Site icon The News Nest

ভার বইতে অপারগ, চিরতরে বিশ্রামে গেল হৃষীকেশের সুবিখ্যাত ঝুলন্ত সেতু লছমনঝুলা

laxman jhula

#হৃষীকেশ: পর্যটক বিশেষত বাঙালি পর্যটকদের কাছে অন্যতম জনপ্রিয় হৃষীকেশের লছমনঝুলা সেতু। সেই ঝুলন্ত সেতুটিই এ বার বন্ধ করে দিল উত্তরাখণ্ড সরকার। সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, সেতুতে এমন ক্ষতি হয়েছে, যা সারিয়ে তোলা যাবে না। দীর্ঘ ৯৬ বছর অক্লান্ত পরিষেবা দেওয়ার পর চিরতরে বিশ্রামে গেল হৃষীকেশের সুবিখ্যাত ঝুলন্ত সেতু লছমনঝুলা। শুক্রবার থেকে সেতুর ওপর দিয়ে সমস্তরকম যান চলাচলের পাশাপাশি বন্ধ করে দেওয়া হল পর্যটকদের যাতায়াতও। সেতুটি আর সারানো সম্ভব নয় বলেও  জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

উত্তরাখণ্ড রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব ওম প্রকাশ জানিয়েছেন, বিশেষজ্ঞদের একটি দলের পরামর্শেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে লছমনঝুলা, কারণ সেতুটির অধিকাংশ অংশই ‘ফেল’ অথবা ‘কোল্যাপ্স’ অবস্থায় রয়েছে। শুধু যানবাহন নয়, পথচারীদের জন্যও বন্ধ হয়ে গেল লছমনঝুলা। এমনটাই নিদান দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা, কারণ আর বিন্দুমাত্রও ভার বইতে পারছে না এই সেতু, জানিয়েছেন ওম প্রকাশ।

গত ৫ জুলাই বেসরকারি একটি সংস্থাকে দিয়ে এই সেতুর ওপরে একটি সমীক্ষা করায় উত্তরাখণ্ড সরকার। লছমনঝুলার সঙ্গে তার পাশের রামঝুলাও পরিদর্শন করে তারা। এর পরে তারা যে রিপোর্ট জমা দেয়, তাতেই যেন দুঃখের অন্ত নেই হৃষীকেশের স্থানীয় বাসিন্দা এবং পর্যটকদের মধ্যে। রিপোর্টে বলা হয়, লছমনঝুলা অবিলম্বে বন্ধ করে দিতে হবে। অন্য দিকে রামঝুলাটি মেরামত করে শুধুমাত্র হাঁটার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। ওই সেতু দিয়ে দু-চাকার যানবাহনের অনুমতি দেওয়া হবে না।১৯২৪ সালে এই সেতু তৈরি শুরু হয়। এর ছ’বছর পর সাধারণ মানুষের জন্য তা খুলে দেওয়া হয়। উত্তরাখণ্ড পিডব্লিউডির অবসরপ্রাপ্ত এক আধিকারিক বলেন, “প্রথমে এই সেতুর ওপরে প্রতি বর্গ মিটারে সর্বোচ্চ ২৫০ কিলো ওজন নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিল ভারত সরকার। কিন্তু ২০১০-এ তা বাড়িয়ে ৪০০ কিলো করে দেওয়া হয়। অতিরিক্ত ওজন বহনের এই অনুমতি দেওয়ার জন্যই এই সেতুর বড়ো ক্ষতি করে দিয়ে গেল।”

যোগাসন এবং তপস্যার জন্য খ্যাত হৃষীকেশের অতি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রও বটে। লছমনঝুলার একদিকে, অর্থাৎ গঙ্গার পশ্চিম পাড়ে, তেহরি জেলার তপোবন গ্রাম, অন্যদিকে পাউরি জেলার জঙ্ক। শহরে পর্যটক হোন বা তীর্থযাত্রী, তাঁদের কাছে অন্যতম প্রধান আকর্ষণগুলির একটি অবশ্যই লছমনঝুলা। সেতুর নামকরণ করা হয় লক্ষণের নামে, কারণ কথিত আছে, পাটের দড়ির সাহায্যে এই জায়গা দিয়েই নদী পেরোন তিনি।বহু সফল হিন্দি ছবি, যেমন ‘গঙ্গা কি সৌগন্ধ’ বা ‘সন্ন্যাসী’, অথবা ‘সিআইডি’-র মতো জনপ্রিয় সিরিয়ালের শুটিং হয়েছে লছমনঝুলায়।  তবে পর্যটকরা আর উপভোগ করতে পারবেন না লছমনঝুলার রোমাঞ্চ। এরপর থেকে কেবল ইতিহাসের পাতাতেই ঠাঁই পেতে চলেছে দেবভূমি উত্তরাখণ্ডের সুবিখ্যাত পর্যটনের অন্যতম আকর্ষণ লক্ষ্মণঝোলা।

Exit mobile version