Site icon The News Nest

বিপুল ভোটে জয়ী তৃণমূলের তারকা প্রার্থীরা, দাপট দেখালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মালা রায়

Dev mini

#কলকাতা: নির্বাচনী প্রচারে এসে ডায়মন্ডহারবারে ভাতিজা নিয়ে হাওয়া গরম করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু ময়দানে তিনি যে দাপটে ব্যাট করে গিয়েছেন তা ফলাফলেই স্পষ্ট। কারণ কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিকে দাঁড়াতে দেননি তিনি। ফলে দ্বিগুন মার্জিন নিয়ে ফের সাংসদ হলেন অভিযেক ব্যানার্জি। তিনি মোট ভোট পেয়েছেন ৪ লাখ ৮৩ হাজার ৪২৪ ভোট। এখানে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিজেপি’‌র নীলাঞ্জন রায়। তিনি দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন মোট ২ লাখ ৪৭ হাজার ১০০ ভোট পেয়ে।

অন্যদিকে, এ দিন ইভিএম খোলার সময় থেকেই এগিয়ে ছিলেন কলকাতা দক্ষিণ কেন্দ্রের তৃণমূলপ্রার্থী মালা রায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজের কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত কলকাতা দক্ষিণে বিজেপি প্রার্থী চন্দ্রকুমার বসু এবং সিপিএম প্রার্থী নন্দিনী মুখোপাধ্যায় আলোচনায় থাকলেও শেষমেশ জয় হাসিল করে নিলেন মালা। শেষমেশ মালাদেবী ভোট পেয়েছেন ৬৫.১ শতাংশ। অন্য দিকে বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেস প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোটের শতাংশ হার যথাক্রমে ২০%, ৭% এবং ৪.৭%। প্রসঙ্গত, এই কেন্দ্রে থেকেই ছ’বার প্রার্থী হয়েছিলেন মমতা। ছ’বারই জিতেছিলেন তিনি। কিন্তু কোনো বারই তাঁর প্রাপ্ত ভোট ৬০ শতাংশ পার হয়নি। এমনকী তিনি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর ওই কেন্দ্রের উপনির্বাচন এবং ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে ওই কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হওয়া সুব্রত বকসি প্রথম ৬০ শতাংশ ভোটের সীমারেখা পার করলেও শেষ বার তিনি পেয়েছিলেন মাত্র ৩৭ শতাংশ ভোট। সে বার বিজেপি প্রার্থী চন্দ্রবাবু পান ২৫ শতাংশ ভোট।

বাংলায় পদ্ম ফুটলেও, সেই পাঁকে পা পিছলে যায়নি তৃণমূলের তিন তারকা প্রার্থী দেব, নুসরত, মিমির। এতদিন সিনেমাকে সরিয়ে রেখে ভোট পরীক্ষায় মনোনিবেশ করেছিলেন তাঁরা। আজ হাতেনাতে মিলল তার ফলাফল। প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপুল ভোটে হারিয়ে জিতলেন তাঁরা। মোট ৫ তারকা প্রার্থী এবার তৃণমূলের হয়ে লড়েছেন। শতাব্দী রায়, মুনমুন সেন, মিমি চক্রবর্তী, নুসরত জাহান ও দেব।

ঘাটাল কেন্দ্র থেকে লক্ষাধিক ভোটে বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষকে হারিয়ে ফের সাংসদ নির্বাচিত হলেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দেব ওরফে দীপক অধিকারী। যাদবপুর কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও বিজেপির অনুপম হাজরাকে বিপুল ভোটে হারিয়ে জয়ী হলেন রাজনীতিতে নবাগতা মিমি চক্রবর্তী। প্রথমটায় মনে করা হচ্ছিল, যাদবপুর কেন্দ্রে মিমির লড়াইটাই সবচেয়ে কঠিন হবে। কারণ, তিনি রাজনীতির আঙিনায় নতুন। কিন্তু বেলা বাড়তেই বদলেছে ট্রেন্ড। অন্য দুই প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীকে পিছনে ফেলে দিয়ে এক একটা রাউন্ডে এগিয়ে গিয়েছেন মিমি। অবশেষে জয়ের মুখ দেখলেন যাদবপুর কেন্দ্রের মা-মাটি-মানুষ প্রার্থী মিমি চক্রবর্তী। পাড়ার মেয়ের এহেন জয়ে যারপরনাই উচ্ছ্বসিত জলপাইগুড়ি পাণ্ডাপাড়ার লোকেরা।

প্রথমবার নির্বাচনে দাঁড়িয়েই বাজিমাত। লক্ষাধিক ভোটে প্রতিদ্বন্দী বিজেপি প্রার্থী সায়ন্তন বসুকে হারিয়ে জয়ী বসিরহাটের তৃণমূল প্রার্থী নুসরত জাহান। সবুজ আবির মেখে জয়ের আনন্দে মেতে উঠেছেন ওই কেন্দ্রের তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। দুপুর ৩টে ৪২ অবধি খবর ছিল, বসিরহাটে দু’লক্ষেরও বেশি ভোটে এগিয়ে রয়েছেন নুসরত জাহান। প্রায় সেই ধারাই অব্যাহত রেখে জয়ের মুখ দেখলেন তিনি। অন্যদিকে, বীরভূম কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের হয়ে হ্যাটট্রিক করলেন শতাব্দী রায়। বিপুল ভোটে জিতেছেন তিনি৷

আসানসোলের মানচিত্রে গেরুয়া রং ফিকে হয়নি এতটুকুও। প্রতিদ্বন্দ্বী বাবুল সুপ্রিয়র কাছে হেরেছেন মুনমুন সেন। ভোট প্রচারের সময় থেকেই বাবুলকে যথেষ্ট সক্রিয়ভাবে দেখা গিয়েছিল। তৃণমূলের পোস্টার ছেঁড়া থেকে শুরু করে, অনেক ক্ষেত্রেই প্রকাশ্যে তৃণমূল বিরোধিতা করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। কিন্তু, মুনমুনকে এত সক্রিয়ভাবে চরমপন্থা নিতে দেখা যায়নি। তবে, তাঁর জনপ্রিয়তা বাবুল অপেক্ষা কিছু কম ছিল না। ফলে মনে করা হয়েছিল, লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। কিন্তু বৃহস্পতিবার গণনা শুরু হওয়ার পর থেকেই ধরা পড়েছে অন্যরকম চিত্র। বেলা বাড়তেই ভোট গণনায় পিছিয়ে পড়ছিলেন মুনমুন সেন। তৃণমূলের তিন তারকা প্রার্থী দেব-নুসরত-মিমির পাশাপাশি ঝকঝক করছে দুই বিজেপি তারকা প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় ও বাবুল সুপ্রিয়র রিপোর্ট কার্ড।

Exit mobile version