Site icon The News Nest

ভোট- বিপর্যয়, আগামী একমাস কোনও টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নেবে না কংগ্রেস

raga

#নয়াদিল্লি: আগামী এক মাস কোনও টেলিভিশন চ্যানেলের কোনও বিতর্ক অনুষ্ঠানেই দলের কোনও প্রতিনিধি বা মুখপাত্রকে পাঠাবে না কংগ্রেস। লোকসভা ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর দলের সভাপতি পদ থেকে রাহুল গান্ধী ইস্তফা দিতে চাওয়ায় যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, তার প্রেক্ষিতেই কংগ্রেসের এই সিদ্ধান্ত। কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বৃহস্পতিবার তাঁর টুইটে এই কথা জানিয়েছেন। রণদীপ লিখেছেন, ‘‘সব টেলিভিশন চ্যানেল-কর্তৃপক্ষ ও সম্পাদকদের অনুরোধ জানানো হচ্ছে, তাঁরা যেন তাঁদের কোনও শো-য়ে কংগ্রেসের কোনও প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ না জানান।’’

সদ্য শেষ হওয়া  লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ফল খুবই খারাপ হয়েছে। দেশের ১৭টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে তারা খাতাই খুলতে পারেনি। অন্যদিকে মাত্র কয়েক মাস আগে যে মধ্যপ্রদেশ রাজস্থান এবং  ছত্রিশগড় বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস জিতেছিল সেখানেও তাদের ফল হয়েছে খুবই খারাপ। বছর দেড়েক আগে গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে অভূতপূর্ব লড়াই দিয়েছিল কংগ্রেস। জিততে না পারলেও বিজেপির কাজ খুবই কঠিন করে দিতে পেরেছিল টিম রাহুল। কিন্তু এবার সেই গুজরাটেও ভরাডুবি হয়েছে কংগ্রেসের।

গোটা দেশের প্রায় সমস্ত এলাকায় বিরোধীদের কার্যত নাস্তানাবুদ করে সাড়ে তিনশোর কাছাকাছি আসন নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে এনডিএ। তার মধ্যে বিজেপি একাই   পেয়েছে ৩০৩টি আসন। দলের পরাজয়ের পাশাপাশি নিজের দেড় দশকের ‘কর্মভূমি’ অমেঠীতেও পরাজিত হয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি। এরপর থেকেই পদ ছাড়ার ব্যাপারে অনড় রাহুল। এবার কেরালার একটি কেন্দ্র থেকেও নির্বাচনে লড়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে তিনি জেতেন। যদি সেই আসন থেকে না লড়তেন তাহলে লোকসভায় যাওয়াই হত না কংগ্রেস সভাপতির। এমনই অবস্থায় দলের মধ্যে বহু প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে। একেবারে শুরু থেকে গান্ধী-নেহেরু পরিবারের প্রতি আনুগত্য দেখান কংগ্রেস মনে করছে নেতৃত্বের বদল প্রয়োজন। একটা বড় অংশ গান্ধী পরিবারের নেতৃত্ব নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছে। বিভিন্ন রাজ্যের নেতাদের বলতে শোনা গিয়েছে নেতৃত্বে বদল করা না গেলে কংগ্রেসের পক্ষে আগামী দিনে ঘুরে দাঁড়িয়ে বিজেপিকে টক্কর দেওয়া কার্যত অসম্ভব। এমনই জটিল পরিস্থিতিতে বিতর্ক যাতে আর না বাড়ে তার জন্য আগামী একমাস সমস্ত টেলিভিশন বিতর্ক থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিল দেশের সবচেয়ে পুরনো রাজনৈতিক দল।

ভোটের ফল প্রকাশের পর দিন ঠিক একই কাজ করেছিলেন অখিলেশ যাদব। উত্তরপ্রদেশের এই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং সমাজবাদী পার্টির প্রধান বলেন তাঁর দলের নেতারাও এখন কোনও টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নেবেন না। কংগ্রেস নেতাদের একাংশ বলছেন, এর দু’টি কারণ থাকতে পারে। এক, দলের নেতাদের সংবাদমাধ্যমের উপর পুরোপুরি নির্ভরতার অভ্যাস থেকে বের করে আনার চেষ্টা। মানুষের কাছে না গিয়ে শুধুই টেলিভিশন চ্যানেলের বিতর্কে হাজির হয়ে সহজে কিস্তিমাত করার যে প্রবণতা রয়েছে রাজনীতিকদের, দলের এই অপ্রত্যাশিত বিপর্যয়ের পর, তা বন্ধ করারও চেষ্টা হতে পারে এই সিদ্ধান্ত। দুই, যে মানুষের রায়ে যে ভাবে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফিরে এসেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে এনডিএ সরকার, তাতে এখনই টেলিভিশন চ্যানেলের বিতর্কে হাজির হয়ে কোনও কংগ্রেস নেতা তার বিরোধিতা করা শুরু করলে অন্য বার্তা যাবে ভোটারদের কাছে।

Exit mobile version