Site icon The News Nest

ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে হামলাকারী ট্রাম্প সমর্থক, জানা গেল ইশতেহারে

trump 1

নিউজ কর্নার ওয়েব ডেস্ক : শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে গুলি চালিয়ে ৪৯ জনকে হত্যাকারী ব্যক্তিটি অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। সে নিজেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থক বলে উল্লেখ করেছে নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে।
বন্দুক নিয়ে হামলা চালানোর কিছু ক্ষণ আগে ২৮ বছরের অস্ট্রেলীয় ওই নাগরিক ইন্টারনেটে একটি ৩৭ পাতার ইস্তাহারও প্রকাশ করে। সেই ইস্তাহারের লাইনে লাইনে ছিল মুসলিম বিদ্বেষ ঘৃণা আর শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যের চরম মতাদর্শের কথা।সেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যের নয়া প্রতীক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ইস্তাহারটিকে সে প্রকাশ করেছে ‘দ্য গ্রেট রিপ্লেসমেন্ট’ নাম দিয়ে। সেখানে এই মতাদর্শের মাধ্যমে ‘নতুন সমাজ গড়ার লক্ষ্যে পদক্ষেপ’ করার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি অনুপ্রবেশকারী এবং শরণার্থীদেরকেই পৃথিবী জুড়ে সমস্ত সঙ্কটের মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ইউরোপের মাটি থেকে বিদেশিদের তাড়াতে এবং ইউরোপের লক্ষ লক্ষ শ্বেতাঙ্গ মানুষকে দাসত্ব থেকে মুক্ত করার কথাও বলা হয়েছে এই ইস্তাহারে। শ্বেতাঙ্গ আধিপত্য নিয়ে একটি স্লোগানও দেওয়া হয়েছে এই ইস্তাহারে। বলা হয়েছে, ‘আমাদের নিজেদের মানুষদের অস্তিত্বের বিষয়টি আমাদেরকেই দেখতে হবে। কারণ, আমাদের শ্বেতাঙ্গ শিশুদের ভবিষ্যত আমাদেরই হাতে।’
অভিবাসীবিদ্বেষী হামলাকারী তার পোস্টে বলেছে,’ হামলা করে অভিবাসীদের দেখাতে চাই যে, আমাদের ভূমি কখনও তাদের ভূমি হবে না। যতক্ষণ শ্বেতাঙ্গরা জীবিত থাকবেন।’ হামলার সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভে ছিলেন হামলাকারী। ১৭ মিনিট ধরে ওই হামলার লাইভ ভিডিও প্রচারিত হয়। ধারণা করা হচ্ছে হামলাকারী ক্যামেরাটা তার মাথার সঙ্গে বেঁধে রেখেছিলেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আরও দুই শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাসবাদীর প্রশংসাতেও পঞ্চমুখ হয়েছে সে।লাইভ ভিডিয়ো থেকে দেখা যায়, তার বন্দুকে লেখা আছে আলেসান্দ্রে বিসনেত্তা এবং লুকা ত্রাইনির নাম। ২০১৭ সালে কানাডাতে একটি মসজিদে হামলা চালিয়ে ছয় নিরপরাধকে হত্যা করেছিল আলেসান্দ্রে বিসনেত্তা। ২০১৮ সালে ইতালিতে আসা শরণার্থী আফ্রিকানদের উপর গুলি চালিয়েছিল লুকা ত্রাইনি।এর থেকেই স্পষ্ট, কৃষ্ণাঙ্গ এবং মুসলিম বিদ্বেষই  ছিল এই শ্বেতাঙ্গ বন্দুকবাজের মতাদর্শের মূল কথা।কৃষ্ণাঙ্গ এবং মুসলিম বিরোধী ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হলেও কোনও দলের সঙ্গে সে যুক্ত নয়, এমনটাই জানানো হয়েছে তার ইস্তাহারে। এমনকি নিজের কাজের জন্য তার কোনও অনুশোচনা থাকবে না বলেও জানিয়েছে এই বন্দুকবাজ।

প্রাথমিক তদন্তে জানা যাচ্ছে, এই অস্ট্রেলীয় নাগরিক বেশ কিছু দিন ধরেই ঘাঁটি গেড়েছিলেন নিউজিল্যান্ডে। কিন্তু নিউজিল্যান্ড পুলিশের সন্দেহভাজনদের তালিকায় তিনি ছিলেন না।  সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কিছু দিন ধরে চরমপন্থী মতাদর্শের কথা প্রচার করলেও তাকে কেন নজরদারির তালিকায় রাখা হয়নি, তা নিয়ে সরব হয়েছে নিউজিল্যান্ডের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি।

Exit mobile version