কলকাতা: মাস দুয়েকের মধ্যেই বদলে গেল কলকাতার পুলিস কমিশনার। নির্বাচন কমিশন সরিয়ে দিল কলকাতা পুলিসের বর্তমান কমিশনার অনুজ শর্মাকে। এছাড়াও বিধাননগর কমিশনারেটের প্রধান জ্ঞানবন্ত সিং-কেও সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। একই সঙ্গে বীরভূম এবং ডায়মন্ড হারবারের এসপিকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অনুজ শর্মার জায়গায় কলকাতার নতুন সিপি পদে আসছেন ডঃ রাজেশ কুমার। অন্যদিকে বিধাননগরের কমিশনার পদে আসছেন এন রমেশ বাবু। বীরভূমের নতুন পুলিশ সুপার হচ্ছেন অভাণ্যু রবীন্দ্রনাথ। অন্যদিকে, ডায়মন্ড হারবারের এসপি পদে আসছেন শ্রীহরে পাণ্ডে। কমিশনের তরফ থেকে বিবৃতি দিয়ে একথা জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে এই চার পুলিশ আধিকারিককে আর ভোটের কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
অনুজ শর্মা এবং জ্ঞানবন্ত সিং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ট বলে অভিযোগ করেন বিরোধীরা। এমনকী সম্প্রতি কলকাতা পুলিশ বনাম সিবিআই দ্বন্দ্বের সময়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধরনা মঞ্চেও দেখা গিয়েছিল এদের। সম্প্রতি বিমানবন্দরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রীকে শুল্ক দপ্তর তল্লাশির জন্য আটক করে।তখনও অতিসক্রিয়তা দেখিয়ে তাঁকে উদ্ধার করার অভিযোগ ওঠে জ্ঞানবন্ত সিংয়ের বিরুদ্ধে।কমিশন সূত্রে খবর, কলকাতার পুলিস কমিশনার ও বিধাননগরের কমিশনারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধীরা। সেই সব অভিযোগ খতিয়ে দেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, যাঁদের নাম ঘোষণা হল, তাঁদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিয়োগ করতে হবে।
নির্বাচন কমিশনের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এ ব্যাপারে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল অবশ্য এখনও দলীয় তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তবে ঘরোয়া আলোচনায় দলের নেতারা স্বীকার করছেন, কমিশনের তরফে এমন পদক্ষেপের আশঙ্কা তাঁদের ছিলই। গোটা ঘটনায় মুকুল রায়ের বড় ভূমিকা রয়েছে বলেও মনে করছেন তৃণমূলের অনেকে। কারণ, কলকাতা ও রাজ্য পুলিশের এই অফিসারদের বিরুদ্ধে লাগাতার কমিশনের কাছে গিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন মুকুলবাবু। তাঁর স্পষ্ট অভিযোগ, ছিল এঁদের তত্ত্বাবধানে ভোট হওয়ার চেয়ে, না হওয়া ভাল। সেক্ষেত্রে কমিশন বরং ভোট না করিয়েই তৃণমূলের প্রার্থীদের সার্টিফিকেট দিয়ে দিক।