ও দেবজিত সরকারকে। অভিমানে পদত্যাগ করেছেন দিলীপ ঘোষের এই ডেপুটি। নাম ঘোষণা হতেই প্রচারে নেমে পড়েন দুধকুমার মণ্ডল। তবে সেখানে দেখা মেলেনি জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের। দলের বৈঠকেও তীব্র বাদানুবাদে জড়ান দুই নেতার অনুগামীরা।বৃহস্পতিবার প্রার্থী ঘোষণার পরেই ঝামেলা শুরু হয় কোচবিহারে৷ সেখানে জেলা কার্যালয়ে ভাঙচুর করেন কর্মীরা৷ কারণ ওই কেন্দ্রে বিজেপির তরফে প্রার্থী করা হয়েছে তৃণমূল ছেড়ে সদ্য গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়া নিশীথ প্রামাণিককে৷ কিন্তু তাঁকে প্রার্থী মানতে নারাজ জেলা বিজেপির কর্মীরা৷গণ-ইস্তফারও হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা৷পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, তা সামাল দিতে মাঠে নামতে হয়েছে বিজেপির নেতা তথা রাজ্যের সহ-পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেননকে৷ কোচবিহারের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা করেন তিনি৷ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য বলেছেন, ‘‘কিছু অতি বিপ্লবী আছেন। তাঁরা চিৎকার চেঁচামেচি করছেন। দু’একদিনের মধ্যে সব শান্ত হয়ে যাবে।’’

 

Exit mobile version