#লাইভ: লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পর এই প্রথম মুখ খুললেন মমতা, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী পদ ছেড়ে দিতে চেয়েছিলাম, দল মানল না

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

#কালীঘাট: মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার দলীয় বৈঠকের গোড়াতেই সেই ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন, কিন্তু দল মানেনি। নিজেই সাংবাদিকদের জানালেন সে কথা। বলেছেন, ছ’মাস ধরে তাঁকে কোনও কাজ করতে দেওয়া হয়নি। তা ছাড়া টাকা এবং সাম্প্রদায়িকতায় কলুষিত এই ভোট তিনি মানতে পারছেন না। চেয়ার তাঁর কাছে কোনও দিনই দামি ছিল না। থাকবেও না।

কিছু ক্ষণ আগেই শেষ হয়েছে তৃণমূলের পর্যালোচনা কমিটির বৈঠক। বৃহস্পতিবার ফল ঘোষণা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই টুইট করে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনা করে তবেই যা বলার বলবেন। কিছুক্ষণ আগেই শেষ হয়েছে সেই পর্যালোচনা বৈঠক। তাঁর কালীঘাটের বাড়িতেও ডাকা হয়েছিল সব জেলার দলীয় সভাপতি এবং পর্যবেক্ষকদের। ছিলেন জোড়াফুলে জেতা ২২ সাংসদের পাশাপাশি পরাজিত প্রার্থীরাও। বিজেপির কাছে তৃণমূলকে কেন এত বেশি আসন খোয়াতে হল, কোথায় কী ত্রুটি হয়েছিল এবং এই ক্ষয় মেরামত হবে কী ভাবে, সব নিয়েই এই বৈঠকে আলোচনা হয় বলে দলীয় সূত্রের খবর।

ধর্মীয় মেরুকরণের জেরেই বাংলায় যে এ বার তৃণমূলের বিপর্যয় হয়েছে তা শনিবার স্পষ্টতই স্বীকার করে নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠকে বসে জানিয়ে দিলেন, সামনে ঈদ আসছে। তিনি অবশ্যই ইফতারে যাবেন। তাঁর কথায়, “আমি তো মুসলিম তোষণ করি। যে গরু দুধ দেয় তার লাথও খাব।”

বাস্তবেই মমতার বিরুদ্ধে তোষণের রাজনীতির অভিযোগ কম নয়। বরং বহু দিনের। ২০১১ সালে বাংলায় ক্ষমতায় এসেই ইমাম ভাতা চালু করেছিলেন মমতা। তখন থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। তার পর ঈদের দিন রেড রোডে গিয়ে নমাজ পড়া ইত্যাদি ঘটনাকে সামনে রেখে গেরুয়া শিবির বার বার তাঁর বিরুদ্ধে তোষণের রাজনীতি করেছে। এমনকী সম্প্রতি পুলওয়ামায় সেনাবাহিনীর কনভয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর মোদী সরকার যখন পাকিস্তানকে দায়ী করেন, তখনও মমতা বলেছিলেন তদন্ত না করেই কেন দোষারোপ করা হচ্ছে। তাতেও অনেকে মনে করেছিলেন, সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্ককে খুশি রাখতেই হয়তো এ কথা বলছেন দিদি।

সে যাক। লোকসভা ভোটে তৃণমূলের বিপর্যয়ের পর শনিবার বিকেলে বাড়িতে দলের নেতা-মন্ত্রী সাংসদদের বৈঠকে ডাকেন মমতা। তার পর সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “বাংলায় ভোটে ওরা টোটালটাই এ বার হিন্দু-মুসলমান করেছে। এক তরফা বিভাজনের রাজনীতি করা হয়েছে। আমি এই রাজনীতি মানি না”। তাঁর কথায়, “যাঁরা হিন্দু-মুসলমান করে ভোট দেননি, আমার উপর সন্তুষ্ট হননি, তাঁদের কিছু বলার নেই। এতে যদি আমাকে একা থাকতেও হয়, রাজি আছি। সারাজীবন লড়াই করেছি। আরও লড়াই করে যাব”।

সূত্রের খবর, দলের নেতা-মন্ত্রীদের থেকে দিদি এ দিন যখন ১৮ টি আসনের পরাজয়ের কার্যকারণ শুনতে চান, তখন অধিকাংশেরই জবাব ছিল যে মেরুকরণের রাজনীতিরই খেসারত দিতে হয়েছে তাঁদের। বেশিরভাগ হিন্দু প্রধান এলাকাতেই ভরাডুবি হয়েছে দলের। বিপরীতে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে দলের জয়ের ব্যবধান বেড়েছে। এমনকী বাম বা কংগ্রেসের হিন্দু ভোট যখন বিজেপি-র দিকে গিয়েছে, তখন তাদের মুসলিম ভোটের মেরুকরণ হয়েছে তৃণমূলের অনুকূলে। আবার উত্তর মালদহ, রায়গঞ্জে তৃণমূলের সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিকে রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলার করারই নির্দেশ দেন মমতা। বলেন, আপনারা যদি কথা দেন যে আপনারা লড়াই করবেন, তবেই আমি মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকব। নইলে নয়।

এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের শাসকদলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, সাম্প্রদায়িক বিষ ছড়িয়ে ভোট জয়ের চেষ্টা করেছে বিজেপি। আর গোটা বিষয়টিতে সাহায্য করেছে নির্বাচন কমিশন। নিজের রাজ্যেই গত পাঁচ-ছমাস ক্ষমতাহীনভাবে বসিয়ে রাখা হয়েছে মমতাকে। তাই এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন তিনি। তাঁর মতে, ইস্তেহারের সমস্ত কাজ তিনি করেছেন। তা সত্ত্বেও ভোট বাক্সেই মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলকে পছন্দ
নয়। আর সেখান থেকেই আক্ষেপের সুরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “মানুষ দু’টাকা কিলো চাল পেয়েছে। স্বাস্থ্য সাথী, সবুজ সাথী সবই পেয়েছে। তারপরেও কেউ খুশি নয়। সাধারণ মানুষের জন্য মনে হচ্ছে একটু বেশিই কাজ করে ফেলেছি। এত কাজ করা হয়তো উচিত হয়নি। এবার দলের জন্য বেশি সময় দেব। কারণ ইস্তেহারের সব কাজই সারা হয়ে গিয়েছে। ওরা (বিজেপি) তো কিছুই করেনি। তাই এবার না হয় দলীয় কাজেই বেশি মন দেব।” আগামী ৩১ মে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে তিনি ফের বৈঠকে বসবেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

https://www.facebook.com/MamataBanerjeeOfficial/videos/715863392163772/

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest