#কলকাতা: বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে দলীয় নেতা-কর্মীদের কাজে নেমে পড়ার বার্তা দিলেন তৃণমূলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ব্যাপারে একাধিক সাংগঠনিক রদবদলের সঙ্গেই নতুন দু’টি দলীয় সংগঠনের নেতৃত্বও স্থির করে দিলেন তিনি।
লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার শপথ নিয়ে ফেলেছে নতুন মন্ত্রিসভা। তবে ভোটে ব্যবহৃত ইভিএম নিয়ে বিতর্ক রয়ে গিয়েছে এখনও। শুক্রবার দলের কোর কমিটির বৈঠকে ফের ইভিএম কারচুপির অভিযোগ তুললেন তৃণমূলনেত্রী। এ দিন মমতা বলেন, ইভিএম প্রোগ্রামিং আগে থেকেই করা ছিল। তা না হলে ভোটের পরই কী ভাবে বিজেপি বলে দিল, তারা ৩০০ আসন পার করছে। ভোটের ফলাফলেও দেখা গেল প্রায় বর্ণে বর্ণে মিলে গেল তাদের দাবি। তবে এ ভাবে ক্ষমতাগ্রাস করে যে তৃণমূলকে ঠেকিয়ে রাখা যাবে না, সে কথা সজোরে বলেন মমতা। দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, চিন্তা করবেন না। আবার ঘুরে দাঁড়াব। এখন থেকেই কাজে নেমে পড়ুন। আগামী ৭ জুন থেকেই তৃণমূলের জেলা ভিত্তিক কর্মিসভা শুরু হবে। এখন থেকে ভোটার তালিকা নিয়ে কাজ শুরু করবে দল।
এদিন দলের নেতা-মন্ত্রীদের কড়া ক্লাস নিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সুপ্রিমোর রোষের মুখে পড়লেন একাধিক নেতা-মন্ত্রী। আজকের ক্লাসে ‘ব্যাড বয়’ হিসেবে জোর ধমক খেলেন অরূপ বিশ্বাস, গৌতম দেব, বিনয় বর্মন, অজিত মাইতি। নেত্রীর কাছে আজ ‘ধমক’ খেলেন তাঁর প্রিয় ‘কেষ্টও’। অনুব্রত মণ্ডলের কাছে হারের কৈফিয়ত চাইলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হল নদিয়ার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব থেকে। নদিয়া জেলার পর্যবেক্ষক করা হয় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
মমতার কাছের নেতাদের মধ্যে যে কয়েক জনের নাম রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম অরূপ বিশ্বাস। এ দিনের বৈঠকে বকুনি থেকে বাদ রাখলেন না তাঁকেও। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, অরূপের উদ্দেশে মমতা বলেন, “তোর অনেক গুলো জেলার দায়িত্ব ছিল। আমি আগেই বলেছিলাম ভাল করে কাজ কর। শুনিস নি। ওই যাদবপুর আর বর্ধমানের একটা আসন ছাড়া কী করলি! পুরো তো ফেল করে গেলি। কাজটা ভাল করে কর এবার।” উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলার দায়িত্বে ছিলেন ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ মন্ত্রী। দার্জিলিং থেকে বালুরঘাট, সব আসনে হারতে হয়েছে তৃণমূলকে। যদিও উত্তরবঙ্গের দায়িত্ব থেকে অরূপকে সরাননি মমতা। জেলা সভাপতি বদলালেও রাজ্য তৃণমূলের তরফে পর্যবেক্ষক হিসেবে রেখে দিয়েছেন টালিগঞ্জের বিধায়ককেই। মেদিনীপুর নিয়ে ধমক দেন অজিত মাইতিকে। বলেন, “তোমরা কোনও মিটিং কর না। আমি মিটিং করতে চাইছি। তাও বারণ কর তোমরা।” গৌতম দেবের কাছে জানতে চান, “আর কত করব? কী দিচ্ছি না? তাহলে কেন এই ফল?”
এ দিনের বৈঠকে একাধিক সাংগঠিনক রদবদল করেন মমতা। মালদহের দায়িত্ব দেওয়া হয় সাধন পাণ্ডে এবং গোলাম রব্বানিকে। একই সঙ্গে জয় হিন্দ বাহিনীর চেয়ারম্যান করা হয় ব্রাত্য বসুকে। নবগঠিত বঙ্গ জননীর প্রধান হিসাবে মনোনীত করা হয় কাকলি ঘোষদস্তিদারকে। একই সঙ্গে সংখ্যালঘু সেলের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিদ্দিকুল্লা চৌধুরির হাতে।