মহাকাশ অভিযানের নবযুগ! ভোররাতে উড়বে চন্দ্রযান-২, চলছে লাস্ট মিনিট কাউন্টডাউন

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

#নয়াদিল্লি: শুরু হয়ে গিয়েছে লাস্ট মিনিট কাউন্টডাউন। ইসরোর ‘চন্দ্রযান-২’ রওনা হচ্ছে সোমবার ভোর রাতে। যাচ্ছে চাঁদের সেই দক্ষিণ মেরুর মুলুকে, যেখানে এর আগে নামতে পারেনি আর কোনও দেশ। ভারতের এই পদক্ষেপ তাই বিশ্বে প্রথম।

রবিবার নির্ধারিত ভারতীয় সময় রাত ২টো ৫১ মিনিটে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতিশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে ভারতের মাটি ছেড়ে উড়ে যাবে দ্বিতীয় চন্দ্রযান ‘ফ্যাট বয়’। যার গর্ভে থাকবে অরবিটর, বিক্রম ল্যান্ডার ও প্রজ্ঞান রোভার। ওড়ার ১৬ মিনিটের মাথায় পৃথিবীর নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছবে ফ্যাট বয়। তেলুগু সংবাদমাধ্যমে যে ইতিমধ্যে বাহুবলী তকমা পেয়েছে। ভারতের আগে মাত্র তিনটি দেশ রোভার পাঠাতে পেরেছে চাঁদে। রাশিয়া (সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন), আমেরিকা ও চিন। ইসরো সূত্রের খবর, উৎক্ষেপণের প্রায় দেড় মাস পর সেপ্টেম্বরে (৫ গভীর রাত ও ৬ ভোর রাতের মধ্যে) চাঁদের পিঠে পা ছোঁয়াবে ল্যান্ডার ‘বিক্রম’। নামার সঙ্গে সঙ্গেই সেই ল্যান্ডার থেকে বেরিয়ে আসবে খুবই ছোট একটি রোভার ‘প্রজ্ঞান’। যার ওজন মাত্র ২০ কিলোগ্রাম। আর চন্দ্রযান-২-এর সার্বিক ওজন ৩ হাজার ৮৫০ কিলোগ্রাম। ল্যান্ডারটি নেমে আসার সময় চন্দ্রযান-২-এর অরবিটারটি চাঁদের পিঠ (লুনার সারফেস) থেকে থাকবে মাত্র ১০০ কিলোমিটার উপরে।

চন্দ্রযান-২ পাঠানোর উদ্দেশ্য, চাঁদের পিঠের বালিকণায় মিশে রয়েছে কোন কোন মৌল ও খনিজ পদার্থ আর তা রয়েছে কী পরিমাণে, তা জানা। সেই মৌল বা খনিজগুলি নিষ্কাশনের যোগ্য কি না, তা যাচাই করা। যে স্বপ্নটা প্রথম দেখেছিলেন ভারতের প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালাম।ভারতের প্রথম চন্দ্রাভিযান হয়েছিল ২০০৮ সালে। চাঁদের কক্ষপথে গিয়েছিল চন্দ্রযান-১। চাঁদে জলের অন্যতম উপাদান হাইড্রক্সিল আয়নের হদিশ দিয়েছিল চন্দ্রযান-১।

দ্বিতীয় যে চন্দ্রাভিযানের সূত্রে মহাকাশ বিজ্ঞানে নতুন শিখর ছুঁতে চাইছে ভারত, তার কান্ডারি দুই মহিলা—মুথায়া বনিতা এবং রীতু কারিঢাল। বনিতা এই অভিযানের প্রজেক্ট ডিরেক্টর। রীতু উৎক্ষেপণের মিশন ডিরেক্টর। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ইসরো) অন্দরে বনিতাই একমাত্র মহিলা প্রজেক্ট ডিরেক্টর। ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার বনিতা এই গোটা অভিযানের মাথায়। ইসরোর অন্দরের খবর, রাশি রাশি তথ্য বিশ্লেষণের দায়িত্ব ঠান্ডা মাথায় ও হাসিমুখে সামলান এই দক্ষিণী মহিলা। ২০১৯ সালে ‘নেচার’ পত্রিকার সেরা বিজ্ঞানী পুরস্কারও পেয়েছেন। তার আগে ২০০৬ সালে আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান সংস্থারও পুরস্কার পেয়েছিলেন। ইসরোর সূত্র বলছে, বনিতা নিভৃতচারিণী। কোনও দিনই সে ভাবে প্রকাশ্যে আসেন না।এই অভিযানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় করা এবং উৎক্ষেপণের দায়িত্ব রীতুর। লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার প্রাক্তন ছাত্রী এবং পরবর্তী কালে বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সের এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এই প্রাক্তনীকে যাঁরা চেনেন, তাঁরা একবাক্যে বলেন, শান্তশিষ্ট স্বভাবের রীতু কাজের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত ‘পারফেকশনিস্ট’। ঘণ্টার পর ঘণ্টা নাগাড়ে কাজ করে যেতে পারেন।

image
মুথায়া বনিতা, রীতু কারিঢাল, চন্দ্রকান্ত কুমার।

দ্বিতীয় চন্দ্রাভিযানের অনেকটাই এ বার সামলাচ্ছেন প্রমীলা বাহিনী। সিনিয়র-জুনিয়র মিলিয়ে সংখ্যাটা প্রায় ত্রিশের কাছাকাছি হবে। ছেলেরাও পিছিয়ে নেই। সেই পুরুষ বাহিনীতে রয়েছেন এক বঙ্গসন্তান— হুগলির চন্দ্রকান্ত কুমার। ইসরো জানিয়েছে, এই চন্দ্রযানের তিনটি অংশ— অরবাইটার, ল্যান্ডার (এটি চাঁদের মাটিতে নামবে। ইসরোর প্রাণপুরুষ বিক্রম সারাভাইকে সম্মান জানিয়ে এর নাম রাখা হয়েছে বিক্রম) এবং রোভার (স্বয়ংক্রিয় গাড়ি। নাম প্রজ্ঞান)। এই তিনটি অংশে মোট তেরোটি যন্ত্র রয়েছে। চাঁদের ভূমিরূপ, আবহাওয়া, ভূকম্প, মাটি ও বায়ুমণ্ডলের রাসায়নিক সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করবে এবং সেই তথ্য পাঠিয়ে দেবে ইসরোর বিজ্ঞানীদের কাছে। যে তথ্য আসবে এবং ইসরোর নির্দেশ যে ভাবে চন্দ্রযানে পৌঁছবে, তার যাবতীয় প্রযুক্তির সঙ্গে জুড়ে রয়েছেন চন্দ্রকান্ত। এই প্রকল্পের অন্যতম ডেপুটি ডিরেক্টর পদে রয়েছেন তিনি।

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest