মৈনপুরী: এতদিন তাঁরা ছিলেন চিরশত্রু। কিন্তু বিজেপিকে হারাতে হাত মেলাতে হয়েছে দু’জনকে। তার পর প্রথমবার প্রকাশ্যে উপস্থিত মায়াবতী ও মুলায়ম একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাকে সকলের সামনে তুলে ধরতে চাইলেন। মুলায়ম তো কর্মীদের নির্দেশও দিলেন যে মায়াবতীকে সবসময় শ্রদ্ধা করার জন্য।শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের মৈনপুরীতে এক সঙ্গে জনসভা করলেন রাজ্যের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী এবং মুলায়ম সিং যাদব। একই মঞ্চে উপস্থিতি থেকে ওই কেন্দ্রের জোট প্রার্থী মুলায়ম সিং যাদবের হয়ে প্রচারও করলেন মায়াবতী। তিনি বলেন, মোদীর মতো ভন্ড নন মুলায়ম। তিনি প্রকৃত অর্থে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের কথা ভাবেন এবং কাজ করেন।
১৯৯৩ সালে বহুজন সমাজবাদী পার্টির তদানীন্তন প্রেসিডেন্ট কাঁসিরামের সঙ্গে জোট করেই মুলায়ম সিং যাদব জোট সরকার গড়েছিলেন উত্তরপ্রদেশে। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন মুলায়ম। কিন্তু দুবছর যেতে না যেতেই সেই জোটে ভাঙন ধরে এবং বহুজন সমাজবাদী পার্টি সরকার থেকে তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয়। এরপরই ঘটে ‘কুখ্যাত’ গেস্ট হাউস কাণ্ড’। ১৯৯৫ সালের ২ জুন বসপা–র সেক্রেটারি মায়াবতী তাঁদের দলের বিধায়কদের নিয়ে লখনৌ শহরে মীরাবাঈ গেস্টহাউসে ভবিষ্যত কর্মসূচি নির্ধারণের জন্য একটি বৈঠকে বসেন। সেই বৈঠক চলাকালীন হঠাৎ সমাজবাদী পার্টির বেশ কয়েকজন নেতা ও কর্মী হামলা চালায় সেই গেস্টহাউসে। আক্রমণকারীদের হাত নিগৃহীত হন মায়াবতী। হামলাকারীদের অশ্রাব্য গালিগালাজ এবং শারীরিক নিগ্রহের হাত থেকে তাঁকে বাঁচান বিজেপি বিধায়ক ব্রহ্ম দত্ত যিনি বসপা–র ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। ঘটনার পরদিনই অর্থাৎ ৩ জুন বিজেপি’র সমর্থনে সরকার গঠন করে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হন মায়াবতী। তার পর থেকে সপার সঙ্গে তাঁর দল বহুজন সমাজ পার্টি (বসপা)-র সম্পর্ক সাপে-নেউলে।
এ দিনের সভায় তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মতো মুলায়ম সিং যাদব ভন্ড দলিত নেতা নন। দেশের সামনে ভয়ঙ্কর ভবিষ্যতের কথা ভেবেই আমরা দীর্ঘদিন বাদে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। এই দীর্ঘ সময়ে মুলায়মজিরও অনেক পরিবর্তন হয়েছে। তিনি মানুষের জন্য, বিশেষ করে মেয়েদের জন্য একাধিক উন্নয়ন মূলক কাজ করেছেন”।
অন্য দিকে মায়বতীকেও সাদরে স্বাগত জানান মুলায়ম। তিনি দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দেন, মায়াবতীর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতেও। তিনি বলেন, “মায়াবতীজিকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। আমি চিরকাল তাঁকে শ্রদ্ধা করে এসেছি”।