#হলদিয়া: রাজ্যে ফণী পরিস্থিতি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দুবার ফোন করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু সাড়া দেননি তৃণমূল নেত্রী। হলদিয়ার সভায় এনিয়ে আক্ষেপ করলেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর কটাক্ষ, ঘূর্ণিঝড় নিয়ে রাজনীতি করছেন মমতা।
এ দিনের সভায় মোদী বলেন, “রাজ্য বলছে, আমি যোগাযোগ করিনি। আমি দু’বার ফোন করেছিলাম। কিন্তু মমতার এত দম্ভ, এত অহঙ্কার, তিনি ফোন ধরেননি।” এরপরে সোমবার রাজ্যের সঙ্গে মোদীর যে বৈঠকের কথা ছিল, সেটাও তুলে আনেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমি আজকেও রাজ্যের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম। রাজ্য প্রশাসনের কাছ থেকে সবটা বুঝতে চেয়েছিলাম। কিন্তু স্পিডব্রেকার দিদি সেটা হতে দেয়নি।” তিনি অভিযোগ করেন, ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয় নিয়েও রাজনীতি করছেন মমতা। তবে এত কিছুর পরেও যে কেন্দ্র রাজ্যকে সম্পূর্ণভাবে সাহায্য করবে, সেই আশ্বাসও দেন মোদী।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “আমি ফের দ্বিতীয় বার ফোন করি মমতাদিদিকে। বাংলার মানুষের জন্য আমি চিন্তায় ছিলাম। সে জন্য মমতাদিদির সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম। কেন না উনি এখানকার মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু দিদি দ্বিতীয় বারেও আমার সঙ্গে কথা বলেননি।’’মোদী এর পর উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘‘ভেবে দেখুন, রাজনীতি নিয়ে কতটা চিন্তিত উনি। অথচ বাংলার মানুষের জন্য তাঁর কোনও মাথাব্যথা নেই। দেশের মানুষের মঙ্গল নিয়ে রাজনীতি করলে চিরকালই দেশের ক্ষতি হয়েছে। দিদির এমন আচরণের জন্য বাংলার বিকাশে ব্রেক লেগে রয়েছে।”
উল্লেখ্য, শুক্রবার খড়্গপুরে কার্যত কন্ট্রোল রুম খুলে ঘূর্ণিঝড় ফণীর বিপর্যয় মোকাবিলায় বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেই রাজ্যের তরফে অভিযোগ করা হয়, কেন্দ্রের তরফে যোগাযোগ করা হয়নি। তাই যা ব্যবস্থা করতে হয়েছে, সব রাজ্যকেই। রাজ্য সরকারকে ফোন না করে সরাসরি রাজ্যপালকে ফোন করে যুক্তরাষ্ট্রীয় ন্যায়–নীতি লঙ্ঘন করেছেন মোদী, এই অভিযোগ তোলা হয় তৃণমূলের পক্ষ থেকে। রবিবার রাজ্যের দাবি খারিজ করে পিএমও জানিয়ে দেয়, দু’বার ফোন করেও মমতার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, ফণী হওয়ার পর থেকে যে নির্বাচনী সভায় মমতা গিয়েছেন, সেখানেই নিজের কৃতিত্বের কথা বলেছেন। এই বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য রাজ্য সরকার ও প্রশাসন যেভাবে প্রস্তুত ছিল, তার খতিয়ান দিয়েছেন। উল্টোদিকে তৃণমূলের তরফে এটা বোঝানোর চেষ্টা হয়েছে, এই বিপর্যয়ের সময় হাত গুটিয়ে বসে ছিল কেন্দ্র। কোনও রকমের সাহায্য তো আসেইনি, বরং মমতাকে টপকে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে যোগাযোগ করে যুক্তরাষ্ট্রীয় ন্যায়-নীতি লঙ্ঘন করেছেন মোদী। তাই এ দিনের সভায় রাজ্যের সেই দাবিকে নস্যাৎ করে মোদী বোঝানোর চেষ্টা করলেন, সব বিষয়কে রাজনীতির মধ্যে টেনে আনছেন মমতা। মোদী বোঝাতে চাইলেন, কেন্দ্রের ফোন না ধরে একদিকে যেমন নিজের অহঙ্কারি মনোভাবের পরিচয় দেখাচ্ছেন মোদী, তেমনই রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে কেন্দ্রকে দুষে সাধারণ মানুষকে ভুলও বোঝাচ্ছেন। উল্টোদিকে সাধারণ মানুষের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে মানুষের মন জয় করার চেষ্টাতেও কোনও কসুর রাখলেন না তিনি।