নিউজ কর্নার ওয়েব ডেস্ক: সদ্য বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার গৌতম গম্ভীর। এবার দিল্লি লোকসভা কেন্দ্র থেকে লড়বেন তিনি। তবে এই প্রথম নয় ক্রীড়া জগত থেকে অনেকেই জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছেন রাজনীতিতে। গৌতম গম্ভীর তাদেরই একজন। এখন দেখা যাক রাজনীতিতে বাকিদের অবস্থান।
- কীর্তি আজাদ: বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভগবত ঝা আজাদের পুত্র কীর্তি আজাদ ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ দলে ছিলেন। ১৯৯৩ দিল্লি বিধানসভায় সদস্য ছিলেন তিনি। বিজেপির টিকিটে দ্বারভাঙ্গা লোকসভা কেন্দ্র থেকে সাংসদ হয়েছিলেন। ২০০৯ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত সাংসদ ছিলেন। পরে অবশ্য বিজেপির সঙ্গে তার সম্পর্ক খারাপ হয় কংগ্রেসের যোগ দেন।
- নভজিৎ সিং সিধু: একই অবস্থা এই ক্রিকেট তারকারও। সিধুর বাবা ভগবন্ত সিংহও ছিলেন প্রাক্তন ক্রিকেটার। তাঁর মা নির্মল সিধু কংগ্রেসের টিকিটে দুবার বিধানসভা নির্বাচনে লড়েছিলেন। সেই হিসেবে ক্রিকেট এবং রাজনীতি দুটোই এই ক্রিকেট তারকার রক্তে। মা কংগ্রেসি হলেও সিধুর পছন্দ ছিল গেরুয়া শিবির। বিজেপির টিকিটে অমৃতসর কেন্দ্র থেকে তিনবার লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হন তিনি। স্বল্প সময়ের জন্য রাজ্যসভার সাংসদও ছিলেন। কিন্তু ২০১৭ সালে পঞ্জাব নির্বাচনের কিছু আগে বিজেপির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তলানীতে ঠেকে। সিধুর নির্বাচন কেন্দ্র থেকে সরিয়ে অরুণ জেটলিকে টিকিট দেওয়া হয়। যথারীতি পরাজিত হন জেটলি। ক্ষুব্ধ সিধু যোগ দেন কংগ্রেসে। বর্তমানে তিনি পঞ্জাবের উপমুখ্যমন্ত্রী।
- দিলীপ তীরকে: প্রাক্তন হকি প্লেয়ার দিলীপ তীরকে চেনে গোটা দেশ। দেশের হয়ে ৪০০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ২০১২ সালে রাজ্যসভার সাংসদ হন। পরে বিজু জনতা দলের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং পরাজিত হন।
- রাজ্যবর্ধন সিং রাঠোর: প্রাক্তন তীরন্দাজ এই সেনা আধিকারিক ন’বছরের কর্ম জীবন শেষ করে বিজেপিতে যোগ দেন। রাজস্থানের জয়পুর লোকসভা আসন থেকে কংগ্রেস প্রার্থী সি পি যোশীকে হারিয়ে সংসদে আসেন তিনি। মোদী সরকার ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে তাঁকে যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী করে। গত বছর রাঠোরকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক দেওয়া হয়।
- প্রসূন ব্যানার্জি: ১৯৭৯ সালে অলিম্পিক কোয়ালিফাইং টিমে ছিলেন প্রসূন ব্যানার্জি। এছাড়াও ১৯৭৪,১৯৭৮ এবং ১৯৮২ সালের এশিয়ান গেমসেও ছিলেন এই তারকা ফুটবলার। তেরোর উপনির্বাচনে হাওড়া কেন্দ্র থেকে তাঁকে প্রার্থী করে তৃণমূল। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ফের টিকিট দেওয়া হয় প্রসূনকে। সেবারও জয়ী হন তিনি। এবার প্রসূনকে টিকিট দিয়েছে দল।
- মহম্মদ আজহারউদ্দিন: ১৯৯২,১৯৯৬ ও ১৯৯৯ – এই তিন
বিশ্বকাপ দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন প্রাক্তন ক্রিকেটের মহম্মদ আজহারউদ্দিন। ২০০৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদ কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হন তিনি। পাঁচ বছর পর তাঁকে টিকিট দেওয়া হয় রাজস্থানের টংক সাওয়াই মাধবপুর কেন্দ্র থেকে। সেখানে বিজেপি প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন তিনি। - মহম্মদ কাইফ: চোদ্দোর লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের ফুলপুরে কংগ্রেস টিকিট দিয়েছিল এই প্রাক্তন ক্রিকেটারকে। কিন্তু বিজেপির প্রসাদ মৌর্যের কাছে তিনি পরাজিত হন। পরে অবশ্য রাজনীতি থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন কাইফ। ২০১৮ সালে একটি প্রতিক্রিয়ায় কাইফ জানান,’আমি দেখেছি রাজনীতি আসলে মানুষের মধ্যে বিভাজন করে। আমি দেশের জন্য কাজ করতে চাই. সমাজের জন্য কাজ করতে চাই। সে কারণেই যোগ দিয়েছিলাম রাজনীতিতে কিন্তু আশা পূরণ হয়নি।’ এরপর অবশ্য তিনি বলেন, রাজনীতিতে যোগদানের ইচ্ছা নেই তা বলে কোনদিনই ভোটে দাঁড়াব না এমন কথাও বলব না।
- বাইচুং ভুটিয়া : দেশের হয়ে ১০০ টি ম্যাচ খেলেছেন ইনি। দেশের অন্যতম তারকা ফুটবলার ছিলেন এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাঁর নেতৃত্বে ভারত ১৯৯৭,১৯৯৯ এবং ২০০৫ সালে সাউথ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন জয়ী হয়েছিল।২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে দার্জিলিং থেকে তাকে টিকিট দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। ২০১৬তে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে শিলিগুড়ি থেকে প্রার্থী করা হয় তাঁকে। দুটি ক্ষেত্রেই ব্যর্থ হন বাইচুং। গত বছর হামারো সিকিম পার্টি নামে একটি দল করেন তিনি।ঊনিশের নির্বাচনেও সামিল হয়েছেন তিনি। গ্যাংটক থেকে তাঁর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা।
- মনসুর আলি খান পতৌদি: মাত্র ২১ বছর বয়সে ভারতীয় ক্রিকেট দলের ক্যাপ্টেন হয়েছিলেন মনসুর আলিখান পতৌদি। তাঁর নেতৃত্বে ভারত প্রথম ১৯৬৮ নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তাদের পরাজিত করে আসে। ১৯৭১ ও ১৯৯১ নির্বাচনে টাইগার পতৌদিকে টিকিট দিয়েছিল কংগ্রেস। দুই বারই পরাজিত হন নবাব। হিন্দুস্থান টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তাঁকে যে বিশেষ সময়ে টিকিট দেওয়া হয়েছিল কংগ্রেসের জন্য অনুকূল ছিল না। রাম মন্দিরের প্রবল হাওয়ায় ১৯৯১ সালে পরাজিত হয়েছিলেন তিনি। তখন যা পরিস্থিতি অনুযায়ি ভোপাল থেকে যে কোন কংগ্রেস প্রার্থী দাঁড়ালেই পরাজিত হওয়াটাই ভবিতব্য ছিল।