বিজেপি-কে রুখতে বাম-কংগ্রেসকে জোটবার্তা মমতার, শর্ত দিলেন মান্নান, প্রস্তাব ফেরালেন সুজন

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

#কলকাতা: বাংলায় তৃণমূল বিরোধী ভোটের স্পষ্ট মেরুকরণ হচ্ছে, তা হাতে নাতে দেখা গিয়েছে লোকসভা ভোটে। এক লাফে প্রায় তিরিশ শতাংশ ভোট বাড়িয়ে ফেলেছে বিজেপি। গেরুয়া ঝড়ে ভাঙন শুরু হয়ে গিয়েছে তৃণমূলে। এই সর্বগ্রাসী বিজেপি-কে ঠেকাতে এ বার খোলাখুলি বাম-কংগ্রেসকে পাশে চাইলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বিধানসভা অধিবেশনের শুরুতে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী বক্তৃতা দিয়েছিলেন। তার ধন্যবাদ প্রস্তাবের উপর বুধবার জবাবি বক্তৃতা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্নে গেরুয়া শিবিরের তীব্র সমালোচনা করে মমতা বলেন, “মান্নান ভাই, সুজন দা চলুন বিজেপি-কে রুখতে আমরা এক সঙ্গে লড়াই করি”।

তাৎপর্যপূর্ণভাবে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্ভবত এই প্রথম সরাসরি বাম-কংগ্রেসকে পাশে থাকার বার্তা দিলেন। বিজেপি বিরোধিতায় তৃণমূলকে সাহায্য করার আহ্বান জানালেন। স্পষ্ট ভাষায় মমতা বললেন, “বিজেপিকে রুখতে আমাদের একজোট হতে হবে। কেন্দ্রে যেভাবে আমরা সমস্ত ইস্যুতে কংগ্রেসের পাশে থাকি। এরাজ্যেও তেমনটাই হওয়া উচিত।” বিধানসভায় দাঁড়িয়ে এদিন মমতা বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ শানান। তিনি বলেন, “বিজেপি রাজ্যে কয়েকটা আসন পাওয়ার পরই ভাটপাড়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। ওরা ভেবেছে কয়েকটা আসন পাওয়া মানেই বাংলা দখল করে ফেলেছে। তা একেবারেই নয়।” এরপরই সুজন চক্রবর্তী এবং আব্দুল মান্নানকে উদ্দেশ্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,”আপনারা জোট করবেন কিনা সেটা আপনারা জানেন। কিন্তু, বৃহত্তর স্বার্থে আমাদের একসঙ্গে আসা উচিত। জোটবদ্ধ হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করা দরকার।” তবে, স্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের ভূমিকা যে তিনি পছন্দ করছেন না, তাও সাফ জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী।

লোকসভা ভোটের পর সিপিএমের তুমুল সমালোচনা করে তৃণমূলনেত্রী বলেছিলেন, বামেদের ভোট সব বিজেপিতে চলে গিয়েছে। কিন্তু এ দিন ছবিটা ছিল উলটপুরানের। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বামেরা তাদের ভোট পুরোটা বিজেপি-কে ট্রান্সফার করে দিয়েছে—তা বলতে পারিনা। আমিও কি চাইলেই পারি তৃণমূলের সব ভোট কাউকে ট্রান্সফার করে দিতে। কিছু একটা গণ্ডগোল হয়েছে নিশ্চয়ই। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতার মাঝেই কংগ্রেস ও বাম বিধায়করা তাঁর আপত্তি করে বুঝিয়ে দেন, এই প্রস্তাবে তাঁদের সায় নেই। ব্যাখা দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি রাজনৈতিক জোট করার কথা বলিনি। যে ভাবে জাতীয় স্তরে ২৩টি রাজনৈতিক দল লড়াই করছি। সেই ভাবে লড়াইটা চালিয়ে যেতে হবে।” পরে বিধানসভার বাইরে বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান বলেন, “সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে বাম কংগ্রেস এমনিতেই লড়ছে।

কিন্তু মমতার সঙ্গে কী জোট করবে কংগ্রেস? বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান বলেন,”বামপন্থীরা ও কংগ্রেসই সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করছে। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর ১৯৯৮ সালে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন। ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার পর ২০০৩ সালে মোদীকে ফুলের তোড়া দিয়ে সংবর্ধনা দিয়েছিলেন মমতা। আপনি বিজেপির কোলে জন্ম নিয়েছেন। আগে বলুন, আমি যা করেছি ভুল করেছি, তারপর ভাবব”। মমতার জোট বার্তা প্রত্যাখ্যান করে এদিন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, তৃণমূল ডুবন্ত নৌকো। আমরা সকলে মমতার পাশে দাঁড়াব, এমন দিবাস্বপ্ন দেখবেন না। আসন আপাতত কমলেও বামফ্রন্টের কোনও বিকল্প নেই।

মমতার এই বার্তা কটাক্ষ করে বিজেপি নেতা মুকুল রায় বলেন,”মুখ্যমন্ত্রী স্বীকার করে নিলেন, একক শক্তিকে বিজেপির সঙ্গে পারছেন না। বিজেপিই পশ্চিমবঙ্গের সর্ববৃহত্ রাজনৈতিক দল। সে কারণেই কংগ্রেস-সিপিএমকে একজোট করতে চাইছেন। এটা প্রমাণ করছে, তৃণমূল ক্ষয়িঞ্চু শক্তি”।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest