নয়াদিল্লি: সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচন ঘিরে রীতিমত রাজনৈতিক পারদ চড়ছে গোটা দেশে। ভোট যুদ্ধে সাধারণ মানুষের সামনে বিভিন্ন ইস্যুর পাশাপাশি জীবিকা একটি বড় বিষয়। এমন এক পরিস্থিতির মধ্যে দেশের চাকরির বাজার নিয়ে প্রকাশ্যে এল নয়া রিপোর্ট। বেঙ্গালুরুর আজিম প্রেমজি বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে প্রকাশিত চাকরি সম্পর্কীয় এক সমীক্ষার রিপোর্ট রীতিমত চনকে দিয়েছে।সমীক্ষার রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী যখন নোটবন্দির কথা ঘোষণা করেন, তারপর থেকে টানা দুই বছরে ৫০ লাখ মানুষ কাজ হারিয়েছেন।
মঙ্গলবার প্রকাশিত ওই রিপোর্টে জানা গিয়েছে, যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে মহিলাদের সংখ্যা বেশি। সাধারণভাবে ২০১১ সাল থেকেই দেশে চাকরি কমছে। যাঁরা চাকরি হারাচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে উচ্চশিক্ষিত তরুণরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। রিপোর্টে মন্তব্য করা হয়েছে, নোটবন্দির জন্যই এতজন চাকরি হারিয়েছেন কিনা তা বলা সম্ভব নয়। কিন্তু যে হারে চাকরির সুযোগ কমছে, তা উদ্বেগের কারণ তো বটেই। সরকারের এব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা উচিত ছিল। উচ্চশিক্ষিতরা গত কয়েক বছরে চাকরি হারিয়েছেন তো বটেই, কিন্তু অল্পশিক্ষিতদের অবস্থা বিশেষ ভালো নয়। তাঁরা যে ধরনের চাকরি করেন, তারও সংখ্যা কমেছে।
গতবছর কর্মসংস্থান নিয়ে সরকারের একটি গোপন রিপোর্ট ফাঁস হয়ে যায়। তাতে বলা হয়েছে, ২০১৭-১৮ সালে বেকারত্বের হার ছিল তার আগের ৪৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বেকারত্বের হার এখন ৬.১ শতাংশ। ১৯৭২-৭৩ সালের পরে আর কখনই এত মানুষ বেকার ছিলেন না। এই রিপোর্টটি সরকার প্রকাশ করতে চায়নি। কিন্তু গোপন সূত্রে তা একটি সংবাদপত্রের হাতে আসে। পরে নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমার বলেন, ওই রিপোর্টের সত্যতা যাচাই করা হয়নি।ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ধরে নেওয়া হয় অসংগঠিত ক্ষেত্রে অল্পশিক্ষিতরা বেশি চাকরি করেন। কিন্তু নোটবন্দির ফলে ওই ক্ষেত্রটিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এর পাশাপাশি জিএসটি-ও অসংগঠিত ক্ষেত্রকে বড় ধাক্কা দিয়েছে।
কিন্তু নতুন সমীক্ষার ভিত্তি কি? পরিসংখ্যান মন্ত্রকের অধীন ন্যাশনাল স্যাম্পল সার্ভে অর্গানাইজেশন (এনএসএসও) নিয়মিত ব্যবধানে কর্মসংস্থান এবং বেকারত্ব নিয়ে সমীক্ষা (পিরিয়ডিক লেবার ফোর্স সার্ভে) করে। কিন্তু এনএসএসও-র সেই সমীক্ষার তথ্য পাওয়া যায় না। এই সংক্রান্ত তথ্যের একমাত্র বিকল্প সেন্টার ফর মনিটরিং দি ইন্ডিয়ান ইকনমি (সিএমআইই)। এই সরকারি সংস্থাটি প্রতি চার মাস অন্তর সমীক্ষা করে। সেই সমীক্ষার তথ্য (ডেটা) থেকে ১ লক্ষ ৬০ হাজার বাড়ির কর্মসংস্থানের তথ্যকে মূল ভিত্তি হিসেবে নিয়েছেন তাঁরা। তার পর সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন।