কলম্বো: রবিবার ইস্টারের সকালে শ্রীলঙ্কায় বয়েছে রক্তের বন্যা। শহরের একাধিক গির্জা এবং জনপ্রিয় হোটেলে ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে। ঘটনার দু’দিন পর বিস্ফোরণের দায় নিল জঙ্গি গোষ্ঠী আইসিস। জঙ্গি গোষ্ঠীর নিজস্ব সংবাদসংস্থা আমাক মারফত জানানো হয়েছে রবিবারের আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর যোদ্ধাদের দ্বারাই ঘটানো হয়েছে।
শ্রীলঙ্কা জুড়ে রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হচ্ছে মঙ্গলবার। পিটিআই সূত্রে খবর, বিস্ফোরণের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে শ্রীলঙ্কা পুলিশ ইতিমধ্যে ৪০জনকে গ্রেফতার করেছে। এদের মধ্যে ২৬ জনকে সিআইডির হেফাজতে রাখা হয়েছে। তিনজনকে রাখা হয়েছে সন্ত্রাস দমন শাখার হেফাজতে।
গত ১৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের একটি মসজিদে হামলা হয়। নিহত হন অন্তত ৫০ জন। তারই পাল্টা বলে শ্রীলঙ্কা প্রশাসন দাবি করে বটে, কিন্তু এর কোনও যুক্তি তারা পেশ করতে পারেনি। মঙ্গলবার সকালের দিকেই এই দাবি করেছিলেন শ্রীলঙ্কার জুনিয়র ডিফেন্স মিনিস্টার রুয়ান বিরজেবারদেনে। বিজেবারদেনে দাবি করেছিলেন, দুটি গোষ্ঠী এই হামলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার মধ্যে একটি ন্যাশনাল ত্বহিদ জামাত বা এনটিজে। দ্বিতীয়টি হল জামিয়াতুল মিল্লাতু ইব্রাহিম। তবে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এই ঘটনা দেখে এর সঙ্গে আইসিসের জড়িত থাকার সন্দেহ প্রকাশ করেছিল। এর পরই আইসিসের তরফে এই হামলার দায় স্বীকার করে নেওয়া হয়। এদিকে এই ঘটনায় বিদেশি যোগ থাকতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রণিল বিক্রমসিংঘেও। তিনি সেদেশের সংসদে দাঁড়িয়ে বিদেশি যোগ থাকার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, রবিবার ইস্টার উপলক্ষে শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন গির্জায় প্রার্থনা জানাতে জমায়েত হয়েছিলেন অসংখ্য মানুষ। সকাল ৮.৪০ নাগাদ কলম্বোর গির্জায় প্রথম বিস্ফোরণ হয়। এর পর বেলা গড়াতে আরও পাঁচটি বিস্ফোরণ খবর মেলে। ৩টি হোটেল এবং আরও ২ গির্জায় বিস্ফোরণ হয়। সে সময় মৃত্যুর সংখ্যা দেড়শোর বেশি। বিকেলে আরও ২টি বিস্ফোরণ ঘটে। ওই বিস্ফোরণে অন্তত ৩২১ জন নিহত হন। আহত হয়েছেন প্রায় ৫০০ জন।