প্যারিস: ঐতিহাসিক নতর-দাম ক্যাথিড্র্যালের আগুনের গ্রাসে। ইতিমধ্যেই ভেঙে পড়েছে এই গির্জার একটি শিখর। সোমবার প্যারিসের এই বিখ্যাত গথিক সৌধটির ছাদে আগুন লাগে। প্যারিসের ডেপুটি মেয়র এমানুয়েল গ্রেগরি এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে ‘বিপুলকায় ক্ষতি’ বলে বর্ণনা করেছেন। দমকলকর্মীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন। সোমবার সন্ধ্যায় টেলিভিশনে প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর একটি বক্তৃতা দেওয়ার কথা ছিল। তিনি সেই ভাষণ বাতিল করে ঘটনাস্থলে গিয়েছেন।
ক্যাথিড্র্যালের এক জন মুখপাত্র সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, যে কাঠের কাঠামো গির্জার ছাদটিকে ধরে রেখেছে তাতে তা আগুনে পুড়ে গিয়েছে। তিনি জানান, গ্রিনউইচ মিন টাইম বিকেল ৪টে ৫০ মিনিটে (ভারতীয় সময় রাত ১০টা ২০ মিনিট) আগুন লাগে। সংস্কারের কাজ চলছিল এই ঐতিহাসিক সৌধটির। সেই কাজের সঙ্গে এই আগুন লাগার ঘটনা জড়িয়ে থাকার সম্ভাবনা খুবই প্রবল বলে মনে করেন দমকলকর্মীরা।
HORRIBLE ??? #NotreDame #Paris pic.twitter.com/h3i1Lfl0uh
— mrl (@mrrrrrrrl) April 15, 2019
সুবিশাল ও অপূর্ব কারুকার্যমণ্ডিত ওই গির্জায় কী ভাবে আগুন লাগল তা এখনও পরিষ্কার নয়। আগুন লাগার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গির্জার সুউচ্চ চূড়াটি ভেঙে পড়ে। পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে দমকল ও নিরাপত্তাবাহিনী। কাছাকাছি যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। দমকলের প্রায় চারশো কর্মী টানা কাজ করছেন গির্জাটির যতটুকু বাঁচানো যায়, তার চেষ্টা করতে। কিন্তু কোনও নিষেধাজ্ঞাতেই আটকানো যায়নি মানুষের আবেগ। জ্বলন্ত গির্জার কাছাকাছি রাত বাড়তেই জড়ো হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। চোখের জলে তাঁরা গাইছেন খ্রিস্টান ধর্মীয় সঙ্গীত। গুড ফ্রাই ডে ও ইস্টারের ঠিক আগেই এই ঘটনায় আবেগে ভেঙে পড়েছেন ক্যাথলিকরা।সারা বিশ্বের সংবাদ মাধ্যম ভিড় করেছে প্যারিসে।পৃথিবীর সব খ্রিস্টান, বিশেষত ক্যাথলিকদের কাছে এই ঐতিহাসিক গির্জার একটি বিশেষ স্থান আছে। এর ইতিহাস, সৌন্দর্য ও ঐতিহ্য প্রতি বছর সারা বিশ্ব থেকে কয়েক কোটি পর্যটককে আকৃষ্ট করে।
চতুর্দশ শতাব্দীতে নির্মিত এই গির্জা দেখতে প্রতি বছর দেড় কোটি মানুষ ভিড় করেন। ধর্মীয় স্থান হিসেবে নতর দাম গির্জার যত খ্যাতি, সাড়ে আটশো বছরের পুরনো গথিক স্থাপত্য হিসেবে তার খ্যাতি কোনও অংশে কম নয়। বহু কালজয়ী সাহিত্যে স্থান করে নিয়েছে নতর দাম। তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি ফরাসি সাহিত্যিক ভিক্তর হুগোর বিখ্যাত উপন্যাস ‘দ্য হাঞ্চব্যাক অফ নতর দাম।‘