ঝাড়খণ্ডে গণপিটুনি আমাকে ব্যথিত করেছে, তবে রাজ্যকে দোষারোপ অনুচিত, রাজ্যসভায় বললেন প্রধানমন্ত্রী

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

#নয়াদিল্লি: ঝাড়খণ্ডের সাম্প্রতিক গণপ্রহার কাণ্ডে বুধবার প্রথমবার মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর বক্তব্য, সেরাজ্যে এক মুসলিম যুবককে চোর সন্দেহে গণপ্রহার করার ঘটনা তাঁকে ব্যথিত করেছে, তবে এর ভিত্তিতে গোটা রাজ্যকে অপমান করা অন্যায়।

বিরোধীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, আসল ইস্যু থেকে সরে গিয়ে দেশপ্রেম এবং জাতীয়তাবাদের ধুঁয়ো তুলে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে বিজেপি। এমনকী লোকসভায় রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের জবাবি ভাষণেও মোদী মানুষের ইস্যু নিয়ে কথা বলেননি বলে অভিযোগ করছিল বিরোধীরা। বুধবার রাজ্যসভায় রাষ্ট্রপতির ভাষণের জবাবি ভাষণে সেই সব অভিযোগ ধুলিস্যাৎ করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী। একে একে গণপিটুনি, এনসেফালাইটিসে শিশুমৃত্যু থেকে শুরু করে দেশব্যাপী খরার প্রকোপ সব ইস্যুতেই মুখ খুললেন তিনি।

মঙ্গলবার লোকসভায় জরুরি অবস্থা নিয়ে কংগ্রেসকে আক্রমণ করে মোদী বলেছিলেন, ২৫ জুন দেশের আত্মাকে পিষে মারা হয়েছিল। পরের দিন বুধবার ছিল রাজ্যসভায় প্রধানমন্ত্রীর জবাবি ভাষণ। ঝাড়খণ্ডে জোর করে জয় শ্রীরাম বলানো এবং গণপিটুনিতে যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। কিন্তু এ জন্য গোটা রাজ্যকেই কাঠগড়ায় তোলা উচিত নয়।’’ এর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘ঝাড়খণ্ডের গণপিটুনির ঘটনা আমাকে ব্যথিত করেছে। আমি দুঃখ পেয়েছি। কিন্তু রাজ্যসভার কিছু সদস্য ঝাড়খণ্ডকে গণপিটুনির হাব বলে মন্তব্য করেছেন। এটা কি ঠিক? ওঁরা কেন একটা রাজ্যকে অপমান করছেন? ঝাড়খণ্ডকে এ ভাবে অপমান করার অধিকার আমাদের কারও নেই। দেশের প্রতিটি নাগরিককে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। রাজনীতির চশমা সরিয়ে দেখলেই আমরা উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখতে পাব।’’

বিহারে কার্যত মহামারির আকার নিয়েছে এনসেফ্যালাইটিস। দেড় শতাধিক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বিহারে ক্ষমতায় বিজেপি এবং জেডিইউ-এর জোট তথা এনডিএ-র সরকার। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। এনসেফ্যালাইটিস নিয়ে রাজ্যসভায় বিহার সরকার এবং কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ করে বিরোধীরা। রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। এ দিন জবাবি ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘এনসেফ্যালাইটিসে মৃত্যু দুর্ভাগ্যজনক ও লজ্জাজনক। এই ঘটনা আজ বিহারে ঘটছে, কাল অন্য রাজ্যেও ঘটতে পারে।’’ টিকাকরণ-সহ প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার খুঁটিনাটি সম্পর্কে সাধারণ মানুষের সচেতনতার উপরও জোর দেন প্রধানমন্ত্রী।

লোকসভার মতো রাজ্যসভাতেও কংগ্রেসকে বার বার নিশানা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ইভিএম-এ কারচুপির অভিযোগ নিয়ে সংসদেও সরব বিরোধীরা। তা নিয়ে এ দিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘এই হাউসে অনেকেই ইভিএম ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন। আমি তাঁদের বলতে চাই, একটা সময় ছিল যখন আমরা মাত্র দু’জন সাংসদ ছিলাম। গোটা সংসদ আমাদের উপহাস করত। কিন্তু আমরা কঠিন পরিশ্রম করেছি এবং মানুষের আস্থা অর্জন করেছি। কিন্তু আমরা কখনও পোলিং বুথ নিয়ে অভিযোগ তুলিনি। গত শতাব্দীর পাঁচের দশকে ভোট করতে দীর্ঘ সময় লাগত। কিছু এলাকায় বুথ দখল, রিগিং— এ সব ছিল পরিচিত দৃশ্য। কিন্তু এখন ভোটের হার বাড়ছে। এটা সুস্থ লক্ষণ।’’

দেশবাসীর ভাবাবেগের প্রশ্ন তুলে বিরোধীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘ভোটের ফল নিয়ে প্রশ্ন তোলার অর্থ দেশবাসীকে অপমান করা।’’ মোদী আরও বলেন, ‘‘ইভিএম নিয়ে যাঁরা প্রশ্ন তুলছেন, আসলে প্রযুক্তি নিয়েই তাঁদের সমস্যা আছে। তাঁরা ডিজিটাল লেনদেন, আধার, জিএসটি, ভিম অ্যাপ মেনে নিতে পারেন না। আর এই মনোভাবের জন্যই কিছু দল সাধারণের আস্থা অর্জন করতে পারে না।’’  বিভিন্ন রাজ্যে যেখানে কংগ্রেস বা অন্য দলের সরকার রয়েছে, তাঁরাও যে ইভিএম-এ দেওয়া ভোটেই জিতে এসেছেন এবং তাঁদের প্রতিনিধি হয়েই রাজ্যসভায় এসেছেন, সে কথাও এ দিন স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন মোদী।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest