ইসলামাবাদ : নিজের নামের উপর থেকে জঙ্গি তকমা সরাতে রাষ্ট্রপুঞ্জে আবেদন করেছিল লস্কর-ই- তৈবা প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ সাঈদ। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপুঞ্জ সাফ জানিয়ে দিল নিষিদ্ধ জঙ্গি তালিকা থেকে ব্যাড দেওয়া হবে না হাফিজের নাম। কৌশলে এই জঙ্গি তকমা ঝেড়ে ফেলতে জামাত-উদ- দাওয়া নামক সংগঠন বানিয়েছিল হাফিজ। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দীতায়ও করেছিল। বিশ্বকে বোঝাতে চেয়েছিল সে আর জঙ্গি সংগঠনের লোক নয়। ইতিমধ্যেই তার দল জামাত-উদ- দাওয়াকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে পাকিস্তান সরকার।
১৯৯৭ সালের সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী ঠিক দু’দিন আগে হাফিজ সইদের জমাত-উদ-দাওয়া এবং ফালহা-ই-ইনসানিয়তকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে পাকিস্তান সরকার। আরও জানা যাচ্ছে, কয়েকদিন আগেই জামাত-উদ-দাওয়ার কাজকর্মের নানা প্রমাণ এবং ‘অত্যন্ত গোপনীয় নথিপত্র’ রাষ্ট্রসংঘের হাতে তুলে দিয়েছে ভারত। এরপরই বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রসংঘের এই সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে এল।
সূত্রের খবর, পাকিস্তানে গৃহবন্দি থাকাকালীন ২০১৭ সালে লাহৌরের মির্জা অ্যান্ড মির্জা আইনি সংস্থার মাধ্যমে রাষ্ট্রপুঞ্জের দ্বারস্থ হয়েছিল হাফিজ সইদ। তার গায়ের উপর আন্তর্জাতিক জঙ্গি হিসাবে যে তকমা সেঁটে দেওয়া হয়েছে, তা হঠানোর আর্জি জানিয়েছিল। রাষ্ট্রপুঞ্জে এই ধরনের আবেদন খতিয়ে দেখার দায়িত্ব নিরপেক্ষ জনপ্রতিনিধি ড্যানিয়েল কিপফার ফাসিয়াতি-র। হাফিজ সইদের আবেদনটিও পর্যালোচনা করে দেখার দায়িত্ব পান তিনি। হাফিজের বিরুদ্ধে ভারতের দেওয়া সমস্ত নথিপত্র খতিয়ে দেখেন তিনি। যার পর চলতি সপ্তাহের শুরুতে হাফিজের আইনজীবী হায়দর রসুল মির্জাকেতিনি রাষ্ট্রপুঞ্জের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন বলে সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে। ড্যানিয়েল জানান, ‘‘হাফিজের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া গেল না। আগের মতোই নিষিদ্ধ তালিকায় নাম নথিভুক্ত থাকবে তার।’’তবে আরও আগেই এই সিদ্ধান্ত নিতে পারত রাষ্ট্রপুঞ্জ। হাফিজের আবেদন জমা পড়ার ছ’মাসের মধ্যেই। কিন্তু মাঝখানে নিরপেক্ষ জনপ্রতিনিধির বদল ঘটে। তাই সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগল।
উল্লেখ্য, হাফিজ সইদকে নিষিদ্ধ জঙ্গির তকমা দেওয়ার ক্ষেত্রে ভারত ছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ফ্রান্স সমর্থন জানিয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তানের মদতে বারবার তাতে বাগড়া দিয়েছ চিন। এদিকে,কাশ্মীরের পুলওয়ামায় হামলার পর জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহারকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার দাবি যখন প্রবলভাবে মাথাচাড়া দিয়েছে, তখনই হাফিজ সইদকে নিষিদ্ধ তালিকায় রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত রীতিমতো তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।