Site icon The News Nest

প্লেন বানালেন পাকিস্তানের পপকর্নওয়ালা!

Fayyaz Plane

ইসলামাবাদ: পাকিস্তানি পপকর্নওয়ালা বানিয়ে ফেলেছেন একটি আস্ত প্লেন। যদিও দেশের অসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ হোমমেড এই প্লেনটিকে এখন উড়ানের অনুমতি দেয়নি। পুলিশের বাধায় তাঁর স্বপ্নের উড়ান নিয়ে মুক্ত আকাশে পাড়ি দিতে পারেননি বছর তিরিশের মহম্মদ ফায়াজ।
অথচ উড়ানের সমস্ত প্রস্তুতিও করে ফেলেছিলেন তিনি।

দারিদ্র্যের তীব্র কষাঘাতে মাঝপথেই থামাতে হয় পড়াশোনা। নেমে পড়েন দিন গুজরানের কাজে। রাস্তায় পপকর্ন বিক্রি করতে শুরু করেন ফায়াজ। কিন্তু কখনও নিজের স্বপ্ন থেকে সরে আসেননি তিনি। সবকিছুর মাঝে একটাই ভাবনা কবে তাঁর বিমান পাড়ি দেব আকাশে। সংবাদমাধ্যমকে ফায়াজ জানান, যখন ছোট ছিলাম দূর আকাশে বিমান গেলে তাকিয়ে থাকতাম বহুক্ষণ কেবলই মনে হত ঠিক এই ভাবেই একদিন উড়বে আমার বিমান। যেটা আমি বানাব। আল্লাহ আমাকে এই উদ্ভাবনী ক্ষমতা দিয়ে পাঠিয়েছেন। পঞ্জাবের পাকপুকটান অঞ্চলের বাসিন্দা ফায়াজ নিজের স্বপ্নে বিমান বানানোর পিছনে ইতিমধ্যেই ৯০ হাজার টাকা খরচ করে ফেলেছেন। কিছুটা ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ এবং বাকিটা তাঁর অন্যতম সম্পদ জমি বিক্রি করেই জোগাড় করতে হয়েছে তাঁকে। সামান্য কিছু সঞ্চয় যা ছিল তাও চলে গেছে স্বপ্নের উড়ানে। কিন্তু তাতে আক্ষেপ নেই।  শেষ পর্যন্ত সফল হয়েছে তাঁর স্বপ্ন। ফায়াজ জানান, এই স্বপ্ন বাস্তব করার জন্য একসময় নাইট গার্ডের চাকরি করে টাকা জমিয়েছি। রাস্তার ধারে বসে দিনের পর দিন পপকর্ন বিক্রি করেছি। তারপর আল্লাহর রহমতে সাফল্যের মুখ দেখেছি।

কারোর কোন প্রযুক্তিগত সাহায্য না নিয়ে এত বড় একটি কাজে সফল হওয়া সত্যিই বেনজির। কিন্তু কিভাবে কি ভাবে সফল হলেন এ প্রশ্ন করায় ফায়াজ জানালেন, বায়ুর চাপের্ সাধারণ বিষয়গুলি আমার জানা ছিল। যখন আমি ক্লাস ফাইভে পড়তাম তখন আব্বার মোটরবাইকে চড়ে স্কুলে যেটাম। তখন মনে হত, বাইক নয় একদিন উড়ান বানাবো। এই ভাবনা আমাকে নিশ্চিন্তে ঘুমোতে দেয়নি বহু রাত। একসময় ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলের প্রযুক্তিগত অনুষ্ঠানগুলি মন দিয়ে দেখতেন ফায়াজ। সেখান থেকে টুকরো টুকরো ধারণা পেয়েছেন কিভাবে একটি বিমান ওড়ে।এছাড়া পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স -এর উড়ান দেখতেও তিনি হাজির হতেন লাহোরের চৌ বুর্জ ই স্কোয়ারে হাজির হতেন।

বছর খানেক আগে পরীক্ষামুলকভাবে একটি ছোট ইঞ্জিন দিয়ে নিজের গ্রামে সফল পরীক্ষা করেছিলেন। এরপর ২৩ মার্চ  পাক জাতীয় পতাকা নিয়ে প্রথম আকাশে ওড়ে ফায়েজের প্লেন। তখনই প্রশাসনের নজরে পড়েন তিনি। নিরাপত্তা কর্মীরা তাঁর কাছে অনুমোদন পত্র দেখতে চান। স্বপ্নে মশগুল ফায়াজ কখনও এসব বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাননি।

পুলিশের বাধায় আর ওড়েনি তাঁর বিমান। ৪ এপ্রিল পুলিশ অবশ্য তাঁর প্লেনটি ফেরত দিয়েছেন।পাকিস্তান অসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ অবশ্য ফায়েজের এই উদ্যোগ ও উদ্যমের প্রশংসা করেছে। যেভাবে তিনি মিনি এয়ার প্লেন বানিয়েছেন তা প্রশংসনীয় বলে কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, তাকে আরও প্রশিক্ষিতকরে তুলতে বিশেষ প্রশিক্ষণের বন্দোবস্ত করবে সরকার। বিমান কর্তৃপক্ষের তরফে এই যুবককে উৎসাহিত করে বলা হয়েছে ২০১৯ সালের নয়া এভিয়েশন পলিসি অনুযায়ী অসামরিক বিমান নতুন নতুন উন্নয়ন হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান চাইছেন উদ্ভাবনী নিয়ে যারাই নতুন কাজে এগিয়ে আসবে তাদের সর্বতোভাবে সাহায্য করা হবে।

Exit mobile version