ক্রাইস্টচার্চে গুলিতে ঝাঁজরা স্ত্রী, আততায়ীকে ক্ষমা করলেন পঙ্গু ফরিদ

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

নিউজ কর্নার ওয়েব ডেস্ক : আতঙ্ক এখনও তাড়া করে বেড়াচ্ছে নিউজ়িল্যান্ডকে। শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চের দু’টি মসজিদে শ্বেত সন্ত্রাসের বলি হন অন্তত ৫০ জন। শুক্রবারের প্রার্থনা সারতে মসজিদে এসেছিলেন বাংলাদেশ থেকে আসা ৫৯ বছরের ফরিদ আহমেদ।  স্বামীকে বাঁচাতে সে দিন আল নুর মসজিদে ছুটে যান ৪৪ বছরের হুসনা আহমেদ। ঢুকতে না ঢুকতেই ছুটে আসে গুলি। লুটিয়ে পড়েন হুসনা।

তারপরেও বন্দুকবাজ ব্রেন্টন ট্যারান্টকে ক্ষমা করে দিতে চান হুসনার স্বামী ফরিদ আহমেদ। বলতে চান, ক্ষমাই পরম ধর্ম। ক্ষমা করেই এগিয়ে যেতে পারে মানুষ। ফরিদ বলেন, “আমি ওকে বলব, তোমার মধ্যেও একজন অসাধারণ মানুষ হওয়ার ক্ষমতা আছে ব্রেন্টন। এমন একজন মানুষ যে মানুষকে মারার বদলে, তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। মনুষ্যত্বে বিশ্বাস করা ক্ষমাশীল, দয়ামায়ায় পূর্ণ একজন মানুষ।” বন্দুকবাজ হিংস্র জঙ্গি ব্রেন্টন যাতে জীবনের প্রকৃত পথ খুঁজে পায়, তার জন্য প্রার্থনা করবেন বলেও জানাচ্ছেন ফরিদ।

    1552726642874হুসনা আহমেদ

উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সালে স্বামীর সাথে নিউজিল্যান্ডে পাড়ি জমান সিলেটের বিশ্বনাথের হুসনা আহমেদ। ১৯৯৮ সালে ফরিদকে পিষে দিয়েছিল এক মদ্যপ ড্রাইভার। সেই থেকে হুইলচেয়ারেই আবদ্ধ ৫৯ বছরের ফরিদের জীবন। স্ত্রী হুসনাই ছিলেন তাঁর একমাত্র বল ভরসা।ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘গুলির ঘটনা শুরু হতেই আমি হতভম্ব হয়ে পড়ি। সবাই চার দিকে ছোটাছুটি শুরু করেন। আমি হুইল চেয়ারে বসে মৃত্যুর জন্য প্রতীক্ষা করতে থাকি।আমি ভাবছিলাম আমার স্ত্রীর কথা, ভাবছিলাম সে নিরাপদে বের হতে পারল কি না। কেননা আমার পক্ষে তো ওই অবস্থায় বের হওয়ার কোনো আশাই ছিল না। হঠাৎ দেখি আমার স্ত্রী এসে আমাকে বের করে নিয়ে যাচ্ছে। সে দ্রুত আমাকে নিরাপদ দূরত্বে নিয়ে বলল তুমি এখানে থাকো, আমি আটকে পড়া মহিলা ও শিশুদের বের করার চেষ্টা করি। এ কথা বলে সে আবার মসজিদে প্রবেশ করল। ইতোমধ্যে আবার শুরু হয়েছে বন্দুকধারীর তাণ্ডব।’ তারপরও ফরিদ আশায় ছিলেন, হয়তো তাঁর স্ত্রী বেঁচে যাবে। কিন্তু সে আশা সফল হয়নি। পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিহতদের একটি ছবির মধ্যেই দেখতে পান স্ত্রী হুসনাকে। বুঝতে পারেন হুসনা আর নেই।

    RBHD632PX5FYLGVPBA3WFXCXHQস্ত্রীর ছবিটুকুই এখন আশ্রয় ফরিদ আহমদের

রবিবার নিউ জিল্যান্ডবাসী বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়েছে নিহতদের প্রতি। ফরিদ আহমেদ হামলাকারী সম্পর্কে বলেন,”আমি সত্যিই তাকে ক্ষমা করে দিয়েছে। আমার মনে হয় তার জীবনে কোনো কালো অধ্যায় আছে। হয়তো সে কখনো কারো ভালোবাসা পায়নি। আমি তাকে ঘৃণা করতে পারি না, সত্যিই পারি না। হুসনা যা চাইত, আমিও তা-ই চাই। আর তা হচ্ছে ক্ষমা, আমি তাকে ক্ষমা করে দিয়েছি।”

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest