নয়াদিল্লি: ‘জয় শ্রীরাম’ বিতর্কে মোদীকে পত্রাঘাত করেছিলেন ৪৯ জন বিদ্বজ্জন। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন আন্তর্জাতিক স্তরে প্রশংসিত চলচ্চিত্র পরিচালক আদুর গোপালকৃষ্ণন। তাঁর ‘জয় শ্রীরামে’ আপত্তির কথা জেনে বিজেপির মুখপাত্র তাঁকে চাঁদে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। প্রত্যুত্তরে ৭৮ বছর বয়সি প্রবীণ চলচ্চিত্র পরিচালক তাঁকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “তা হলে আমার টিকিটটা বুকিং করে দিন”।
উল্লেখ্য, অসহিষ্ণুতা, জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিয়ে গণপিটুনির মতো ঘটনা উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীকে খোলা চিঠি দিয়েছিলেন ৪৯ জন বিদ্বজ্জন। এর মধ্যে রয়েছেন অপর্ণা সেন, সৌমিত্র চট্টপাধ্যায়, কৌশিক সেনদের মতো বুদ্ধিজীবীরা।
গত বৃহস্পতিবার বিজেপি নেতা তথা দলের মুখপাত্র বি গোপালকৃষ্ণন চলচ্চিত্র পরিচালককে উদ্দেশ্য করে ফেসবুকের একটি পোস্টে লিখেছেন, “যদি ‘জয় শ্রীরাম’ শুনতে ভালো না লাগে, তা হলে দয়া করে শ্রীহরিকোটায় নিজের নাম তালিকাভুক্ত করে চাঁদে চলে যান”। তাঁকে একজন শ্রদ্ধেয় চলচ্চিত্র পরিচালক হিসাবে উল্লেখ করেও নিজের নামটাও বদলে নেওয়ার পরামর্শ তিনি দিয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, আদুর দেশের সংস্কৃতিকে অপমান করছেন।
শুক্রবার এনডিটিভিতে একটি সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে আদুর গোপালকৃষ্ণন বলেন, “আমি ওই অফারে (চাঁদে যাওয়ার) খুবই আগ্রহী হয়ে উঠেছি। চাঁদ সম্পর্কে আমার অনেক জিজ্ঞাস্য রয়েছে। তাই আমি চাঁদে ঘুরতে যেতে চাই। কিন্তু তিনি যদি আমাকে চাঁদে যাওয়ার একটা টিকিট বুক করে দেন, সঙ্গে হোটেলটাও বুক করে দেন”।
জয় শ্রীরামের মতো একটি ভাবগম্ভীর বিষয় নিয়ে আদুর বলেন, “আমি এ ধরনের প্রতিক্রিয়া আশা করিনি। আমিও একজন বিশ্বাসী। আমি ছোটো বেলা থেকে রামকে এক জন মহান সত্তা হিসাবে দেখে এসেছি। রামের মাহত্ম্য শুনেই বড় হয়েছি। আর সেই রামের স্লোগানকে গণপিটুনিতে ব্যবহার করা উদ্বেগজনক। আগামী দিনে এই প্রবণতা ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করতে পারে।আমরা যারা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশে লেখা চিঠিতে স্বাক্ষর করেছি, তাঁরা মনে করি, রাম নামের এই অপব্যবহার বন্ধ করা উচিত। এটাকে মানুষ পেটানোর, মানুষকে হত্যার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে”।
এই চিঠিতে চাপান-উতর তৈরি হয় দেশজুড়ে। পালটা কঙ্গনা রাওয়াত, প্রসূন জোশী-সহ ৬২ বিশিষ্ট জন। অপর্ণাদের একহাত নিয়ে তাঁদের কটাক্ষ, বিশেষ ক্ষেত্রে প্রতিবাদ, অপব্যাখ্যা এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাঁরা এমন কিছু ঘটনা উল্লেখ করে প্রশ্ন তোলেন, অপর্ণা সেনারা কেন এ বিষয়ে মুখ খোলেননি। বিশিষ্টজনেদের ওই চিঠি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষের কাছে অনুরোধ, ওই খোলা চিঠিকে যেন একটা ‘গেম’ হিসাবে দেখা না হয়। এটা কোনো গেম নয়। এখানে উদ্রেগ রয়েছে, চলুন না সমস্যা সমাধানে একটা সদর্থক পদক্ষেপ নিই আমরা”।