জিততে হলে মুসলিম প্রার্থী কমাও, এখন ডান-বাম সবার স্ট্র্যাটিজি সেটাই !

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

এস এ মাসুদ

মুসলমানকে রাজনৈতিকভাবে প্রান্তিক করে দেবার ছক বহু দিনের। বিজেপির কথা বাদ। কারণ জয় শ্রীরাম বলে রণহুংকার দিয়ে মুসলিমানকে ভয় দেখানো তার পবিত্র কর্তব্য। অন্য ধর্ম নিরপেক্ষ দলগুলিও মুসলমান রাজনৈতিক প্রতিনিধি চাইছে না। যারা রাজনীতির রণকৌশল বানান, তাদের বক্তব্য এখন যা পরিস্থিতি, তাতে হিন্দু এলাকায় মুসলিম প্রার্থীর জয়ী হবার চান্স খুব কম। তবে কি মুসলিম এলাকাগুলিতে মুসলিম প্রার্থী দেওয়া যেতে পারে ? সেখানেও ছক। সেই কংগ্রেস জমানা থেকেই মুসলিমদের দাপট কমাতে বহু মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চল তপশিলি সংরক্ষিত করে দেওয়া হয়েছে।ফলে মসুলিমকে ভোট দিতে হলে কোনও না কোনও তপশিলি জাতি বা উপজাতির প্রার্থীকে ভোট দিতে হবে। এটাই দস্তুর।

আরও পড়ুন: প্রার্থী ঘোষণার আগেই আরও এক তারকা যোগ, তৃণমূলে নাম লেখালেন সায়ন্তিকা

হিন্দুরা আজও মুসলিমদের বাড়ি ভাড়া দিতে আগ্রহী নয়। তাহলে তারা কেন মুসলিমদের ভোট প্রার্থী করার ব্যাপারে আগ্রহী হবে? আসলে একটা বড় সংখ্যক হিন্দুর সংকীর্ণ মানসিকতাকে ভোট কুশলীরা কাজে লাগাতে চাইছে। সেই মানসিকতাকে কাজে লাগানোর অৰ্থ মুসলিমদের রাজনৈতিকভাবে প্রায় অবলুপ্ত করে দেওয়া। একথা অস্বীকারের কোনও উপায় নেই যে মুসলিমদের রাজনৈতিক ক্ষমতা বৃদ্ধি কোনও দলই ভাল চোখে দেখে না। সব দলই মুসলিম নেতাদের তেজপাতা হিসাবে ব্যবহার করতে চায়। মুসলিম জনসংখ্যা যদি বলার মত না হত, তাহলে কোনও দলই মুসলিমদের ব্যাপারে আগ্রহী হত না। আজকে মুসলিম নেতারা টিকে রয়েছেন কেবল মুসলিম সংখ্যার কারণে। সাংগঠনিক দক্ষতা, কিংবা দলের প্রতি দায়বদ্ধতার কারণে নয়।

বহু হিন্দু আজও মনে করেন, মুসলিমরা বিদেশী। তারা এদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে। এবার তার বদলা নেবার সময়। রাজনীতিতে সুযোগ দিলে ওরা আবার মাথায় উঠবে। তাই ইন্ডিয়ান ক্রিকেট টিমে যেভাবে দু’জন কিংবা একজন ক্রিকেটারকে রাখা হয়, রাজনৈতিক দলেও সেই ফর্মুলা ব্যবহার করতে হবে। তাদের মাথায় চড়তে দেওয়া হবে না। বিজেপির নামে মুসলমানরা বাপান্ত করলেও, আসেল বাম-ডান সব দলের নীতি এক্ষেত্রে এক। মসুলমানকে কাজে লাগাও। ভয় পাওয়াও। তাদের নিরাপত্তা দেবার ভান কর। ধর্ম নিরপেক্ষতার কথা বলে তাদের ভোট দখলের মতলব খোঁজো। কিন্তু তাদের রাজনৈতিকভাবে মাথায় তুল না। খুব বেশি হলে নিজেদের এলাকায় ওই সংখ্যালঘু নেতাকে সীমাবদ্ধ রাখ। সেইখানেই তিনি লম্ফ-ঝম্ফ করুন। তার সব ক্ষমতা ওই বিশেষ এলাকায় সীমাবদ্ধ করে রাখ। রাজনেতা নয় তাকে খানিকটা ডন টাইপ করে তোল। মিডিয়া সে কাজটা দক্ষতার সঙ্গে আগে থেকেই করে এসেছে। আজও করে আসছে।

মুসলিমরা মূল স্রোতের রাজনীতিতে জায়গা না পেলে, কিংবা জায়গা পেলেও টিকিট না পেলে, তারা নিজেদের দল গঠনের দিকে ঝুঁকবে। সেটাই স্বাভাবিক। আর সেই কাজ করতে গিয়ে তারা মুসলিমদের সহানুভূতি পেতে সজোরে কেবল মুসলিমের কথা বলবে। তার মধ্যে কিছু বাস্তব কথা থাকবে, কিছু কাল্পনিক। কিন্তু সাধারণ মুসলিম এই নেতাদের ওপর আস্থা রাখবে। তারা বলবে আর যাই হোক তাদের কথা তো অনন্ত কেউ বলছে। এইভাবে মূল স্রোতের রাজনীতি থেকে প্রান্তিক হয়ে যাওয়া মুসলিম নেতারা নিজেদের দল গড়ার দিকে ঝুঁকবে। বিদ্বেষী বিজেপিকে টক্কর দিতে নরম হিন্দুত্ববাদী দলগুলি দিন দিন ব্যর্থ হবে। ফলে স্বাভাবিক কারণেই কট্টর হিন্দুত্বের মোকাবিলা করতে আসবে কট্টর মুসলিম পার্টি। যেভাবে দেশের রাজনীতি এগোচ্ছে তাতে এমন দিন আসতে বেশি সময় লাগবে না।

আজলকাল যেমন বহু গুরুত্বপূর্ণ খবরকে চেপে যাওয়া হয়। মিডিয়ার দাবি এখন নাকি বিক্রি হয় বিনোদন ও লাইফস্টাইলের খবর। বিক্রি হয় গসিপ। সিরিয়াস খবর লোকে পড়ে না। কিন্তু এটা মিডিয়ার কাজ নয়। নেশার জিনিসের বাজার চিরকাল ভারী। কিন্তু তাই বলে খাবারের বিকল্প নেশার জিনিস হতে পারে না। মিডিয়াকে সেটা মাথায় রাখতে হবে। তেমনই মুসলিম প্রার্থী হিন্দু এলাকায় জিততে পারবেন না, এই মানসিকতা ছাড়তে হবে। এটি আরএসএসের মানসিকতা। যা ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়ছে ধর্ম নিরপেক্ষ বলে দাবি করা নরম হিন্দুত্ববাদী দলগুলিতে। সংঘ চাইছে এমন পরিস্থিতি তৈরী করতে যাতে লড়াই হোক হিন্দু বনাম মুসলিমের মধ্যে। হিন্দুরা সংখ্যাগুরু। অঙ্কের হিসাবেই তারাই ভোট জয়ী হবে। আরএসএসের এই মানসিকতা যখন অন্য তথাকথিত ধর্ম নিরপেক্ষ দলগুলিতে ছায়া ফেলা সেটা উদ্বেগজনক। আর সেটাই ভাবাচ্ছে সচেতন দেশবাসীকে।

আরও পড়ুন: শিবরাত্রির দিন নন্দীগ্রামে মনোনয়ন জমা দিতে পারেন মমতা, তৃণমূলের প্রথম তালিকাতেই থাকবে নাম

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest