Site icon The News Nest

‘ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতা নেই’, সংখ্যালঘু নিগ্রহ সম্পর্কে মার্কিন রিপোর্ট উড়িয়ে দিল বিদেশ মন্ত্রক

indian

#নয়াদিল্লি: ভারতে সংখ্যালঘুরা এখনও হিন্দু জাতীয়তাবাদীদের হাতে আক্রান্ত হয়ে চলেছেন বলে মার্কিন কংগ্রেসে যে রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে, তাকে খারিজ করে দিল বিদেশ মন্ত্রক। বলা হল, ভারতে নাগরিকদের অবস্থা কেমন, তা নিয়ে বিদেশিদের বলার কোনও এক্তিয়ার নেই। এর আগে কেন্দ্রে শাসক দল বিজেপির তরফেও ওই মার্কিন রিপোর্টকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ তকমা দেওয়া হয়েছিল।

শনিবার বিজেপির পক্ষ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওই রিপোর্টের প্রতিবাদ করা হয়। এবার প্রতিবাদ এল খোদ বিদেশ মন্ত্রক থেকে। মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার রবিবার বলেন, বিদেশি কোনও সংস্থার এদেশের মানুষদের সম্পর্কে এই ধরনের ধারনার ভিত্তি নেই।  তিনি বলেন, “ভারত ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। এই দেশ তার ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য গর্ব বোধ করে। ভারতের সংবিধানেই লেখা রয়েছে, প্রত্যেকের মৌলিক অধিকার সমান। সে সংখ্যাগুরুই হোক, আর সংখ্যালঘু।” তিনি আরও বলেন, “এটা গোটা বিশ্ব জানে, যে ভারত একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এবং তার সংবিধান সবাইকে ধর্মীয় স্বাধীনতা দেয়। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত সরকার মানুষের সেই স্বাধীনতা রক্ষায় বদ্ধপরিকর। আমাদের দেশ সহনশীলতার নীতিতে বিশ্বাসী।”

কেন্দ্রের বিজেপি সরকারও এই রিপোর্টের বিরোধিতা করে তাকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে মন্তব্য করেছে। শনিবার বিজেপি সাংসদ ও মিডিয়া প্রধান অনিল বালুনি একটি বিবৃতি দিয়ে বলেন, “এই রিপোর্টের প্রধান বিষয় হিসাবে বলে হয়েছে যে সংখ্যালঘুদের উপর পরিকল্পনামাফিক অত্যাচার করা হয়েছে গত এক বছরে। এই কথা সম্পূর্ণ ভুল এবং মিথ্যে। বরং এর উল্টোদিকে গত এক বছরে যে সব সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে, সেগুলি সবই ব্যক্তিগত ও স্থানীয় গণ্ডগোল। এর সঙ্গে কোনও ভাবেই ধর্ম যুক্ত নয়।”

অনিল আরও বলেন, “ভারতের সংবিধানই তো ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে। আমাদের সরকার গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, সবকা সাথ সবকা বিকাশ। দুঃখজনকভাবে এই সব বিষয়গুলো রিপোর্টে কোনও জায়গা পায়নি।”

আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট প্রতি বছর গোটা পৃথিবী জুড়ে বিভিন্ন দেশের ধর্মীয় স্বাধীনতাকে নিয়ে একটি রিপোর্ট পেশ করে। এই রিপোর্টের নাম, “রিপোর্ট অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম”। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘‘২০১৭ সালেও ভারতে নাগরিকদের ধর্মীয় স্বাধীনতার অবনমনের ধারা অব্যাহত ছিল। ভারতের মতো একটি বহু ধর্ম ও বহু সংস্কৃতির দেশে ওই ঘটনা আগের চেয়ে আরও বেড়েছে। ধর্মের সঙ্গে জাতীয়তাবাদকে মিশিয়ে দেওয়ার ঘটনা বেড়েছে। ‘গৈরিকীকরণে’র লক্ষ্যে অ-হিন্দু ও হিন্দু দলিতদের বিরুদ্ধে হিন্দু জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী ও সংগঠনগুলি হিংসা, হুমকি ও হেনস্থার ঘটনা ওই বছরে আরও বাড়িয়েছে। ধর্মীয় স্বাধীনতা আরও বেশি ক্ষুণ্ণ হওয়ার ঘটনা সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ভারতের ১০টি রাজ্যে। তাদের মধ্যে রয়েছে, উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার, ছত্তীসগঢ়, গুজরাত, ওড়িশা, কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও রাজস্থান।’’

Exit mobile version