আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে জোট বাঁধতে চলেছেন অখিলেশ-মায়াবতী। তবে সেই জোটে কংগ্রেসকে সামিল করতে চাইছেন না তাঁরা। জানা গিয়েছে, আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যেই আসন সমঝোতা চূড়ান্ত করতে চাইছে বিএসপি ও সমাজবাদী পার্টি।
সূত্রের খবর, শুক্রবার দুই দলের সুপ্রিমো দিল্লিতে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন৷ সেই বৈঠকে আসন বণ্টন নিয়ে সমঝোতায় আসে সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টি৷ ঠিক হয়েছে, দুই দলই সমসংখ্যক আসনে লড়াই করবে৷আগামী ১৫ জানুয়ারির পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
জানা গিয়েছে,৭০টি লোকসভা আসনের মধ্যে মাত্র ২টি তারা কংগ্রেসকে ছাড়তে রাজি হয়েছে৷ যার একটি হল রায়বেরিলি ও আমেথি৷ দুটি আসনই কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত৷ অন্যদিরে সপা ও বসপা দুই দলই ৩৭ করে মোট ৭৪টি আসনে লড়াই করবে৷ বাকি ছ’টি আসন ছাড়া হয়েছে কংগ্রেস সহ অন্যান্য বিরোধীদের৷ এর মধ্যে মথুরা থেকে মথুরা কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে লড়াই করবে রাষ্ট্রীয় লোকদলের নেতা অজিত সিংয়ের ছেলে জয়ন্ত চৌধুরী৷ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই জোট যদি হয় তা হলে বিজেপির পক্ষে খুব একটা শুভ সঙ্কেত নয়। এমনিতেই বিধানসভা নির্বাচনে হেরে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল অখিলেশের। মায়াবতীর দলও সে ভাবে আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না সে রাজ্যে। বিজেপিকে ধাক্কা দিতে তাই দু’দলই মরিয়া। নিজেদের শক্তিপ্রদর্শন করতে লোকসভা নির্বাচনকেই তাই বেছে নিতে চাইছেন অখিলেশ-মায়া। বিজেপিকে একা ধাক্কা দেওয়া যে সম্ভব নয় সেটা দু’দলের শীর্ষ নেতৃত্ব ভাল ভাবেই জানেন। তাই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে এ বার পরস্পরের হাত সঙ্গে হাত মেলানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন অখিলেশ-মায়াবতী।
২০১৭-র বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ৩১২টি আসন পেয়ে ক্ষমতায় আসে বিজেপি। তাদের মোট প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল ৩৯.৬৭ শতাংশ। অন্য দিকে, এসপি পেয়েছিল ৪৭টি আসন। তাদের প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল ২১.৮২ শতাংশ। বিএসপি পেয়েছিল ১৯টি আসন। তাদের প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল ২২.২৩ শতাংশ। বিধানসভা ভোটের ফলের দিকে যদি তাকানো যায়, তা হলে দেখা যাবে, এসপি ও বিএসপি-র মোট প্রাপ্ত ভোটের হার ৪৫.০৫ শতাংশ। ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনের দু’দলের মোট প্রাপ্ত ভোটের হার ৪২.১২। যেখানে বিজেপি একা পেয়েছিল ৪২.৬৩।বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ভাল ফল করলেও গোরক্ষপুর ও ফুল উপনির্বাচনে কিন্তু অখিলেশ-মায়াবতী জোটের কাছে ধরাশায়ী হয় বিজেপি। তাই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লোকসভা নির্বাচনে যদি অখিলেশ-মায়াবতী জোট বাঁধেন তা হলে কিন্তু বিজেপির ক্ষেত্রে চাপ অনেকটাই বাড়বে।আগামী ১৫ জানুয়ারি মায়াবতীর জন্মদিন। ওই দিনে উপস্থিত থাকতে পারেন অখিলেশ। জানা যাচ্ছে, বুয়ার জন্মদিন অনুষ্ঠানেই চূড়ান্ত হয়ে যাবে আসন সমঝোতার অঙ্ক।
কংগ্রেসের সঙ্গে যে জোটে যাবেন না অখিলেশ, ইঙ্গিতটা মিলেছিল মধ্যপ্রদেশে সরকার গঠনের পর। অখিলেশ চেয়েছিলেন, মধ্যপ্রদেশে তাঁর দলের বিধায়ককে কোনও মন্ত্রিত্ব দেওয়া হোক। কিন্তু তা করেনি কংগ্রেস। আর তাতেই নাকি ক্ষুব্ধ হন অখিলেশ। তিনি উষ্মা প্রকাশ করে জানান, মধ্যপ্রদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পৌঁছতে তাঁর দল যথেষ্ট সহযোগিতা করেছে কংগ্রেসকে। কিন্তু তার পরেও কথা রাখেনি তারা। সপা-র বিধায়ককে মন্ত্রিত্ব না দিয়ে যে কংগ্রেস নিজের ক্ষতিই করল সেই ইঙ্গিতও দেন অখিলেশ। সেই সময় তিনি বলেন, ‘আমাদের বিধায়ককে মন্ত্রিত্ব না দিয়ে উত্তরপ্রদেশে নিজেদের পথটা পরিষ্কার করে দিল কংগ্রেস।’প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রাজ বব্বর রাজ্যে জোট গঠন নিয়ে আশা প্রকাশ করেছিলেন৷ জানিয়েছিলেন, রাজ্যে মহাজোট তৈরি নিয়ে কংগ্রেস আশাবাদী৷