Site icon The News Nest

রাজ্যের প্রথম জেলাপরিষদ দখল করল বিজেপি, গেলেন কালচিনির বিধায়কও

bjp

#নয়াদিল্লি: এতদিন ছিল পুরসভা। এ বার আস্ত একটা জেলাপরিষদ দখল করতে চলেছে বিজেপি। সেই সঙ্গে তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছেন আরও এক বিধায়ক।

এ দিন দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে আনুষ্ঠানিক ভাবে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখান আলিপুরদুয়ারের কালচিনির বিধায়ক উইলসন চম্প্রমারি। সেই সঙ্গে এ দিন দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাপরিষদের ১০ জন সদস্য বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। ১৮ আসনের জেলাপরিষদের ১০ জন যোগ দেওয়ায় ওই জেলাপরিষদটি এ বার বিজেপির হয়ে গেল। অর্থাৎ, রাজ্যে প্রথম জেলাপরিষদ দখল করল বিজেপি।

উইলসন চম্প্রমারি ১০ বছর ধরে কাচলিনির বিধায়ক। ২০০৯ সালে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সমর্থিক নির্দল প্রার্থী হিসেবে কাচলিনি থেকে জেতেন তিনি। ২০১১ সালেও সে ভাবেই। ২০১৬ সালে সরাসরি তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে জেতেন। তিন বারের বিধায়ক এ বার তৃণমূল ছেড়ে দিলেন। নয়াদিল্লিতে বিজেপির সর্বভারতীয় সদর দফতরে হাজির হয়ে এ দিন গেরুয়া পতাকা হাতে তুলে নিলেন উইলসন। ফলে আলিপুরদুয়ার জেলার ৫ বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ২টির দখল নিল বিজেপি। চম্প্রমারির এই দলবদলের জল্পনা শুরু হয় শুক্রবার। আলিপুরদুয়ারে তৃণমূলের পর্যালোচনা বৈঠকে তিনি যোগ দেননি। দলের জেলা পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাসের নেতৃত্বে এই বৈঠক হয়েছে। সেখানে আলিপুরদুয়ারের তিন বিধায়ক হাজির  থাকলেও উপস্থিত ছিলেন না নাগরাকাটার বিধায়ক শুক্রা মুন্ডা ও কালচিনির বিধায়ক উইলসন চম্প্রমারি। শুধু তাই নয়, গত শুক্রবার বিজেপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে আলিপুরদুয়ার এক নম্বর ব্লক এবং ফালাকাটাতেও মিছিল করেছিল তৃণমূল। সেই মিছিলেও চম্প্রমারি যোগ দেননি। তখন থেকেই জল্পনা ক্রমশ বাড়ে।

তৃণমূলের জন্য ধাক্কাটা আরও বড় অবশ্য দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায়। সেখানে জেলা পরিষদের বোর্ড হাতছাড়া হয়ে গেল তৃণমূলের। সভাধিপতি লিপিকা রায়-সহ জেলা পরিষদের মোট ১০ সদস্য এ দিন নয়াদিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। ফলে ১৮ আসনের জেলা পরিষদে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে গিয়েছে। সভাধিপতি নিজে বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় নতুন করে বোর্ড গঠনের প্রয়োজনও পড়বে না।

দক্ষিণ দিনাজপুরে তৃণমূলের ধাক্কা অবশ্য শুধু জেলা পরিষদের হাতবদলেই সীমাবদ্ধ থাকছে না। জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি তথা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতাদের অন্যতম বিপ্লব মিত্রও সোমবার বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন। লোকসভা নির্বাচনে বালুরঘাট লোকসভা আসনে তৃণমূল হারায় বিপ্লব মিত্রকে সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বালুরঘাটের প্রাক্তন সাংসদ তথা এ বারের পরাজিত প্রার্থী অর্পিতা ঘোষকে সভাপতি করেন তিনি। তার পর থেকেই বিপ্লব মিত্রের দলবদল নিয়ে জল্পনা চলছিল। সোমবার সে জল্পনা সত্যি হয়ে গেল।

কৈলাস বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষ এবং মুকুল রায়ের উপস্থিতিতে এ দিন দলবদল করেন এই জনপ্রতিনিধি এবং তৃণমূল নেতারা। তবে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের দখল নেওয়াকে এ দিনের সবচেয়ে বড় সাফল্য হিসেবে বাখ্যা করেছেন দিলীপ ঘোষ এবং মুকুল রায়।

মুকুল বলেন, “জেলা পরিষদ মানে একটা জেলার সরকার। সেটা আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে চলে গেল।” বিজেপি নেতারা আগেই ঘোষণা করেছিলেন, যে ভাবে সাত দফায় ভোট হয়েছিল, সে ভাবেই সাত দফায় যোগদান পর্ব চলবে। এ দিন মুকুলবাবু বলেন, “এটা প্রথম পর্বের এক্সটেনশন চলছে। যখন সাত দফা শেষ হবে, তখন দেখবেন মমতার সরকার পড়ে গিয়েছে।”

Exit mobile version