বেঙ্গালুরু: পুলওয়ামা হামলা থেকে এয়ার স্ট্রাইক-সবটাইএখন রাজনীতির ইস্যু। তবে এই ইস্যু থেকে বিজেপি যে হাতে গরম ফল পেতে চাইছে তাতে বিশেষ সন্দেহ নেই। বিরােধীরাও সে কারণেই বােঝাতে চাইছেন সবটাই মােদি সরকারের রাজনীতির ফাঁদ। শনিবার কর্ণাটকের হাভেরিতে এক সমাবেশে জঙ্গি হামলা নিয়ে মােদীকে নিশানা করেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন, ‘সাহস থাকলে দেশবাসীর সামনে মুখ খুলুন মােদী। ভারতের হাতে থাকা মাসুদ আজহারকে বিজেপি সরকারই যে ছেড়ে দিয়েছিল,সে কথা সকলের সামনে বলে দেখান।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপি কনভয়ে হামলা চালায় জইশ। তাতে প্রাণ হারান ৪০ জওয়ান। এর পর থেকে উপত্যকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। কাশ্মীর নিয়ে সরকারের অবস্থানের সমালোচনা করছেন। অন্য দিকে বিরোধীদের পাকদরদী বলে পাল্টা আক্রমণ করেছে সরকার।এ দিন এই প্রেক্ষিতে সরাসরি নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করেন রাহুল। তিনি বলেন, “মোদীজির জন্য ছোট্ট প্রশ্ন। কাশ্মীরে সিআরপি জওয়ানদের হত্যার জন্য কে দায়ী? জইশ-ই-মহম্মদ নেতার নাম কী, মাসুদ আজহার। ১৯৯৯ সালে তত্কালীন বিজেপি সরকার যাকে ভারতের জেল থেকে বার করে আফগানিস্তানের কন্দহর হয়ে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দিয়েছিল।’’ রাহুলের অভিযোগ, জঙ্গি হামলা নিয়ে বিরোধীদের তুলোধনা করলেও, মাসুদ আজহারকে নিয়ে এখনও পর্যন্ত একটা কথাও বলেননি নরেন্দ্র মোদী।
এদিন জইশ-ই-মহম্মদ চাঁই মৌলানা মাসুদ আজহারের নাম করে রাহুল বলেন, ‘মােদীজি শুধু আমাকে একটা কথা বুঝিয়ে বলুন। ভারতের জেল থেকে মাসুদ আজহারকে পাকিস্তানে পাঠিয়েছিল কারা?’ প্রধানমন্ত্রীর দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে রাহুল বলেন, ‘মাসুদ আজহারকে নিয়ে কথা বলছেন না কেন? মানুষকে কেন জানতে দিচ্ছেন না যে, পুলওয়ামায় জওয়ানদের হত্যাকারী ওই ব্যক্তিকে বিজেপি সরকারই পাকিস্তানের হাতে ছেড়ে দিয়েছিল? তাই মাসুদকে কারা ছেড়ে দিয়েছিল, সাধারণ মানুষের সামনে তা বলে দেখান।’
উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে পাক জঙ্গিরা নেপালগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমানকে তাপহরণ করে। সেটিকে কান্দাহার উড়িয়ে নিয়ে যায় জঙ্গিরা। এরপর শুরু হয় দর কষাকষি। যাত্রীদের বাঁচাতে শেষপর্যন্ত ভারতের জেলে বন্দি মাসুদ আজহার সহ কয়েকজন জঙ্গিকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় তৎকালীন বিজেপি সরকার। বালাকোটে বায়ুসেনার বােমাবর্ষণের পরে মােদী সরকার দাবি করে, তারা সন্ত্রাসবাদের সামনে কখনও মাথা নত করে না। রাহুল তার পালটা বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও জইশই-মহম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারের একসঙ্গে তােলা ছবি এখনও ইন্টারনেটে পাওয়া যাবে। সরাসরি মােদীকে সম্বােধন করে রাহুল বলেন,’ আমরা আপনাদের মতাে নই। আমরা সন্ত্রাসবাদের সামনে মাথা নত করি না। আপনাদের বলতে হবে, কারা মাসুদকে ছেড়ে দিয়েছিল এবং কীভাবে ছেড়ে দিয়েছিল।’