Site icon The News Nest

শরিকদের ধরে রাখার পদ্ধতি বিজেপির থেকে শেখা উচিত কংগ্রেসের : অখিলেশ

AkhileshIndiaToday

লখনউ: বহুদিন আগেই লোকসভা ভোটের জোট ঘোষণা করে দিয়েছে সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টি। জোটে না থাকা সত্ত্বেও কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সেভাবে সরব দেখা যায়নি উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবকে।একাধিকবার উত্তর প্রদেশের বিজেপি বিরোধী জোটের অংশ হিসেবে মান্যতা দিয়েছেন কংগ্রেসকে।কিন্তু জায়গা ছাড়তে না চাওয়ায় অবশেষে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সরব হলেন তিনি। শনিবার সপা সুপ্রিমো সাক্ষাৎকার দেন এনডিটিভি -কে। সাংবাদিক প্রণয় রায়ের প্রশ্নের উত্তরে তিনি স্পষ্ট জানান, বিজেপির থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত কংগ্রেসের। জোট শরিকদের কিভাবে ধরে রাখতে হয় তা অত্যন্ত ভালোভাবে দেখিয়ে দিচ্ছে বিজেপি।

দেশের সবথেকে বড় রাজ্য উত্তরপ্রদেশে বিজেপি বিরোধী জোট হয়েছে সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজবাদী পার্টির।পরে তাতে যুক্ত হয়েছে আরএলএসপি। কিন্তু কংগ্রেসকে জোটে নেওয়া হয়নি। জোট ঘোষণার দিন মায়াবতী ও অখিলেশ যাদব জানিয়েছিলেন,আমেঠি ও রায়বেরেলি বাদে সব জায়গায় প্রার্থী দেবেন তারা। সমঝোতার কোন বার্তা না দিয়ে কংগ্রেস জানিয়ে তারা ৮০ আসনেই প্রার্থী দেবে। এদিন অখিলেশ যাদব বলেন,”বিজেপি জানে ক্ষমতায় আসতে গেলে অন্য দলকে সম্মান করতে হয়। জোট করার জন্য স্বার্থত্যাগও করতে দেখেছি বিজেপিকে। অবস্থা যাই হোক না কেন বিজেপি সবসময় জোট শরিকদের ধরে রাখার পক্ষে।”সপা-বসপার জোটে কংগ্রেস শামিল হয় তা চেয়েছিল টিডিপি এবং ডিএমকে। ভোট কাটাকাটি হয়ে যাওয়ার উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন চন্দ্রবাবু নাইডু ও শরদ পাওয়ারের মত বর্ষীয়ান নেতারা। কিন্তু গোটা বিষয়টিকে কার্যত পাত্তা দেওয়া হয়নি কংগ্রেস শিবিরের পক্ষ থেকে। উত্তরপ্রদেশ দখল করতে রাহুল গান্ধী মাঠে নামিয়ে দিয়েছেন বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে। রাজনৈতিক মহলের মতে, এই মুহূর্তে উত্তরপ্রদেশে দাঁত ফোটাতে পারবেন না প্রিয়াঙ্কা। মাটি কামড়ে যদি বহুদিন পড়ে থাকেন তবেই প্রিয়াঙ্কার সাফল্যকে ফসল হিসাবে ঘরে তুলতে পারবে কংগ্রেস।
কাশ্মীরে জঙ্গি হানার পর বিভিন্ন রাজ্যে আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে জোট প্রক্রিয়া শুরু করে কংগ্রেস। কিন্তু সেভাবে সাফল্য কোথাও মেলেনি। উল্টে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বামেদের সঙ্গে জোট করতে চলেছে কংগ্রেস। সেই জোটের পথ খুব একটা মসৃণ নয় তা বোঝা গিয়েছে শনিবারই। কংগ্রেসকে অন্ধকারে রেখে একতরফা ২৫ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে বামেরা। অন্যদিকে দিল্লিতে আপ সরকারের সঙ্গে জোটের আলোচনায় এগিয়েও শেষ হয়ে যায় হঠাৎই। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, সাত আসনে একাই লড়বে দল। প্রার্থী ঘোষনা করে দেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালও। এই প্রসঙ্গ তুলে অখিলেশ বলেন,” কংগ্রেস বড় দল। ওদের উচিত অন্য দলগুলিকে সাহায্য করা। এতে বিজেপি বিরোধী ভোট একত্রিত হত। কংগ্রেসের উচিত ছিল তৃণমূল এবং আম আদমি পার্টিকে সাহায্য করা। তা না করে বিজেপি বিরোধী ভোট ভেঙে দিচ্ছে কংগ্রেস।”এদিন বিজেপির টিম ম্যানেজমেন্টের প্রশংসা করেন সপা সুপ্রিমো।জানান,” বিহারের চিত্র দেখলেই বিজেপির শরিকদের নিয়ে চলার ইচ্ছাটা স্পষ্ট হয়ে যাবে। গত লোকসভায় জেডিইউ মাত্র দুটি আসন জিতেছিল, বিজেপি জিতেছিল ২২ আসনে।অথচ এবার সমান সমান আসনে লড়াইয়ের দাবিতে অনড় ছিলেন নীতীশ কুমার। শেষ পর্যন্ত তাঁর দাবি মেনে নিয়েছে বিজেপি। শুধু বিহার নয় মহারাষ্ট্রে শিবসেনা বা উত্তরপ্রদেশে আপনা দলের সঙ্গে জোট করার ক্ষেত্রে বিজেপি যে মনোভাব নিয়ে যে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।”

বিজেপি সম্পর্কে এদিন নিজের মনোভাব স্পষ্ট করেন অখিলেশ। তিনি বলেন,” বড় দলের সব গুনই আছে সব বিজেপির মধ্যে। ওরা জানে কিভাবে সবটা ম্যানেজ করতে হয়। কখন কোন নেতাকে তুলে আনতে হয় বা কখন কাকে বসিয়ে দিতে হয়। যদি জাতিগত কোন সমীকরণ থাকে তাহলে প্রার্থীর নাম বা গুনের দিকে নজর দেয় না বিজেপি। শুধুমাত্র জাতের ওপর ভিত্তি করেই তুলে আনা হয় প্রার্থীকে।”

 

Exit mobile version