নিউজ কর্নার ওয়েব ডেস্ক: নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ৪৯ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে আল নূর মসজিদেই হত্যা করা হয়েছে ৪১ জনকে। মসজিদটিতে বর্বরোচিত হামলা চালায় ২৮ বছর বয়সী অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত ব্রেন্টন ট্যারান্ট।ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল জানিয়েছে, ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদে যখন এলোপাথাড়ি গুলি চালাচ্ছিল ট্যারান্ট, তখন প্রত্যক্ষদর্শী রা দেখতে পান এক ব্যক্তি হামলাকারীকে জাপটে ধরে আটকানোর চেষ্টা করছেন। পরে সংবাদ মাধ্যমের সামনে অনেকে জানান, ওই ব্যক্তি তিনি হামলাকারীকে না আটকালে নিহতের সংখ্যা আরও অনেক বাড়ত।
শনিবার ওই ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।জানা গিয়েছে, তিনি পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদ থেকে আসা নইম রশিদ। রাতে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। শুক্রবারই বন্দুকবাজের নইমের ছেলে তালহা রশিদ প্রাণ হারিয়েছিলেন। বাকি অনেকের জীবন বাঁচিয়ে এবার চলে গেলেন নইম।অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী, ভারতীয় বংশোদ্ভূত ফয়জল সৈয়দ জানিয়েছিলেন, কী ভাবে মসজিদে গুলিবৃষ্টির মধ্যেই ‘জনৈক ব্যক্তি’ ছুটে এসে আততায়ীকে জাপটে ধরেন। বন্দুক না নামানো অবধি চেপে ধরে রাখেন। ফয়জল বলেছিলেন, তিনি যে বেঁচে গিয়েছেন তা ওই মানুষটির জন্যই। তাঁকে খুঁজে পেতে চান তিনি। সে আর হল না। ব্রেন্টনের গুলিতে মারাত্মক জখম হয়েছিলেন নইম। কাল গভীর রাতেই তাঁর মৃত্যু হয়।
নিউজ়িল্যান্ডবাসীরা তো বটেই, গোটা পৃথিবীর চোখেই তিনি এখন মানবতার নায়ক। শনিবার দিনভর তাঁর কথা টুইটারে এক নম্বরে। অ্যাবটাবাদে থাকাকালীন একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে চাকরি করতেন নইম। পরে শিক্ষকতার চাকরি নিয়ে নিউজ়িল্যান্ডে চলে যান। নইম এবং তালহা-র মৃত্যুর খবর সংবাদমাধ্যমকে জানান নইমের দাদা খুরশিদ আলম। পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মহম্মদ ফয়জল জানান, আরও ন’জন পাকিস্তানির খোঁজ মিলছে না।
সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলাকারী যখন বন্দুক নিয়ে হামলার উদ্দেশে মসজিদে প্রবেশ করে তখন গুলিতে নিহত প্রথম ব্যক্তি তাকে ‘হ্যালো ব্রাদার’ বলে সম্বোধন করেছিলেন। এর জবাবে তাঁকে লক্ষ্য করে তিনটি গুলি ছোড়ে হামলাকারী।আল নূর মসজিদের পরে কাছের লিনউড মসজিদেও হামলা চালায় ব্রেন্টন। সেখানেও এক ব্যক্তি প্রাণপণে তাকে আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন বলে জানাচ্ছেন প্রত্যক্ষদর্শী সৈয়দ মাজহারউদ্দিন। এখানে আততায়ীর হাত থেকে বন্দুক কেড়ে নিতে পেরেছিলেন এক জন। কিন্তু বন্দুক চালাতে জানতেন না তিনি। সেই ফাঁকে আততায়ী ছুটে গাড়িতে উঠে পড়ে।