পা ধোয়ালেন মোদী কিন্তু শুনলেন না “মন কি বাত”, জেনে নিন কি বললেন ৫ সাফাইকর্মী

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

নিউজ কর্নার ওয়েব ডেস্ক: কুম্ভ মেলায় ৫ সাফাইকর্মীর পা দিয়ে দিয়েছিলেন ধুয়ে দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তা নিয়ে মিডিয়াতে শোরগোল হয়েছিল বিস্তর। সেই সাফাইকর্মীদের কাছে অবশ্য আলাদা করে কথা বলেনি কোন মিডিয়া। নিন্দুকেরা বলে তাতে টিআরপি বাড়ার সম্ভাবনা কমে। ফলে নিজেদের আক্ষেপের কথা সেদিন বলতে পারেননি এই সাফাইকর্মীরা।প্রধানমন্ত্রী পা ধুয়ে দিচ্ছেন -এই ঘটনায় আজও আবেগে আপ্লুত হন তাঁরা। কিন্তু সাবেক স্বপ্ন কাটতেই কঠিন বাস্তব তাদের সত্য বলতে বাধ্য করেছে। এখন এদের সম্মিলিত প্রশ্ন একটাই- কেবল সম্মানে কি পেট ভরে ? নিজেদের অব্যক্ত কথা পরে সংবাদমাধ্যমের কাছে বলেছেন এই ৫ জন।

জানা গিয়েছে,নরেন্দ্র মোদী আসবেন বলে তাদের গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছিল। ভালো করে স্নান সেরে তারা ঘরে বসে ছিলেন। বাইরে থেকে দেওয়া হয়েছিল তালা। সরকারি আধিকারিক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা খবর নিয়েছিল কোন অসুখ রয়েছে কিনা। থানায় কোন মামলা আছে কিনা তাও যাচাই করা হয়েছিল। এমনকি দাঁতে দাগ থাকলেও বাদ পড়তে পারতেন তারা। সবকিছু ভালো করে দেখেশুনে তবে সরকারি আধিকারিকদের ঠিক করেন এদের দিয়ে কাজ হবে। পরে প্রধানমন্ত্রী এসে পায়ে জল ঢেলে,গলায় গামছা পরিয়ে দেন।এখন ওই ৫ সাফাইকর্মীর কাছে এটাই সম্বল।

safai 1
সাফাইকর্মী প্যারেলাল

প্যারেলাল করিলা এখনও চোখ বন্ধ করলেই দেখতে পান প্রধানমন্ত্রী ঝুঁকে পড়ে তাদের পায়ে জল ঢেলে দিচ্ছেন। এখনও গোটা ব্যাপারটা তাঁর কাছে স্বপ্নের।  মোদীর দেওয়া গামছা সযত্নে গলায় ঝুলিয়ে রেখেছেন করিলা। কিন্তু সেই স্বপ্নের আবেগ দিয়ে পেট চলে না।তাঁর একটাই বক্তব্য, কেন একবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হল না। সুযোগ পেলে তিনি জানাতে পারতেন সংসারের অভাব অভিযোগের কথা।

safai 2
সাফাইকর্মী হরি

বাল্মিকী সম্প্রদায় প্রতিনিধি হরি নভেম্বর থেকে পড়েছিলেন কুম্ভ মেলায়। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী রাজকুমারী। এই নিয়ে চারবার সাফাই কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন হরি।গ্রামে মূলত রাজমিস্ত্রির কাজ করেন তিনি। আক্ষেপ করে বলেন,”উনি বিরাট মাপের মানুষ । যে সম্মান পেয়েছি তাতে আমরা কৃতজ্ঞ।তবে আমাদের জীবনে কোন তফাৎ হয়নি । আমরা আগেও সাফাইয়ের কাজ করতাম। এখনও করছি।” একটি বিড়ি ধরিয়ে হরি বলেন,” এ কাজ আর ভালো লাগে না।কাজের জন্য কতদিন আর ঘুরে বেড়াতে ভালো লাগে। কাজ পাকা হওয়া চাই সে কথাটাই প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু তা আর হল না।”

safai 3
সাফাইকর্মী জ্যোতি

সাফাইকর্মী জ্যোতি মেহেতা ছিলেন সবথেকে উত্তেজিত।তিনি জানালেন ,”এ কাজে কোন স্বাচ্ছন্দ নেই। কোন দুঃখ দুর্দশার কথাই প্রধানমন্ত্রীকে বলার সুযোগ পাইনি। উনি অত বড় মানুষ। যা খুশি একটা বলে দিতে পারতাম। চাকরি চাইতে পারতাম। উনি ইচ্ছে করলে চাকরি দিতে পারতেন ।শুধু সম্মান দিয়ে তো আর পেট ভরে না। এখনও পর্যন্ত মানুষ হাত দিয়ে নর্দমা পরিষ্কার করে, ম্যানহোল পরিষ্কার করে, সেপটিক ট্যাংক মানুষ হাত দিয়ে পরিষ্কার করে- এটা বন্ধ হওয়া উচিত।অন্য লোকের মলমূত্র পরিষ্কার করতে নর্দমায় ঢুকতে যাওয়ার তো ঠিক কাজ নয়।”

প্রধানমন্ত্রী পায়ে হাত দিয়ে অনেক বড় সম্মান জানিয়েছেন, এই আবেগ বারবার ধাক্কা খেয়ে যাচ্ছে বাস্তবের মাটিতে। আবেগটুকু সঞ্চয় করে রাখলেও   যে যন্ত্রনা তারা বয়ে বেড়াচ্ছেন তার  উপশম হয়নি।সব থেকে বড় কথা হল যিনি “মন কি বাত” শোনান তিনি এই মানুষগুলোর মনের কথা শোনেননি। শোনার প্রয়োজন অনুভব করেননি। এই আক্ষেপটুকুই এখন সম্বল তাঁদের যা গোপন করতে শেখেননি প্রচারের আলো থেকে শতগুন দূরে থাকা এই মানুষগুলো।

 

 

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest