জিডি বিড়লা স্কুলের ছাত্রী কৃত্তিকার মৃত্যুর কারণ উঠে এল ময়নাতদন্তের রিপোর্টে, সুইসাইড নোট নিয়ে ধন্ধে পুলিশ

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

#কলকাতা: প্লাস্টিকে শ্বাসরোধ হয়েই মৃত্যু হয়েছে জিডি বিড়লা স্কুলের দশম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী কৃত্তিকার। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে উঠে এল এই তথ্য।

গত শুক্রবার স্কুলের শৌচালয় থেকে উদ্ধার হয় কৃত্তিকার রক্তাক্ত দেহ। নিজেই হাতের শিরা কেটেছিল কৃত্তিকা। ডান হাতের আঙুলে জোর কিছু চেপে ধরার দাগ রয়েছে। কোনও ধারালো, তীক্ষ্ম কিছুকে জোরে চেপে ধরলে এ ধরনের দাগ হয়ে থাকে। পাশাপাশি মুখ ঢাকা ছিল প্লাস্টিকে।

শুক্রবার ক্লাস চলাকালীন ১:৪৫ নাগাদ শৌচাগারে গিয়েছিল ওই ছাত্রী। প্রায় আধঘণ্টা ছাত্রীকে দেখতে না পাওয়ায় সন্দেহ হয় শিক্ষিকাদের। এরপর স্কুলের শৌচাগার থেকে উদ্ধার হয় তাঁর মৃত দেহ। প্লাস্টিকে ঢাকা ছিল মুখ। দেহের পাশেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছিল ব্লেড, রক্তে মাখা পেন, তিন পাতার সুইসাইড নোট। রক্তে ভেসে যাচ্ছিল শৌচাগারের মেঝে। স্কুলের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে জানা গিয়েছে, ঘটনার কিছুক্ষণ আগেও সহপাঠীদের সঙ্গে হেসেই কথা বলছিল সে, স্বাভাবিক ছিল তাঁর আচরণ। এরপর পঞ্চম পিরিয়ড শেষ হতেই সে তাঁর সহপাঠীদের বলে তাঁর মাথা যন্ত্রণা করছে, তাই সে সিক রুমে যাচ্ছে। কিন্তু ১:২৯-এ সিক রুমে যাওয়ার বদলে সে সোজা বাথরুমে চলে যায়।

ষষ্ঠ পিরিয়ডে শিক্ষিকা তাঁর খোঁজ করলে, সহপাঠীদের থেকে জানতে পারেন সে সিক রুমে। শেষ হয়ে যায় ষষ্ঠ পিরিয়ডও। সপ্তম পিরিয়ডে ফের তাঁর খোঁজ পড়ে। এরপর শুরু হয় খোঁজ। গোটা স্কুল খুঁজে ফেলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। শেষে তাঁকে খুঁজতে যাওয়া হয় স্কুলের শৌচালয়ে। বন্ধ দরজার ওপর থেকে দেখা যায় শৌচালয়ের মেঝেতে  রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে কৃত্তিকা। প্রতিবেশীরা বলছেন, শান্ত ও চাপা স্বভাবের ছিল কৃ্ত্তিকা। কম কথা বলত। বাবা-মা ছাড়া কোনও বন্ধু-বান্ধব বা তৃতীয় কোনও ব্যক্তির সঙ্গে দেখা যায়নি তাঁকে। নাচ-গান-আঁকাতেও মন ছিল তাঁর। স্কুলে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিত। এহেন মেধাবী, কৃতী ছাত্রীর আত্মহত্যার কারণ নিয়ে এখনও ধন্দে পুলিস।

কিন্তু যে ভাবে এই আত্মহত্যা, এবং আত্মহত্যার আগে যে ভাবে ঠান্ডা মাথায় তিন পাতার চিঠি লিখে গিয়েছে কৃত্তিকা, তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা তাতে রীতিমতো বিস্মিত। চিঠিতে কৃত্তিকা কাউকে দায়ী করে যায়নি। কিন্তু চিঠিতে তাঁর মনের ক্ষোভ, অসন্তোষ, অভিমান প্রকাশ হয়েছে বার বার। এর মধ্যেই চিঠির একটা লাইন বড় ধাঁধায় ফেলেছে পুলিশকে। কৃত্তিকা লিখেছে, ‘…আই লভ ইউ কে (K), ডোন্ট ফরগেট মি…’। কারও নামের আদ্যক্ষর বলেই মনে হয়। কিন্তু কে এই ‘কে’? এই ‘কে’র সঙ্গে কি তার মৃত্যুর কোনও সম্পর্ক রয়েছে? এই ‘কে’র সঙ্গে কৃত্তিকার সম্পর্কই বা কী ছিল? কৃত্তিকার নিজের নামের আদ্যক্ষরও ‘কে’। তবে কি মৃত্যুর আগে নিজের সঙ্গেই নিজে এমন নিঠুর পরিহাস করে গেল সে? তদন্তকারীদের কাছে এখনও এর উত্তর একেবারেই স্পষ্ট নয়। এক পুলিশ অফিসারের বক্তব্য, “আত্মহত্যার ধরন এবং উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোট দেখে মনে হচ্ছে, সে এতটাই মনোকষ্টে ভুগছিল, যে করে হোক মৃত্যু নিশ্চিত করতে চেয়েছিল। নিজে থেকে প্লাস্টিক জড়িয়ে মারা যাওয়ার বিষয়টিও খুবই বিরল।”

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest