নিউজ কর্নার ওয়েব ডেস্ক: নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে হামলায় মৃত্যু হয়েছে পাঁচ প্রবাসী ভারতীয়ের। রবিবার একথা টুইটারে জানিয়েছে নিউজিল্যান্ডের ভারতীয় দূতাবাস। মৃত ভারতীয়দের নামের তালিকাও প্রকাশ করেছে দূতাবাস। মৃতরা হলেন— মেহবুব খোখর, রামিজ ভোরা, আসিফ ভোরা, ওজাইর কাদির এবং কেরলের ২৫ বছরের যুবতী অ্যান্সি আলিবাভা।
এছাড়া ভারতীয় বংশোদ্ভূত ফরহাজ আহসানেরও মৃত্যু হয়েছে বলে রবিবার হায়দরাবাদ থেকে জানিয়েছে তাঁর পরিবার। জখম ৩৬ জনের মধ্যেও দুজন ভারতীয় এবং দুজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত রয়েছেন। শনিবারই দূতাবাস দুজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত সহ নয়জন প্রবাসী ভারতীয় নিখোঁজ আছেন বলে জানিয়েছিল। তাঁদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগও রাখা হচ্ছিল বলে জানিয়েছিল দূতাবাস।
শুক্রবার সাপ্তাহিক নামাজে র সময় নিউজিল্যান্ডের দুই মসজিদে হামলা চালায় শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাসবাদী। এই হামলায় এখনও পর্যন্ত ৫০ জনের প্রাণ গিয়েছে। ভারতীয়দূতাবাস থেকে এদিন টুইটারে আরও জানানো হয়েছে, নিউজিল্যান্ড সরকার মৃত প্রবাসীদের আত্মীয়দের জন্য দ্রুত এবং বর্ধিত ভিসার ব্যবস্থা করেছে। যাতে মৃত আত্মীয়দের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে তাঁরা কোনওরকম অসুবিধার সম্মুখীন না হন। হেল্পলাইন নম্বরও টুইটারে দিয়েছে দূতাবাস। নম্বর টি হল, ০২১৮০৩৮৯৯ এবং ০২১৮৫০০৩৩।নম্বর দুটি সব সময় খোলা থাকবে, যে কোন সময় পরিবারের লোকজন এই নম্বরে যোগাযোগ করে খোঁজখবর নিতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে।
ভারতীয় হাইকমিশনের পক্ষ থেকে টুইট করে বলা হয়েছে,”নির্দোষ এই ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের এমন মৃত্যুতে আমরা শোকাহত।” হাইকমিশন এ ও বলেছে কমিউনিটি লিডাররা চাইলে আমাদের মাননীয় কনসালের নম্বরেও যোগাযোগ করতে পারেন। এই নাম্বারটি হল ০২১৫৩১২১২।
শনিবার এই হামলার সন্ত্রাসী ব্রেন্টন ট্যারান্টকে নিউ জিল্যান্ড আদালতে তোলা হয়। আদালতে নির্বিকার ছিল সে। ক্যামেরাম্যানদের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসতেও দেখা যায় তাকে। চোখে মুখে ছিল না অনুতাপের কোন ছবি। সে নিজেকে আগেই ট্রাম্প ভক্ত বলে উল্লেখ করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিমদের প্রতি ট্রাম্প যে মনোভাব প্রকাশ করেন এই জঙ্গী তাকে সার্বিকভাবে সমর্থন করে বলে নিজের ইস্তেহারে জানিয়েছে ট্যারান্ট।
তার ধারণা, ট্রাম্প আসলে শ্বেতাঙ্গদের প্রতিনিধি। অশ্বেতাঙ্গ সকলেই শ্বেতাঙ্গদের অধীনে কাজ করবে।তাদের আত্মমর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকার কোন অধিকার নেই। এরকম বর্বরোচিত ধারণা পোষণ করে এমন জঙ্গী কেবল নিউ জিল্যান্ড বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নয় এই ধরনের সংকীর্ণতা ও বিদ্বেষ মানসিকতা ছড়াচ্ছে গোটা বিশ্বে। দেশের দিকে তাকালেও দেখা যাবে গেরুয়া শিবিরের একটা অংশ নিজেদের মতাদর্শ অন্যের উপর চাপিয়ে দেওয়ার নিরন্তর চেষ্টা চালাচ্ছে। তার বিরোধিতা করলেই দেশদ্রোহী বলে দেগে দেওয়ার চেষ্টা করছে। অযথা বিদ্বেষ ও ঘৃণা ছড়াচ্ছে ধর্মের ও জাতপাত এর নামে। মুশকিল হল যখন এই ধরনের লোকেরা বিশেষ রাজনৈতিক দলের ছায়ায় আশ্রয় পায়, তখন তারা আরও প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে। মোদী জমানায় গো-রক্ষকরা তার উল্লেখযোগ্য নিদর্শন।