‘মোদী কি সেনা’, সতর্ক করেই যোগীকে রেহাই দিল নির্বাচন কমিশন

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

নয়াদিল্লি: কয়েকদিন আগে গাজিয়াবাদে এক নির্বাচনী জনসভায় ভারতীয় সেনাকে ‘‌মোদিজির সেনা’ বলে‌ অভিহিত করেছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। যা নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল। তবে এজন্য কঠিন কোনও শাস্তির মুখে পড়তে হল না উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে। এ ধরনের বেফাঁস মন্তব্যের জন্য আদিত্যনাথকে কেবল সতর্ক করল নির্বাচন কমিশন। ভবিষ্যতে এ ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকারও নির্দেশ দিল।

গত মাসে নির্বাচন কমিশন জানিয়ে ছিল, আধুনিক গণতন্ত্রে সেনাবাহিনী অরাজনৈতিক ও নিরপেক্ষ শক্তি হিসাবে কাজ করে। তার কথা কোনওভাবেই নির্বাচনের প্রচারে টেনে আনা যাবে না। যদিও সে কথায় গুরুত্ব দিতে নারাজ গেরুয়া শিবির। প্রায় প্রতি নির্বাচনী ভাষণ পাকিস্তানকে দুরমুশ করে দেওয়ার কাহিনী শোনাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁরই পদাঙ্ক অনুসরণ করে

গত রবিবার গাজিয়াবাদে এক জনসভায় যোগী বলেন, ‘কংগ্রেস কি লোগ’ সন্ত্রাসবাদীদের বিরিয়ানি খাওয়ায়। মাসুদ আজহারের মতো জঙ্গিদের সম্মান দেখিয়ে ‘জি’ বলে সম্বোধন করে। কিন্তু মোদীজির সেনা তাদের কেবল গুলি আর গোলা খাওয়ায়। যোগীর দাবি, মোদীর আমলে জঙ্গিদের মেরুদণ্ড ভেঙে গিয়েছে। কারণ তাদের ঘাঁটিতেই আঘাত হেনেছে সেনাবাহিনী।তাঁর কথায়, কংগ্রেসের আমলে যা ছিল ‘না মুমকিন’ অর্থাৎ অসম্ভব, এখন তা সম্ভব হয়ে উঠেছে। মোদীর জন্যই অসম্ভব হয়েছে সম্ভব।

স্বাভাবিক ভাবেই যোগীর বক্তব্যকে ভাল ভাবে নেয়নি বিরোধীরা। ফুঁসে উঠেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এ ভাবে নির্লজ্জের মতো সেনাকে নিজের বলে মনে করা আসলে ভারতীয় সেনাবাহিনীকেই অপমান করা।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ভারতীয় সেনাকে নিয়ে আমরা গর্বিত। ওঁরা সবার জন্য। দেশের মানুষ এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে এবং এই মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করবে।’’  সেনার ‘অপমান’-এর পাশাপাশি কংগ্রেস আবার খোঁচা দিয়েছে যোগীর নাম পরিবর্তনের অভ্যেস নিয়েও। টুইটারে কংগ্রেসের জাতীয় মুখপাত্র প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদীর কটাক্ষ, ‘‘এবার ইন্ডিয়ান আর্মির নাম পাল্টে মোদী কি সেনা করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ। এটা সেনবাহিনীর অপমান। ওঁরা ভারতের সেনা। প্রচার সর্বস্ব মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। আদিত্যনাথকে ক্ষমা চাইতে হবে।’’ যোগী আদিত্যনাথকে তিনি মনে করিয়ে দেন, ১৯৯৯ সালে আইসি ৮১৪ নামে একটি বিমান ছিনতাই হওয়ার পরে মাসুদ আজহারকে বিজেপিই ছেড়ে দিয়েছিল। প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদীর কথায়, মনে রাখতে হবে, এখন যিনি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, সেই অজিত দোভালই মাসুদকে ‘টেররিস্তানে’ ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নিয়েছিলেন।এমনকী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা প্রাক্তন সেনা কর্তা ভি কে সিং বলেছিলেন, ভারতীয় সেনা কোনও ব্যক্তি বিশেষের সম্পত্তি নয়। তা পুরো জাতির সম্পত্তি।

এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশনে অভিযোগ করেন প্রাক্তন নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল এল রামদাস। এই অভিযোগ পেয়ে বৃহস্পতিবার আদিত্যনাথকে শো-কজ করে কমিশন। আদিত্যনাথের জবাব পেয়ে কমিশন বলে দেয়, “ভবিষ্যতে নিজের বক্তব্যে লাগাম দেবেন।” কমিশনের পক্ষ থেকে আদিত্যানাথকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ভবিষ্যতে এই ধরনের মন্তব্য করার সময়ে সতর্ক থাকুন। কারণ ওইসব মন্তব্যে আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ হয়েছে। আর আপনি নিজে একটি গুরুত্বপূর্ণে পদে রয়েছেন। এই মন্তব্যের প্রভাব আপনার পদের উপরও পড়তে পারে।

 

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest